বিজ্ঞাপন

এখনও ম্যাপ থেকে সেন্টমার্টিনকে সরায়নি মিয়ানমার

October 8, 2018 | 7:37 pm

।। এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সেন্টমার্টিনের নাম বদল করে মিয়ানমার তাদের মানচিত্রে রাখাইনের অন্তর্ভুক্ত দেখিয়ে ‘মঙটাও’ রেখেছে। বিষয়টি জানতে পেরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে গত ৬ অক্টোবর দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে একটি কূটনৈতিক চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ।

কেন এমন ঘটনা ঘটল মিয়ানমারের কাছে তার ব্যাখ্যাও জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিয়ানমার এই বিষয়ে এখনো কোনো জবাব দেয়নি। শুধু তাই নয় এখনও নিজেদের ম্যাপ থেকে সেন্টমার্টিনের নাম সরায়নি মিয়ানমার।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, তিনটি ওয়েবসাইটসহ রাষ্ট্রীয় একাধিক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের বলে দাবি করেছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের আইন মন্ত্রণালয়, জনসংখ্যা মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (এমআইএমইউ) নামের সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ একাধিক জায়গায় প্রকাশিত মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে রাখাইনের অন্তর্ভুক্ত একটি এলাকা হিসেবে প্রদর্শন করছে।

বিজ্ঞাপন

হলুদ রং ব্যবহার করে সেন্টমার্টিনকে নিজেদের দাবি করেছে মিয়ারমার (গোল চিহ্নিত অংশ)

বাংলাদেশের শেষ প্রান্তের (টেকনাফ) আন্তর্জাতিক সীমানা রেখা যেমন থাকার কথা, মিয়ানমার তা বদলে ফেলে মানিচেত্রে সমান রেখা টেনে দিয়েছে। মানচিত্রগুলো মিয়ানমার তাদের সীমানা এবং অঞ্চল বোঝাতে যেসব রঙের ব্যবহার করেছেন, সেন্ট মার্টিনের ক্ষেত্রেও একই রং ব্যবহার করেছেন।

বিজ্ঞাপন

শুধু তাই নয়, মানচিত্রে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেন্টমার্টিনে অবৈধভাবে শুমারি কাজও চালিয়েছে মিয়ানমার।

আন্তর্জাতিক দুইটি ওয়েব সাইট রাষ্ট্রয় তথ্য সংগ্রহ করে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মানচিত্র প্রকাশ ও এই ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। মিয়ানমার সরকার ওই দুইটি প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা তথ্য ও মানচিত্রেও সেন্টমার্টিনকে নিজেদের বলে দেখিয়েছে। আন্তর্জাতিক দুইটি ওয়েবসাইট হচ্ছে ডিভাজিআইএস (www.diva-gis.org) এবং জিএডিএম (www.gadm.org)।

মিয়ানমারের শুমারি ম্যাপ। যেখানে বাংলাদেশের সীমানায় শুমারি চালানোর কথা বলা হয়েছে

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সারাবাংলাকে জানিয়েছে, মিয়ানমারের এ ঘটনায় রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও’কে মন্ত্রণালয়ে তলব করে শক্ত ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। কেন এ ঘটনা ঘটল তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে মিয়ানমারকে কূটনৈতিক চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

কূটনৈতিক চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অংশকে কীভাবে এবং কেন মিয়ানমার মানচিত্রে তাদের বলে দেখাচ্ছে, তার ব্যাখ্যা জানা ঢাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমার অনুমতি না নিয়ে কীভাবে সেন্টমার্টিনে শুমারি করল। দুই দেশের মধ্যে সমুদ্র বিষয়ক মীমাংসা অনেক আগেই শেষ হয়েছে, হঠাৎ করে মিয়ানমারের এমন আচরণের কারণ কী। অনতিবিলম্বে মানচিত্র সংশ্লিষ্ট মিয়ানমারের এমন কার্য সংশোধন করা জরুরি। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য মিয়ানমারকে সতর্ক থাকতে হবে।

                                                                                                    মানচিত্রের সীমানাও বিকৃত করেছে মিয়ানমার

রাষ্ট্রদূতকে তলব করার পর মিয়ানমার এখনো এ বিষয়ে বাংলাদেশকে কোনো বার্তা জানায়নি। মিয়ানমারের বার্তার জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক শিষ্টাচার অনুযায়ী দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করবে। এর মধ্যে দেশটি কোনো বার্তা না দিলে বাংলাদেশ আরও শক্ত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র বিষয়ক) ও সাবেক নৌ কর্মকর্তা মো. খুরশেদ আলম সারাবাংলাকে জানান।

সেন্টমার্টিনের তথ্য। মিয়ানমারের ম্যাপ থেকে নেওয়া

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র বিষয়ক) ও সাবেক নৌ কর্মকর্তা মো. খুরশেদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঐতিহাসিকভাবে সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের অংশ। মিয়ানমার তাদের মানচিত্রে সেন্টমার্টিনকে দেখালেই তাদের হয়ে যাবে না। আমরা বিষয়টি জানতে চেয়েছি, দেখি তারা কী জবাব দেয়।’

সারাবাংলা/জেআইএল/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন