বিজ্ঞাপন

স্বরূপে ফিরেছে মহাসড়ক, বেড়েছে যাত্রী ও পরিবহন সংখ্যা

July 25, 2024 | 5:29 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্বরূপে ফিরছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মহাসড়কের যান চলাচল। বিগত দুই দিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে গাড়ির সংখ্যা আরও বেড়েছে। কারফিউ শিথিল হওয়ার পরে বাড়ছে যাত্রী এবং পরিবহনের সংখ্যাও।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

এ দিন সকালে রাজধানীর মানিকনগর, গোলাপবাগ, যাত্রাবাড়ী এলাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টারে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। পর্যাপ্তসংখ্যক বাস থাকায় কোনো ভোগান্তি ছাড়াই যাত্রীরা ফিরছেন গন্তব্যস্থলে। এছাড়া সায়েদাবাদ, কমলাপুর, আরামবাগ, ফকিরাপুল এলাকা থেকেও যাত্রী নিয়ে এসি ও নন-এসি দুই ধরনের বাসই বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে যাত্রীও। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ার কারণে অনেকেই অফিস-আদালত থেকে বের হয়ে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানের দিকে যাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সিয়াম পরিবহনের চালক আবদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, গতকাল থেকে বাস সার্ভিস চালু হলেও আজকে তুলনামূলকভাবে যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে। দেশে গণ্ডগোলের আগে বৃহস্পতিবার মানেই ছিল আমাদের চান রাত। কারণ এ দিন অনেকেই শুক্র ও শনিবার দুইদিন বন্ধ থাকার কারণে ঢাকা ছেড়ে বাড়িতে যান। তবে এখন পরিস্থিতি একটূ ভিন্ন। আর তাই অনেকে হয়তবা বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়ি যাবেন কি যাবেন না সে বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার কারণে বাস স্ট্যান্ডে আসছেন না। তবে আমরা এখন পর্যন্ত গত দুই দিন মহাসড়কে যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখেছি তাতে গাড়ি চালিয়েও স্বস্তি পাচ্ছি।

গাজীপুরের চেরাগ আলী থেকে ফেনীর উদ্দেশে রওয়ানা দেওয়া স্টার লাইন পরিবহনের চালক সাদেকুল ইসলামের সঙ্গে বিমানবন্দর রেলওয়ে সংলগ্ন অস্থায়ী বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কিন্তু বাড়ছে। গতকাল ও পরশু রাস্তায় তেমন কোনো জ্যাম দেখিনি। তবে আজকে কিন্তু ফেনী থেকে আসার পরে জ্যামে পড়তে হয়েছে। কারফিউ শিথিল হওয়ার পরে যাত্রীর সংখ্যা বেশি থাকে। আমাদের গাড়িতে বিমানবন্দরের বিভিন্ন ফ্লাইটের যাত্রীরা আসেন। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যা কিন্তু বাড়ছে। মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার কারণে সেটা হচ্ছে। আশা করছি, দেশের পরিস্থিতি খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আর আমরাও পুরনো দিনগুলোর মতো মহাসড়কে গাড়ি চালাতে পারব।’

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে টাঙ্গাইলগামী নিরালা সুপার সার্ভিস পরিবহনের চালক শহিদুল আলমের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘উত্তরা-আবদুল্লাহপুর-গাজীপুর এলাকায় গত এক সপ্তাহে যে পরিমাণ নাশকতা চালানো হয়েছে তার প্রভাব পড়েছে টাঙ্গাইল রুটের নানা পরিবহণে। তুলনামূলকভাবে এই রুটের যাত্রীরা এখনো স্বাভাবিকভাবে সড়কে আগের মতো নামে নাই। তবে আশা করছি পরিস্থিতি খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ মীর সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, বুধবার থেকে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে স্বাভাবিক সময়ে চেয়ে এখনো যানবাহনের সংখ্যা কম। তবে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে আসবে সবকিছু।

কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. ইকবাল বাহার মজুমদার সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারফিউ শিথিল হওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহনের অনেকটা স্বাভাবিক গতি ফিরে এসেছে। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আসলে পরিবহনের সংখ্যা বাড়তে থাকার কারণে যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। কোথাও যেন কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে জন্য কুমিল্লা জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখছেন।’

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবারই জানিয়েছিলাম কারফিউ শিথিল হওয়ার পরে আমরা সারাদেশে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বুধবার থেকে বাস চলছে। সারাদেশে আজকে কিন্তু গতকালের তুলনায় বেশি বাস চলছে। এভাবে চলতে থাকলে ধীরে ধীরে আমরা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবো দ্রুতই।’

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা। শুক্রবারও তাদের একই কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারাদেশে জ্বালাও পোড়াও, সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ, সরকারি স্থাপনায় আগুন দেওয়াসহ সারাদেশে সহিংসতা ও নাশকতা চালায় দুর্বৃত্তরা।

পরবর্তীতে শুক্রবার (১৯ জুলাই) থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির পাশাপাশি কারফিউ জারি করা হয়। মোতায়েন করা হয় সশস্ত্র বাহিনী। বেসামরিক প্রশাসনকে এখনও সহায়তা করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। প্রথম দিন দুই ঘণ্টা শিথিল করা হয় কারফিউ। পরদিন তিন ঘণ্টা শিথিল ছিল। তবে জেলাভেদে এই বিরতি কমবেশি হয়েছে।

সারাবাংলা/এসবি/একে

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন