বিজ্ঞাপন

স্বস্তি ফিরছে নিত্যপণ্যের বাজারে

July 26, 2024 | 4:06 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকায় পণ্য সরবাহের বিঘ্ন ঘটায় গত সপ্তাহজুড়ে বাজারে সব ধরনের শাক-সবজির দাম ছিল অস্বাভাবিক। কোনো কোনো সবজি দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে আন্দোলন স্থগিত থাকা এবং গত বুধবার থেকে কারফিউ শিথিল ও পণ্যবাহী যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় বাজারে কমতে শুরু করেছে শাক-সবজির দাম।

বিজ্ঞাপন

গত শুক্র, শনি, রবি ও সোমবার বাজারে কাঁচামরিচ, ডিমসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সবজির দাম ছিল অস্বাভাবিক। তবে সপ্তাহ শেষে আজ শুক্রবার বাজারে আসা বেশিরভাগ শাক-সবজির দাম কমেছে। এ ছাড়া ফার্মের ডিম, ব্রয়লার মুরগি, মাছ ও মাংসের দাম‌‌‌ও কমেছে।

শুক্রবার (৫ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁও,শ্যামলী ও কল্যাণপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

গত সপ্তাহে রাজধানীর কিছু কিছু জায়গায় কাঁচামরিচ ৪০০ থকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ফার্মের মুরগির লাল ডিম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া টমেটো, বেগুন, শসা, পটল, ঝিঙ্গা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বরবটি, করলা, কাকরোলসহ প্রায় সব ধরনের শাক-সবজির দাম স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ছিল।

শুক্রবার পশ্চিম আগারগাঁওয়ে সবজি কিনতে আসা নয়ন সরকার নামে বেসরকারি এক চাকরিজীবীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, গত সপ্তাহে যে কাঁচামরিচ ৪০০ টাকা কেজি ছিল, আজ তা ১৮০ টাকা করে কিনেছি। ডিমের দামও কিছুটা কমেছে।

বিক্রিতারা ঝিঙ্গা, পটল, লাউসহসহ কয়েকটি সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে অনেক কমে বিক্রি করছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

এদিন আগাঁরগাওয়ের সবজি বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, গত সপ্তাহে যে সবজি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি আজ তা ১০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে ১০০ টাকার নিচে কোন সবজি ছিল না। আর এ সপ্তাহে কাচাঁমরিচ, বেগুন, শসা, পটল, ঝিঙ্গা, লাউসহ সব ধরনের সবজির দাম কমেছে।

শ্যামলী কাঁচাবাজারে কথা হয় গৃহিনী রাহেলা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহে কাঁচামরিচ কিনেছি ৪২০ টাকা কেজি দরে। আর আজ তা কমে হয়েছে ১৮০ টাকা। ডিম কিনেছিলাম ১৮০ টাকা ডজন, আজ কিনেছি ১৫৫ টাকা ডজন। কোটা আন্দোলনের কারণে বাজারে এসে যাচাই-বাছাই করেও কিনতে পারিনি। তখন সব জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি ছিল। আজ সবজির দাম মোটামোটি পর্যায়ে আছে।

এদিন টমেটো ১৮০-২০০ টাকা, করলা ১০০- ১১০ টাকা, উস্তা ৯০-১০০ টাকা, গোল বেগুন ৯০, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৮০, শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৬৫ টাকা, বরবটি-৮০-৯০ টাকা, পটল ৫০-৬০ টাকা, মিস্টি কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবু (মাঝারি আকারের) ২০-৩০ টাকা হালি বিক্রি হতে দেখা যায়। জালি কুমড়া (প্রতি পিস) ৬০-৭০ টাকা, পাতি লাউ (মাঝারি আকারের প্রতি পিস) ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি আঁটি লাউশাক ও পুঁইশাক ৩০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।

বিজ্ঞাপন

এদিন শ্যামলির শাক-সবজি, মনিহারি মালামাল বিক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার সারাবাংলাকে বলেন, কোটা আন্দোলনের কারণে গত সপ্তাহে ডিমসহ সব ধরনের শাক-সবজি দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছিল। আন্দোলন না থাকায় এ সপ্তাহে দাম স্বাভাবিকের পর্যায়ে নেমে এসেছে। তবে ডিমের দাম এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি।

তিনি আরও বলেন, মূলত কোটা আন্দোলনের কারণে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় বাজারে সবজির দাম বেড়েছিল। পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় সবজির দাম আগের পর্যায়ে নেমে এসেছে।

শুক্রবার বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১২০-১৩০ টাকা, রসুন ২৪০-২৫০ টাকা, আদা ৩২০-৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এদিন বাজারে এক কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের রুই মাছ ৩৪০-৪০০ টাকা কেজি, পাবদা ৪৫০-৫০০ টাকা কেজি, সিং ৪৪০-৫৫০ টাকা, গুলশা ৭৫০-৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫-৬০০ টাকা, চিংড়ি মাঝারি ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে হতে দেখা যায়। মাঝারি সাইজের তেলাপিয়া, পাঙাস, সিলভার কার্প ও চাষের কই কেজিপ্রতি ২৫০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার ফার্মের লাল ডিম ১৫৫-১৬০ টাকা ডজন এবং ফার্মের মুরগির সাদা ডিম ১৪৫-১৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। এদিন হাঁসের ডিম ৮০ টাকা হালি এবং কোয়েল পাখির ডিম ৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।

আজ ব্রয়লার মুরগির ১৯০-২০০ টাকা, সোনালিকা ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিন বাজারে গরুর মাংস গত সপ্তাহের মতোই কেজি প্রতি ৭৩০-৭৫০ টাকা এবং খাসি ১০৫০-১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছ-মাংসসহ সব ধরনের শাক-সবজির দাম বাজারভেদে কিছুটা কমবেশি হতে পারে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন