বিজ্ঞাপন

দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে নারী-শিশুদের পারিবারিক জরিপ

June 11, 2024 | 6:20 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশে প্রথমবারের মত রক্তে-সীসা ও ভারী ধাতুর মাত্রাসহ শুরু হচ্ছে নারী-শিশুদের বৃহৎ পারিবারিক জরিপ। সারাদেশে বড় পরিসরে এই জরিপ কার্যক্রম চলবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফ বাংলাদেশে মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস), রাউন্ড ৭ (২০২৪-২০২৫) চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে। যার মাধ্যমে শিশু ও নারীদের জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা শুরু হতে যাচ্ছে।

এমআইসিএস হলো এক ধরনের পারিবারিক জরিপ যার মাধ্যমে শিশু ও নারী সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে তাদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করা যায়। এই প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তাদের উপযোগী নীতিমালা তৈরি, পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়তা করে।

এবারের জরিপে কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই এমআইসিএসের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রক্তে সীসার মাত্রা (বিএলএল), ভারী ধাতুর মাত্রা, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টসের মাত্রা এবং রক্তশূন্যতা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। আমাদের চারপাশে সীসাসহ ভারী উপাদানের উপস্থিতি শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে; তবে পরিবেশগত এই ঝুঁকি সময়মত নির্ণয় ও মোকাবিলার মাধ্যমে পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি তিনটি শিশু-মৃত্যুর একটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই এই জরিপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি বিবিএস’র।

বিজ্ঞাপন

বিবিএস জানায়, এমআইসিএস পরিচালনায় বিবিএস ও ইউনিসেফ কয়েক দশক ধরে একসঙ্গে কাজ করছে। বাংলাদেশে প্রথম এমআইসিএস পরিচালিত হয় ৩০ বছর আগে। এই জরিপগুলো দেশের নারী ও শিশুর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। এই উপাত্ত ভাণ্ডার শিশুদের অধিকার রক্ষায় পরিবর্তনকারী নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। পাশাপাশি ইউনিসেফের, নীতিনির্ধারকদের, সরকারের ও অংশীজনের কাজেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং ইউনিসেফকে অভিনন্দন জানাই মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার জরিপ শুরু করার জন্য, যা আমাদের দেশে শিশু এবং সুবিধাবঞ্চিত নারীদের চাহিদার বিষয়ে সঠিক তথ্য সরবরাহ করবে। এই জরিপের ফলাফল আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার তথ্যের ঘাটতি পূরণ করতে এবং সময়োপযোগী তথ্যের মাধ্যমে কার্যকর পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন সক্ষম করবে।’

এই জরিপে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন, শিক্ষা ও শিশু সুরক্ষা বিষয়ে প্রায় ২০০টি সূচক অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ২০২০-২০২৫ মূল্যায়নে এই জরিপের উপাত্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বিজ্ঞাপন

বিবিএস জানায়, ১৯৯০-এর দশকে ইউনিসেফ প্রথম এমআইসিএস এর সূচনা করে। গ্লোবাল মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) প্রোগ্রামের লক্ষ্য ছিল দেশগুলোকে শিশু ও মহিলাদের আন্তর্জাতিকভাবে তুলনামূলক তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করা। গত তিন দশক ধরে ইউনিসেফের সহযোগিতায় বিবিএস সফলভাবে এমআইসিএসের বেশ কয়েকটি রাউন্ড পরিচালনা করেছে। ২০১৯ এমআইসিএস ৬৪ হাজার পরিবারের জরিপ করেছে এবং শিশু ও নারীদের জন্য ১৪৪টি সূচক তৈরি করেছে, যার মধ্যে ২৯টি সরাসরি রয়েছে।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সঙ্গে মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের পরবর্তী ধাপে কাজ করতে পেরে ইউনিসেফ গর্বিত। এই জরিপ প্রতিটা শিশুর প্রয়োজন ও তাদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি জরিপ থেকে প্রাপ্ত মূল্যবান তথ্য বাংলাদেশের শিশু ও তাদের পরিবার অনেক তথ্য জানবে। অনেক শিশু ও নারী যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় সেগুলোর সময়োপযোগী সমাধানে পাবে। দেশের প্রধান দুই সিটি করপোরেশন ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণসহ শে এই জরিপ পরিচালিত হবে। সারাদেশে তাছাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জনসংখ্যা ও তাদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি উপাত্ত এই জরিপে সংগ্রহ করে একটি আলাদা প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। বিবিএসের সহযোগিতায় বিস্তারিত জরিপ পরিকল্পনা, বাজেট ও প্রশ্নমালা চূড়ান্ত করা হবে।’

বিশ্বের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কাছে পৌঁছাতে বিশ্বের কঠিনতম কিছু স্থানে কাজ করে ইউনিসেফ। ১৯০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে সর্বত্র সব শিশুর জন্য আরও ভালো একটি পৃথিবী গড়ে তুলতে কাজ করে ইউনিসেফ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন