বিজ্ঞাপন

ঈদের আগে ঝাঁঝ বেড়েছে মসলার

June 15, 2024 | 10:02 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঈদুল আজহার বাকি আর দুদিন। স্বভাবিকভাবেই এই সময়ে এসে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, গরম মসলাসহ বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদা তুঙ্গে। কোরবানি দেওয়া পশুর মাংস রান্নার জন্য অপরিহার্য এসব মসলার জন্য এখন ক্রেতারা ছুটছেন বাজারে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছরের ঈদুল আজহায় মসলার ঝাঁঝ অনেকটাই বাড়তি।
ক্রেতারা বলছেন, এ বছর পেঁয়াজ-রসুন-আদাসহ সব মসলার দামই গত বছরের তুলনায় বেশি। ঈদ সামনে রেখে সপ্তাহখানেক আগেই ফের বেড়েছে প্রায় সব মসলার দাম। বিক্রেতারাও সে কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন। ডলার সংকটের কারণে আমদানিতে খরচ বেশি হচ্ছে বলেই মসলার দাম বাড়তি বলে মনে করছেন তারা।
শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, এ বছরের শুরু থেকেই মসলার দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। সর্বশেষ সপ্তাহখানেক আগে ফের বেড়েছে সব ধরনের মসলার দাম। ওই সময় কোনো কোনো মসলার দাম কেজিতে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভালো মানের ছোট এলাচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৬০০ টাকায়, যেটি সপ্তাহখানেক আগে বিক্রি হয়েছে চার হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। মানের দিক থেকে এর পরের ধাপের এলাচের কেজি এখন তিন হাজার ৮০০ টাকা, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল তিন হাজার ২০০ টাকা।
জিরার দাম সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে কেজিতে ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এই সময়ের মধ্যে সিরিয়ার জিরার দাম প্রতি কেজি ৮৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৯৬০ টাকা হয়েছে। ভারতের পার্টনার জিরা এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮৮০ টাকায়, যা কয়েকদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৭৬০ টাকায়। ভারতীয় আরেক ধরনের জিরা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ টাকায়, যার দাম আগে ছিল ৬৬০ টাকা।
কেজিতে ৪০০ টাকা করে বেড়েছে লবঙ্গ ও গোলমরিচের দামও। ইন্দোনেশিয়ার লবঙ্গ এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮৮০ টাকা কেজি দরে, সপ্তাহখানেক আগে যা বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৪০০ টাকায়। ভারতীয় গোলমরিচ বিক্রি হতে দেখা দেখ এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে, সপ্তাহখানেক আগে যা ছিল ৮০০ টাকা কেজি।
শুকনা মসলার মতো পেঁয়াজ-রসুনের মতো মসলার দামও বাড়তিই চলছে বাজারে। দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে, কয়েকদিন আগে যা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। চায়না আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজিতে, রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। এ দুটি পণ্যের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা করে বেড়েছে সপ্তাহের ব্যবধানে।
মসলার দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। বলছেন, বাড়তি দামের কারণে প্রয়োজনের তুলনায় কম মসলা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। বাজার মনিটরিংয়ে সরকারের দুর্বলতাকে এর জন্য দায়ী করছেন তারা।
আনজু নামের এক ক্রেতা সারাবাংলাকে বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদের আগেই সব ধরনের মসলার দাম বাড়ে। এবারও ঠিক তাই হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার মসলার দাম অনেক বেশি। বাড়তি দামের কারণে আমাদের মতো মানুষ মসলা কিনতে পারছে না, কিনলেও যতটুকু না কিনলেই না শুধু ততটুকুই কিনছে। এসব দেখার কেউ নেই।
কারওয়ান বাজারে কথা হয় মসলা ব্যবসায়ী শুককুরের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, অধিকাংশ মসলা আমদানি করা হয় পাশের দেশ ভারত থেকে। চীন, ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে কিছু মসলা আসে। এখন ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানিকারক থেকে শুরু করে কয়েক হাত বদলের পর খুচরা বাজারে এসে মসলার দাম এমনিতেই বেড়ে যায়। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে এসে মসলাভেদে কেজিতে দাম বেড়েছে ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি মসলা বিক্রেতা সরোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোরবানি ঈদের আগে সব ধরনের মসলার চাহিদা বাড়ে। তাই ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, তত দাম বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় এবার মসলার বাজার অনেকটা চড়া।’

বিজ্ঞাপন

সারবাংলা/জেজে/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন