বিজ্ঞাপন

বাসাবাড়ির গ্যাস সংযোগ নিয়ে বিপাকে বিতরণ কোম্পানিগুলো

April 10, 2019 | 2:23 pm

হাসান আজাদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোট ইস্যু করে বিপাকে পড়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। লক্ষাধিক গ্রাহককে আবেদনের বিপরীতে ডিমান্ড নোট ইস্যু করার পর সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অনিশ্চয়তা কাটাতে বিতরণ কোম্পানিগুলোর ডিমান্ড নোট ইস্যু করা গ্রাহকদের বিশেষ বিবেচনায় সংযোগ দিতে গত মাসে জ্বালানি বিভাগকে চিঠি দিয়েছে পেট্রোবাংলা। জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় এ বিষয়ে কথা বলতে পারেনি। পরে কোম্পানির পরিচালক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান এ প্রসঙ্গে সারাবাংলাকে বলেন, আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্তই শেষ সিদ্ধান্ত। সরকার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে আমরা ডিমান্ড নোটের বিপরীতে নেওয়া টাকা গ্রাহককে ফেরত দেবো।

জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পেট্রোবাংলার অধীন ছয়টি বিতরণ কোম্পানি গত তিন বছরে নতুন গ্যাস সংযোগের আবেদনের বিপরীতে এক লাখ ৮ হাজার ৫৯৮ জন গ্রাহককে ডিমান্ড নোট ইস্যু করে। এর ফলে কোম্পানিগুলোর হিসাবে ৮৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা জমা হয়।

পেট্রোবাংলার চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আবাসিক খাতে বিতরণ কোম্পানিগুলো যেসব গ্রাহকদের এরই মধ্যে ডিমান্ড নোট ইস্যু করেছে, এসব গ্রাহকদের বিশেষ বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ দেওয়া যেতে পারে। এজন্য অতিরিক্ত ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, গত ২৮ মার্চ আবাসিক খাতের গ্যাস সংযোগ নিয়ে বৈঠক করে জ্বালানি বিভাগ। জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আবাসিক খাতের গ্যাস সংযোগের বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে বিতরণ কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়, আবাসিক খাতে ছয়টি বিতরণ কোম্পানির কাছে এক লাখ ৭২ হাজার ৭৩২টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে এক লাখ ৮ হাজার ৫৯৮টি ডিমান্ড নোট ইস্যু করা হয়।

জ্বালানি বিভাগের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, এখন সরবরাহ করা হচ্ছে বেশি দামের এলএনজি। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শিল্প কারখানা ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বোচ্চ পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কোনো চিন্তা নেই। ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলো নতুন গ্যাস সংযোগ দিতে যে ডিমান্ড নোট ইস্যু করেছে ও তার বিপরীতে টাকা নিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত ফেরতই দিতে হবে। কারণ, বেশি দামের এলএনজি কম দামে বাসাবাড়িতে সরবরাহ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

জ্বালানি বিভাগের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বাসাবাড়িতে এলপিজি ব্যবহার বাড়াতে এর দাম কমানো ও সহজলভ্য করতে কাজ করছে সরকার। সরকার বর্তমানে ৫০৭ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করে সরবরাহ করছে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, বর্তমানে সারাদেশে গ্যাসের ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৫৬৬ আবাসিক গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকদের জন্য দৈনিক ৬০২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/এইচএ/টিআর

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন