বিজ্ঞাপন

সড়কের মাত্র ২ শতাংশে গণপরিবহন, বাকিটা ব্যক্তিগত

September 20, 2018 | 5:15 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘নগরে সড়কের যে অবস্থান তার মূল অংশের মাত্র ২ শতাংশ জায়গা ব্যবহার করে গণপরিবহন। বাকি জায়গা ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে থাকে। অথচ সবচেয়ে বেশি মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার করে। তাই এটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) আয়োজনে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস-২০১৮’ পালন উপলক্ষে অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা সভা করা হয়। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় নগর পরিকল্পনাবিদ আকতার মাহমুদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ সবচেয়ে ব্যবহার করে গণপরিবহন। অথচ সেই গণপরিবহন মূল সড়কের মাত্র ২ শতাংশে থাকে, বাকি জায়গা ব্যক্তিগত গাড়ির দখলে চলে যায়। তাই শহরের যানজট নিয়ন্ত্রন করতে হলে অবশ্যই সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নয়তো যানজট কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’

বিজ্ঞাপন

সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিচার্জ সেলের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘শহরে বছরে যানজটের কারণে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে কয়েক লাখ কর্মঘণ্টা নষ্টে হচ্ছে। তবুও এটা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিলেও তেমন বাস্তবায়ন নেই। তাই যানজট নিরসনে স্বল্পমেয়াদী কর্ম-পরিকল্পনার (আরএসটিপি) বাস্তবায়ন অতি প্রয়োজন।’

আলোচনায় বুয়েটর অধ্যাপক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ শামছুল হক বলেন, ‘শহরের সব পরিবহন যদি গুলশানের মত করে একই করিডোরে এনে ব্যবহার করা হয় এবং এটি নিয়ন্ত্রণে একটি পৃথক কোম্পানি থাকে তবে গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা হওয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। কিন্তু এখন আর তা বাস্তবায়ন নেই। গণপরিবহনে বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জড়িয়ে আছে। যারা এটা হতে দেয় না, গণপরিবহনের শৃঙ্খলা তারা চায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকাল জনগণকে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে বাধ্য করছে। কিন্তু বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে ফুটওভার ব্রিজ নেই। লন্ডন, নিউইর্কের মতো শহরগুলোতে কোনো ফুটওভার ব্রিজ নেই। রাস্তায় সিগন্যালের সঙ্গে মানুষ রাস্তা পারাপার হচ্ছে। অথচ পথচারীদের জন্য সেই জিনিসটাই বানানো হচ্ছে এবং তাদেরকে বাধ্য করছে সেটি ব্যবহার করতে। কিন্তু যানজট কিংবা গণপরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে পথচারীদের পারাপারে জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের মত বিনিয়োগের কোনো দরকার নেই।’

বিজ্ঞাপন

সভায় বিশিষ্ট কলামিস্ট আবুল মকসুদ বলেন, ‘পরিবহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে যদি হুট করে কোনো পরিবহন কিংবা কাউকে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয় তাহলে যাকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কিন্তু যদি বলা হয় নির্দিষ্ট সময়ের পর তাদের সরে যেতে হবে তাহলে তারা সে কাজটি ক্রমান্বয়ে করবে।’ একইসঙ্গে যানজট নিরসনে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রনের বিকল্প নেই বলেও মনে করেন তিনি।

সভায় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য পরিবহন চালকরা যেমন দায়ী, তেমন আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারাও দায়ী। কারণ আমরা কেউ ঠিক মত আইন মানি না। এ আইন না মানার প্রবণতা থেকে সরে আসতে হবে আমাদের।’

ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, ‘সমস্যাগুলো যেহেতু চিহ্নিত হয়েছে তাই সেগুলো দ্রুত কিভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব সে বিষয়ে আমরা কাজ করবো। প্রাথমিকভাবে সিগন্যাল সিস্টেম চালু করতে রামপুরা-বাড্ডা সড়কে কাজ করা হবে।’

আলোচনা সভায় ডিটিসিএর স্টক হোল্ডার, বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও নগর পরিকল্পনাবিদ এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএইচ/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন