বিজ্ঞাপন

কদর বেড়েছে জাতীয় পার্টির

July 29, 2018 | 12:26 pm

।। আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রাজনৈতিক অঙ্গনে জাতীয় পার্টির কদর বেড়েছে, বিশেষ করে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে। দলটির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ  ভারত সফরের পর জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরাও চাঙ্গা হয়ে উঠছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন।

দলটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সব তথ্য জানা গেছে।

দলটির নেতা-কর্মীদের অভিমত ক্ষমতায় জাতীয় পার্টি যেতে না পারলেও ক্ষমতার মসনদের বৃহত্তর অংশীদার হবে। দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ থাকবেন মসনদ পরিচালনার একজন নীতিনির্ধারক।

বিজ্ঞাপন

দলটির একাধিক সূত্র জানায়, ভারত সফরের পর সরকারি দল আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা আগের চেয়ে এখন বেশি যোগাযোগ রক্ষা করছেন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে সুসম্পর্কটা আগের চেয়ে বেড়েছে। যার ফলে সিটি নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে জাতীয় পার্টি। তবে জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত তাদের সুসর্ম্পক থাকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে দলটির অনেক নেতাই।

অপরদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে সুসর্ম্পক গড়ার চেষ্টা করছে। জাতীয় পার্টির মাঝারি নেতাদের সঙ্গে বিএনপির অনেক নেতা যোগযোগ রক্ষা করে চলছে। তরা সরাসরি এরশাদ সাহেবের সঙ্গে যোগযোগ করার চেষ্ট  করছেন। তবে গোয়েন্দা নজর এড়িয়ে তারা এগুতে পারছেন না। আর এরশাদ সাহেবও তাদের সময় দিচ্ছেন না। তবে  বিএনপি এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এ সব বিষয় নিয়ে দলটির কো চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে ততই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে জাতীয় পার্টির কদর বেড়ে যাবে এটিই স্বাভাবিক। জাতীয় পার্টি আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যেতে বা বৃহত্তর অংশীদার হতে নির্বাচনী কৌশল অবলম্বন করবে এটিই জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা। আশা করি নেতাকর্মীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা বা প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা জানিয়েছে, এরশাদের বারিধারা বাসভবনসহ বনানী পার্টি অফিসে হঠাৎ করে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের তৎপরতা আগের চেয়ে বেড়েছে। এতে করে দলটি নীতিনির্ধারকদের ধারণা এরশাদ সাহেবের সঙ্গে বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা যোগাযোগ করছে কি না সে জন্যই হয়ত কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে।

দলটির একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপক্ষে হলে প্রধান দুটি জোট যত শক্তিশালীই হোক না কেন তাদের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সে ক্ষেত্রে কোনো পক্ষেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা  থাকবে না। যে দলটিই আসন বেশি পাবে সে দলটিই  সংবিধান অনুযায়ী সরকার গঠন করবে। যেহেতু তারা এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না সেহেতু  জাতীয় পার্টিকে ওই দলের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। তাই অতীতের চেয়ে আগামী নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কাছে জাতীয় পার্টির গুরুত্ব অনেক বেশি।

এখনই জাতীয় পার্টির যে কোনো আবদার পূরণে আওয়ামী লীগ  ও বিএনপি  প্রস্তুত।  দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মতে আগামী নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টি যে দলেই বা জোটে অংশগ্রহণ করুক না কেন দর কাষাকষি সঠিকভাবেই করবে। আর নির্বাচনের পরে সরকার গঠনে সমর্থনের সময় আরেক দফা সুযোগ নেবে। সেই সুযোগের অপেক্ষায় জাতীয় পার্টি।

এ সর্ম্পকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাঈদুর রহমান টেপা সারাবাংলাকে জানান, জাতীয় পার্টি আগামী নির্বাচনে এককভাবে সাংবিধানিক পন্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তারপরও যদি পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে কোনো জোটের সঙ্গে যেতে হয় বা কোন জোট আমাদের সঙ্গে এসে যুক্ত হয়। সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি  আসন বণ্টনে অবশ্যই  দরকষাকষি করবে। কত আসন চাওয়া হবে সে বিষয় এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। হয়ত শিগগিরই পার্টির প্রেসিডিয়াম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওই বৈঠকে  এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যে জোটই  জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্ত হতে আসুক না কেন আমাদের  চাওয়া  থাকবে  তাদের কাছে শতাধিক আসন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে এরশাদ একাধিকবার বলেছেন, দলটি ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। এও বলেছেন, বিএনপি  নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনি ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করবেন। তার  স্বপ্ন হচ্ছে সরকার গঠন করা। আর এই স্বপ্ন নিয়ে তিনি ৫৮ দলীয় জোট গঠন করেছেন। এখন  তিনি হেফাজতে ইসলামের সমর্থন আদায়ের জন্য চেষ্টা করছেন।

এ সব বিষয় নিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করলে তিনি সারাবাংলাকে জানান, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের কাছে জাতীয় পার্টির কদর বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। কারণ জাতীয় পার্টির জনসমর্থন  আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। জনগন এখন আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসন চায় না। বিএনপির শাসন আমলে জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে।  বর্তমান সরকারের আমলে জনগণ সার্বিক বিষয় টের পাচ্ছে। ওই দুই দলের শাসন আমলের চেয়ে জাতীয় পার্টির শাসন আমল ছিল জনগণের কাছে উত্তম।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি জনসমর্থন দেখে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ অনেক  রাজনৈতিক দল আমাদের সঙ্গে কথা বলছে। তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছিু নেই। রাজনীতিতে কেউ চিরশত্রু নয়। আবার কেউ চিরবন্ধুও নয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন