বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস আজ

March 16, 2018 | 11:29 pm

সিনিয়র করেপসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: আজ ১৭ মার্চ। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন। সারাদেশে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসাবে উদ্‌যাপিত হবে।

১৯২০ সালের এইদিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সময়ের সাহসিকতায় টুঙ্গীপাড়ার এই ছেলেটিই বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তানের পরাধীনতার দাসত্ব থেকে মুক্ত করে হাজার বছরের আরাধ্য ও প্রত্যাশিত স্বাধীন-সার্বভৌম ও অসাম্প্রাদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর বাবার নাম শেখ লুৎফর রহমান ও মাতার নাম সায়েরা খাতুন।

টুঙ্গীপাড়ার অজপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করা ‘খোকা’ নামের সেই শিশুটি পরবর্তীকালে হয়ে ওঠেন নির্যাতিত-নিপীড়িত বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, আত্মত্যাগ ও জনগণের প্রতি অসাধারণ মমত্ববোধের কারণেই পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু। কিশোর বয়সেই তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যায়নকালে তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা। বাংলা, বাঙালি ও বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক কালজয়ী নাম। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে বিশ্বাসঘাতকের বুলেটের আঘাতে সপরিবারে নিহত হন।

বিজ্ঞাপন

আজ জাতি যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিবসটি উদ্‌যাপন করবে। দিনটিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনটি সেই দেশে ‘শিশুদিবস’ হিসেবে পালিত হয়। অন্যদিকে একটি স্বাধীন দেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি আমাদের দেশে ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ প্রথমবারের ন্যায় দিনটি শিশু দিবস হিসাবে সরকারিভাবে উদ্‌যাপিত হতে শুরু করে। ২০০১ সালের পর মধ্যখানে চার দলীয় জোট সরকারের হস্তক্ষেপে এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত না হলেও দলীয় ও বেসরকারিভাবে উদ্‌যাপিত হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠনের পর এই দিনটি আবারও যথাযথ মর্যাদায় উদ্‌যাপিত হতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের অত্যন্ত আদর করিতেন। ধানমণ্ডির-৩২ নম্বর বাসভবনে শিশুদের ছিল অবাধ বিচরণ। তিনি শিশুদের মনে-প্রাণে আদর বাৎসল্যে ভালবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আগামীতে দেশ গড়ার নেতৃত্ব তারাই দেবে। বঙ্গবন্ধু কোনো শিশুদের সমাবেশে গেলে বা শিশুরা বঙ্গভবনে তার সংস্পর্শে আসলে তিনি তাদের সঙ্গে মিলে-মিশে একাকার হয়ে যেতেন। বঙ্গবন্ধুর ছিল একটি শিশুসুলভ মন। এই কোমল মনের কারণেই তিনি কোমলমতি শিশুদের আনন্দ-খুশিতে অবলীলায় ভাগিদার হতে পারতেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল দশটায় টুঙ্গীপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণসহ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে শেখ রাসেল স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্তকরণ, ‘আমাদের ছোট রাসেল সোনা’ শিশু গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, সেলাই মেশিন বিতরণ, ‘উঠব জেগে, ছুটব বেগে’ শীর্ষক ভিডিও প্রদর্শন, শিশু সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান, বইমেলা উদ্বোধন ও শিশুদের আঁকা আমার ভাবনায় ৭ই মার্চ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি দূতাবাসসমূহে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদ্‌যাপন করা হবে। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে সারাদেশে বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। জাতীয় দৈনিকগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে দিবসটি উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। সকাল ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রতিনিধি দল টুঙ্গীপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণসহ বাদ জোহর দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন। ১৮ মার্চ বিকেল তিনটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সস্মেলন কেন্দ্রে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সারাবাংলা/এনআর/এটি/আইজেকে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন