বিজ্ঞাপন

বেশি চালাকি ধ্বংস ডেকে আনবে: ড. কামাল

August 7, 2018 | 10:15 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সংবিধান প্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সারাদেশে তরুণ শিক্ষার্থীরা যখন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করলেন তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে দাঁড়িয়ে চালাকি করলেন। তিনি বললেন, কোটা তুলে দেওয়া হলো। এরপর তিনি ছাত্রদের কৌশলে হামলা-মামলা দিয়ে দমালেন। এখন তিনি চালাকি করে কোটা সংস্কারের কথা ভুলে গেলেন।

‘আবার যখন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসল। তখনও তিনি চালাকি করে বললেন, এটা ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ন্যায় সংগত দাবি। এরপর তিনি সেই পুরনো নিয়মে শিক্ষার্থীদের মারধর করে রক্তাক্ত করলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা সারাটা জীবন আপনাকে ঘৃণা করবে। সেই দিন বেশি দূরে নয় এসব চালাকিই একদিন ধ্বংস ডেকে আনবে।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজ আয়োজিত ‘কোটা সংস্কার, নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন, নিরাপদ সড়ক ও বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের ভবিষ্যত’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন এ সব কথা বলেন।

কামাল হোসেন বলেন, ‘এ দেশের প্রধানমন্ত্রী যা বলেন, তার দলের নেতাকর্মীরা তা-ই মেনে নেন। তিনি রাতকে দিন বললে যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিশ্বাস করেন। এটা কেন হবে? এ সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে নেতাকর্মীদের। যতদিন বের হতে পারবেন না ততদিন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ উপহার দেওয়া সম্ভব নয়।’

‘১৯৫৮ সালে আমি বিলেত থেকে দেশে ফিরে এসে দেখি মার্শাল ল জারি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকে বললাম, এটা কী হলো। বঙ্গবন্ধু উত্তরে বললেন, ‘চিন্তা করো না। মুক্ত হবো আমরা। বড় জোর ১০ বছর সময় লাগবে।’

বিজ্ঞাপন

দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু আমার হাতে কলম তুলে দিয়ে বললেন, ‘সংবিধান লেখার দায়িত্ব তোমাকে দিলাম। এই কলমে কালি আছে এটা ভেবো না। ভাববে কলমে ৩০ লাখ মানুষের রক্ত আছে। সেই রক্ত দিয়ে তুমি সংবিধান লিখবে। এক সমাবেশে যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দেখ লাখ লাখ মানুষ উৎফুল্ল অবস্থায় তাকিয়ে আছে। ঐক্যের কারণেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ঐক্য থাকলে যেকোনো শক্তিকেই বিতাড়িত করা সম্ভব। আমি সব সময় বলি, আমি একজন বঙ্গবন্ধুর কর্মী। এটি আমার গর্ব। এদেশ কারও নয়। এদেশের মালিক জনগণ।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে। গণতন্ত্র থাকবে। সবার সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশ রুখে দাঁড়িয়েছে, রুখে দাঁড়াবে।’

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল চাকরিতে কোটা পদ্ধতি চালুর জন্য নয়। সবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন সফল হলে দেশ নিরাপদ হবে। দেশ এখন অনিরাপদ অবস্থায় আছে। যারা জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, যারা ইতিহাসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং যারা সকল ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে তাদের পতন অবশ্যই ঘটবে। এক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের বিশাল ভূমিকা রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেন, ‘অনেক চড়ামূল্যে কেনা এ দেশটা। এদেশে কী হচ্ছে বুঝতে পারছি না। দেশটা ছেড়ে যদি চলে যেতে পারতাম তবে ভালো লাগত। আজ পত্রিকা টিভির মালিকরা কোথায়? কেন কোন সত্য প্রকাশ করছে না। ৭১ সালে পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে লিখতে পারলেন আর এখন পারছেন না কেন?’

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র সমাজের সভাপতি আ জ ম অপু বলেন, ‘সারাদেশের ছাত্র সমাজের ন্যায় সংগত আন্দোলনের দাবিগুলো মেনে নিয়ে কোটা সংস্কার করুন। না হলে ঈদের পর ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সেই আন্দোলনের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র অবশ্যই আসবে। সুদিন অবশ্যই আসবে।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন