বিজ্ঞাপন

উপজেলা নির্বাচন সরকারের পাতা ফাঁদ: মির্জা আব্বাস

May 4, 2024 | 5:15 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উপজেলা নির্বাচন সরকারের পাতা ফাঁদ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (০৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির নির্বাহী সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিবের মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আরেকটা ফাঁদ, সর্বশেষ ফাঁদ পেতেছে সরকার। তারা বলছে, উপজেলা নির্বাচন। এর আগে জাতীয় নির্বাচনেও ফাঁদ পেতেছিল। বিএনপিকে নির্বাচনে নেবে। কিন্তু বিএনপি সেই নির্বাচন প্রত্যাখান করেছে। যেই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না, সেই নির্বাচনের প্রয়োজন বাংলাদেশে নাই। সরকার রাজতন্ত্র কায়েম করতে পারে, রাজতন্ত্র ঘোষণা দিতে পারে, কিন্তু নির্বাচনের কথা তাদের মুখে মানায় না।’

তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন ভোট দিতে গিয়েছিল লোকজন? এবারও যাবে না। আমার ছোটভাই রিজভী (রুহুল কবির রিজভী) উদাহরণ দিলেন সরিষাবাড়ি, কক্সবাজার ও বরিশালের। ওরা (আওয়ামী লীগ) নাকি বলেছে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না।’

বিজ্ঞাপন

‘আমি রিজভীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভাই এটা শুধু দেখার জন্য্ আনন্দের বিষয়। কুকুরের কুকুরে কামড়া-কামড়ি করছে, আমরা শুধু দেখি। আমাদের শুধু দেখার বিষয়। কামড়াকামাড়ি কুকুরে কুকুরে হচ্ছে আমার কি? করুক গিয়ে। আমরা তো নির্বাচনে নাই। ওরা ওদের প্রার্থীকে নির্বাচনে দাঁড়াতে দেবে না, বিএনপির প্রার্থী দাঁড়ালে কী দাঁড়াতো অবস্থাটা। তো আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক আছে, সঠিক থাকবে।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই দেশে এই স্বৈরশাহীর পত্রিকায় দেখলাম সরকার উখাৎ করবে। আরে ভাই আমি তো সরকারই দেখি না। এটা তো নির্বাচিত সরকার নয়। সুতরাং এই সরকারকে উখাৎ করার দায়-দায়িত্ব বিএনপি বহন করে না। জনগণ যখন মনে করবে তখন লাথি দিয়ে সরকারকে ফেলে দেবে, সরকার থাকতে পারবে না।’

তিনি বলেন, ‘একজন-দুইজন-তিনজন করে প্রতিদিন কোর্টে আত্মসমর্পণ করছে, স্বেচ্ছায় জেলে যাচ্ছে। আমরা তাদের মুক্তি দাবি করে আসছি, আজকে এই মানববন্ধনে হচ্ছে। বিচিত্র এই বাংলাদেশ! সেদিন দেখলাম আমার কোনো এক ভাই এক‘শ টাকার চুরির জন্যে চোরের হাত বেঁধে রাখেন আর ১ হাজার কোটি টাকা চুরি যারা করে তাদেরকে স্যালুট দেন। এই হলো বাংলাদেশ। আজকে বাংলাদেশের কী করুণ অবস্থা, কি দুরাবস্থার মধ্যে আছে। এটা আওয়ামী লীগ ছাড়া বিশ্বের সকলেই জানে। আর তার চেয়ে বেশি জানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা তারা কি অবস্থার মধ্যে আছে।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তার দল বিএনপি সেই দলের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখন গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করতে করতে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন।’

তিনি বলেন, ‘তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা কতবার বলেছি, দেশনেত্রীকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। উনার অবস্থা বেশি ভালো না। তারা (সরকার) বলছে আইন নাই। কেন? আইন থাকবে না কেন? রাশেদ খান মেননকে বিদেশে পাঠানো হয় নাই, আসম আবদুর রবকে বিদেশে পাঠানো হয় নাই। আসম রবকে বন্দি অবস্থায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং রাশেদ খান মেননকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। আজকে তারা বলছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো যাবে না। অর্থাৎ তাকে হত্যা করতে হবে এবং এমনভাবে করতে হবে যাতে কেউ কিছু বলতে না পারে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে কি বলা হচ্ছে? ওই যে কাদের সাহেব (ওবায়দুল কাদের) বললেন, কোনো রাজনৈতিক বন্দি জেলে নাই। কি সন্দুর কথা বললেন কাদের সাহেব আমার খুব হাসি পায়.. আপনি যখন ১/১১ জেলে ছিলেন, আপনি কি চোর হিসেবে জেলে গিয়েছিলেন না রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে গিয়েছিলেন আমি জানতে চাই। ১/১১ সময়ে আজকের প্রধানমন্ত্রী উনিও জেলে ছিলেন। উনি কী হিসেবে বন্দি হয়েছিলেন আমি জানতে চাই।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এভাবে গ্রেফতার করে পৃথিবীর আন্দোলন কোনো স্বৈরশাসক থামাতে পেরেছে বলে আমার জানা নেই। একদিন না একদিন এই স্বৈরশাসকের পতন ঘটবেই জনরোষের মুখে এটাকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা আন্দোলন গড়ে তুলছি। আন্দোলন হবে, মুক্ত হবে দেশ। আমি জানি না দেখে যেতে পারব কিনা। কিন্তু এদেশে কেউ না কেউ আসবে এই হায়েনারের হাত থেকে এই দেশকে মুক্ত করার জন্য।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আজকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়া দেশের সর্বনাশ করে গেছে। উনি নাকি ঠিক-ঠাক করছেন। ভাই কি ঠিক করছেন আমার জানা নাই্। দেশে আজকে সাধারণ মানুষের দিকে নজর দেন টাকা-পয়সা নাই কয়েকজন লোকের দিকে নজর দেন পেট বড় হয়ে গেছে। হাজার হাজার লক্ষ কোটি কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। দেশের মানুষের পেটে ভাত নাই। যারা তিন বেলা খেতেন তারা দুই বেলা খায়, যারা দুই বেলা খেতেন তারা এক বেলা খায়, যারা এক বেলা খেতেন তারা আধা বেলা খায়। এই হচ্ছে দেশের অবস্থা।’

সংগঠনের আহ্বায়ক এ এ জহির উদ্দিন তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জয়দেব জয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন