বিজ্ঞাপন

কী আলাপ হবে ঢাকা-নয়াদিল্লি বৈঠকে

February 8, 2019 | 7:53 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দুই দেশের পঞ্চম যৌথ কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকে ঢাকার পক্ষে নেতৃত্ব দিতে নয়াদিল্লি সফর করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। আজ  (শুক্রবার, ৮ ফেব্রুয়ারি) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন তিনি। এরপর দুই দেশের যৌথ কমিশনের বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন তারা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে ঢাকা-নয়াদিল্লির মধ্যে কয়েকটি সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। এগুলো হচ্ছে—দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই), রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও ভারতের প্রাসর ভারতী এবং দুই দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়া বিষয়ে বলেন, ‘কিছু সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হতে পারে। ফিরে আসি, তখন পুরোপুরি জানতে পারবেন।’

বিজ্ঞাপন

ঢাকার কূটনীতিকরা বলছেন, আসন্ন পঞ্চম যৌথ কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকের প্রস্তুতি নিতে এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে ভারতের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি বিষয়ের আলোচনা এই সফরে না তোলার জন্য কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়েছেন। পানি নিয়ে গঠিত দুই দেশের কমিটির পরবর্তী সময়ের বৈঠকেই তিস্তা নিয়ে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কেননা, সামনে ভারতের লোকসভা নির্বাচন, এই সময়ে তিস্তা নিয়ে আলোচনা ভারতের সরকারকে কিছুটা বেকায়দায় ফেলতে পারে।

এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে বলেছেন, ‘তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। যতদিন এই ইস্যুতে সুরাহা না হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত আলোচনা চালিয়ে যাব। আসন্ন নয়া দিল্লি সফরেও তিস্তা নিয়ে আলোচনা করব।’

ঢাকার কূটনীতিকরা আরও বলছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে ঢাকার পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা, বাণিজ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি, প্রতিরক্ষা খাতের আলোচনায় গুরুত্ব দেওয়া হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অগ্রাধিকার বিষয় হিসেবে অর্থনৈতিক কূটনীতির আওতায় ভারতের বেসরকারি খাতের আরও বিনিয়োগ চাইবে ঢাকা।

বিজ্ঞাপন

ভারতের বিনিয়োগকারীদের জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দ, আরও ৬ থেকে ১০টি সীমান্ত হাট চালু, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর উন্নয়নে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ড ব্যবহার, বেনাপোল স্থলবন্দর উন্নয়নসহ একাধিক দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে বৈঠকে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলাপ করবেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার সরকারি বাসভবনে বৈঠক করেন। এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং, ভারতের রাজ্যসভার উপনেতা ড. আনন্দ শর্মার সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভেশ কুমার জানান, নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেনকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘ঢাকার নতুন গঠিত সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাবে নয়াদিল্লি। দুই দেশের সম্পর্কের চলমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সোনালি অধ্যায়কে আরও শক্তিশালী করতে এই সময় দুই পক্ষ অঙ্গীকার করে।’

রাভেশ কুমার আরও জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময় দুই দেশের বিভিন্ন চুক্তি, অংশীদারিত্ব ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কথা হয়। বাংলাদেশের সার্বিক উন্নতি নিয়ে প্রশংসা করেন মোদি।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঢাকার পক্ষে জোড়াল সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। এই সময়ে নরেন্দ্র মোদি রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে ঢাকার পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য উপহার হিসেবে পাঠানো বিশেষ মিষ্টি পৌঁছে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, দুই দেশের পঞ্চম যৌথ কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠকে যোগ দিতে গত বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ভারত সফরে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। ভারত সফর শেষে শনিবার (৯ ফ্রেব্রুয়ারি) দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার।

এর আগে, বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের সর্বশেষ যৌথ কনসালটেটিভ কমিশনের বৈঠক ২০১৭ সালের অক্টোবরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমএনএইচ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন