বিজ্ঞাপন

অবশেষে প্রকাশ পেল তাপজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানোর গাইডলাইন

May 5, 2024 | 11:58 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে হওয়া নানা ধরনের অসুস্থতার লক্ষ্মণ, করণীয় ও চিকিৎসা নির্দেশনা সম্বলিত একটি জাতীয় গাইডলাইন তৈরি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এপ্রিলজুড়ে সারা দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে সম্ভব না হলেও শেষ পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ের এই নির্দেশিকা শেষ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ মে) দুপুরে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে জাতীয় এই গাইডলাইন উন্মোচন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। নীতিমালা তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ইউনিসেফ।

উন্মোচন অনুষ্ঠানে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশের গত কয়েকদিনের যে পরিমাণ তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছিল, তাতে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছিল। তাপপ্রবাহ যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখনই আমরা এই নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। এটি সময়োপযোগী একটি নির্দেশিকা, যা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের এই নীতিমালার আলোকে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন- তাপে পুড়ল দেশ, ‘সুরক্ষার উপায়’ থাকল ফাইলবন্দি

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, যখন গরম চরম পর্যায়ে যায়, তখনই আমি আমি সবাইকে একটাই নির্দেশনা দিয়েছিলাম। যেসব রোগের অপারেশন করতে দেরি হবে ও পরে চিকিৎসা করা যাবে, তা আপাতত বন্ধ করে আমাদের হাসপাতালগুলো যেন ফাঁকা থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে বলেছিলাম। তীব্র গরমের মধ্যে বাচ্চা ও বয়স্করা এবং যাদের বিভিন্ন অসুখ আছে, তাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আজ যেটা উদ্বোধন করা হলো, এটি একটা সময়োপযোগী জিনিস। আমার মনে হয়, এমন গরম আগামী বছরও আসবে এবং চলতেই থাকবে। তাই এ নির্দেশনা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা স্কুলেও লিফলেট বিতরণের ব্যবস্থা করছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারও কোনো হাত নেই। সে বিষয়ে আমরা কিছু করতে পারব না। আমাদের মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব, আমরা এই গরমের মধ্যে কীভাবে মানুষকে সুস্থ রাখতে পারি। এই কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য ইউনিসেফকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ ছাড়া আমাদের মন্ত্রণালয়সহ যারা এ কাজটি করতে দীর্ঘদিন পরিশ্রম করেছেন, তাদেরও আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।

অনুষ্ঠানে গাইডলাইন সম্পর্কে বলা হয়, অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে উচ্চ তাপজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতেই এই জাতীয় নীতিমালা বা গাইডলাইন চালু করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে বাংলাদেশের ক্ষতি ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে এই উদ্যোগ শিশুদের নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

বিজ্ঞাপন

ইউনিসেফের হিট ফ্রেমওয়ার্ক ও বিইএটি এই গাইডলাইনের অন্তর্ভুক্ত। ইউনিসেফের হিট ফ্রেমওয়ার্ক ইংরেজি শব্দাক্ষরের ভিত্তিতে তৈরি। যেমন— গরমজনিত চাপ সম্পর্কে সচেতন থাকুন ও নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন; গরমজনিত চাপের লক্ষণগুলো সহজেই শনাক্ত করুন; নিজেকে ও অন্যদের সুরক্ষার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিন; এবং কারও মধ্যে গুরুতর লক্ষণ দেখা গেলে তাকে অবিলম্বে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান।

এ নির্দেশাবলির লক্ষ্য হলো— জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো এবং গরমজনিত স্বাস্থ্য উদ্যোগে মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা। বৃহত্তর কমিউনিটি ও জনসাধারণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যম ও তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠনের মাধ্যমে এই নীতিমালা বা গাইডলাইন সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার চালানো হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ এমা ব্রিংহামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন