বিজ্ঞাপন

জলাবদ্ধতায় আটকে পড়েছেন চট্টগ্রামের মেয়র

May 27, 2024 | 12:29 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে টানা ভারি বর্ষণ চলছে চট্টগ্রামজুড়ে। বৃষ্টি আর জোয়ারে বন্দরনগরীর নিম্নাঞ্চলসহ অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মূল সড়ক, অলিগলি কোমরপানিতে ডুবে আছে। বাসা-বাড়িতেও পানি ঢুকে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক ভোগান্তি। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী ও শ্রমজীবীরা। বন্ধের সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না থাকায় নগরীতে অনেক স্কুল-কলেজ খোলা আছে। শিশুদের স্কুলে পৌঁছাতে গিয়ে অভিভাবকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে পানিবন্দি বাসায় আটকে পড়েছেন খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

রেমালের প্রভাবে সোমবার (২৭ মে) ভোর থেকে চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এদিন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। এই বৃষ্টিকে ভারি বর্ষণ বলছে আবহাওয়া অফিস।

এর আগে, রোববার (২৬ মে) সকাল ৯টা থেকে থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস ২০৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করে।

বিজ্ঞাপন

নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, হালিশহর, আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেইট, বাকলিয়া, প্রবর্তক মোড়, বাদুরতলসহ বিভিন্ন এলাকা কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পর্যন্ত পানিতে ডুবে আছে। এতে ছোট তিন চাকার যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বাস, প্রাইভেট কারসহ বড় যানবাহন চলাচলেও বেগ পেতে হচ্ছে।

নগরীর চকবাজার এলাকার মোহাম্মদ আলী সড়কের বাসিন্দা সৈয়দ মাহমুদ জামিল সারাবাংলাকে বলেন, আমার বাসার ভেতরে-বাইরে কোমর পানি। বাথরুমেও পানি উঠে গেছে। বাচ্চারা বাথরুমেও যেতে পারেনি। সোফা, খাট সব পানিতে ডুবে গেছে। বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যেতে কোনোভাবে বের হয়েছি। পানি আরও ওঠার সম্ভাবনা আছে।

বিজ্ঞাপন

রেশমি ইসলাম নামে এক গৃহবধূ ফেসবুকে লিখেছেন, পানির চাপে ঘরের জানালা ভেঙ্গে গেছে। এক কোমর পানিতে ঘরের কোথাও বসার জায়গা নেই। আমরা সবাই দাঁড়িয়ে আছি। ঘর থেকে বের হওয়ারও সুযোগ নেই। বাচ্চাদের ওপরের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছি। এ দুর্যোগ থেকে কখন মুক্তি পাব জানি না।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে নগরীর মুরাদপুর এলাকা সকাল থেকেই পানিতে পানিতে টইটম্বুর হয়ে আছে। বড় গাড়িগুলোকে যাতায়াতে বেগ পোহাতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে উপায় না পেয়ে কোমর পানিতেই নেমে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

হালিশরের অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন কার্যালয়ও পানিতে থইথই।

নগরীর বহদ্দারহাটে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবন যথারীতি পানিতে তলিয়ে গেছে। মেয়র বাসা ছেড়ে বের হতে না পারায় অফিসে পৌঁছাতে পারেননি। বাসার সামনে জমে থাকা পানি মোটর দিয়ে সড়কে ফেলতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমী বলেন, টানা ভারি বৃষ্টির কারণে পানি জমে থাকছে। আমরা কয়েকটি টিম করেছি। তারা জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণে কাজ করছে।

চট্টগ্রাম নগরীর পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন জায়গাও প্লাবিত হয়েছে। সীতাকুন্ড, রাউজান, লোহাগাড়া ও ফটিকছড়ি উপজেলার বেশকিছু এলাকাতেও বৃষ্টির পাশাপাশি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে চট্টগ্রামে ব্যাপক বর্ষণ ও জোয়ারের কারণে বেশকিছু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু জায়গায় সকালে পানি থাকলেও এখন নেই। বৃষ্টি কমলেই পানি কমে যাবে।

আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, রোববার রাত ৯টার দিকে ঘূর্ণিঝড়ের মূল অংশ তথা কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করে। মধ্যরাত নাগাদ কেন্দ্রটি উপকূল অতিক্রম শেষ করে। এরপর ঘূর্ণিঝড়টির নিম্নভাগ উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে আজ সোমবার (২৭ মে) ভোর নাগাদ। এখন এটা স্থল নিম্নচাপ আকারে বৃষ্টি হয়ে ঝরছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

সারাবাংলা/আইসি/ইআ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন