বিজ্ঞাপন

গরু বেশি ক্রেতা কম, লোকসানের আশঙ্কায় ব্যাপারিরা

June 15, 2024 | 10:57 pm

গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঈদের বাকি আর মাত্র একদিন। কিন্তু রাজধানীর শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি পশুর হাটে প্রচুর গরু থাকলেও সে তুলনায় ক্রেতা নেই বললেই চলে। চাহিদার তুলনায় গরু বেশি হওয়ায় কোরবানির হাটে পশুর দাম অনেকটাই পড়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রতিটি গরুরুর দাম কমেছে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। এতে অনেক বিক্রেতা লোকসানের কবলে পড়েছেন। অনেকে হতাশ হয়ে আগামীকালের অপেক্ষায় গরু ধরে রাখছেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যা থেকে শাজাহানপুর কোরবানির হাটে গরুর দাম কমতে শুরু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ফলে ব্যাপারিদের হতাশাও বাড়ছে। তবু কোনো কোনো বিক্রেতা রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষায় করতে চাচ্ছেন।

এদিকে, ক্রেতারাও বলছেন, এ বছর গরুর দাম অনেক বেশি। বিপরীতে বিক্রেতারা বলছেন, গো-খাদ্যের দাম অনেক বেশি হওয়ায় পশুপালনে খরচ বেড়ে গেছে। ফলে দাম কিছুটা বাড়লেও লোকসান তাদের গুনতেই হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি মৈত্রী সংঘের মাঠে বসা কোরবানির গরুর হাটে সরেজমিনে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

এর আগে, বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সরেজমিন হাট ঘুরে দেখা যায়, পাইকাররা প্রচুর গরু-ছাগল নিয়ে এলে ক্রেতার সংখ্যা কম। এতে গরুর দাম পড়তে থাকে। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত যেসব গরু ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে, শনিবার দুপুরের পর তা ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। আবার দুই দিন আগে যেসব গরু ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি হযেছে এদিন তা কমে ১ লাখ ১০ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় নেমে এসেছে। দাম আরও কমে যাবে এই আশায় কোনো কোনো ক্রেতা গরু না কিনে আরও অপেক্ষা করতে চাচ্ছেন। ফলে শেষ মুর্হূতে গরু কিনতে আসা ক্রেতারা খুশি হলেও মন ভারি করে আছেন গরু ব্যাপারিরা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শাহাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি কোবানির হাটে ছোট-বড়-মাঝারি সব আকারের গরু থাকলেও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। বিশেষ করে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের গরু কিনতে ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। অধিকাংশ ক্রেতার এই দামের মধ্যে কিনতে চাচ্ছেন। ফলে বাজারে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের গরু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি বাজারে দেড় লাখ থেকে ২ লাখ টাকা দামের গরুও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলার গাংনী থেকে শাজাহানপুর হাটে ১৬টি গরু নিয়ে এসেছেন মো. ফজল। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গত চারদিনে আটটি গরু বিক্রি করেছি সামান্য কিছু লাভে। বাকি আটটি গরু রয়ে গেছে। কিন্তু এক লাখ ২০ হাজার টাকায় কেনা গরুর দাম ক্রেতা বলছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। অথচ একদিন আগেও সেই গরু এক লাখ ২৫ হাজার টাকা দামেও বিক্রি করিনি।’

বিজ্ঞাপন

একই কথা বলেছেন জামালপুর জেলার ইসলামপুর থেকে ১৭টি গরু নিয়ে আসা সালাম ব্যাপারি। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৯টি গরুর মধ্যে গত তিনদিনে ১০টি গরু বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি গরু গড়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে কেনা হলেও এখনো বড়ধরনের লোকসানের কবলে রযেছি। এখনো সাতটি গরু বিক্রি করতে পারিনি। কিন্তু ক্রেতা কোনো গরুর দাম আজ ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি বলছে না। অথচ কেনা গড়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা।’

এ ব্যাপারে শাহজাহানপুর কোবানির হাটের হাসিল উত্তোলনকারী মো. সজিব সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাজারে প্রচুর গরু রযেছে। প্রথম তিন দিন গরুর দাম কিছুটা বেশি হলেও এখন বেশ সহনীয়। সারাদেশ থেকেই প্রচুর গরু আসছে। বর্তমানে বাজারে ৬ থেকে থেকে ৭ হাজার গরু রয়েছে। কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না।’

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন