April 16, 2019 | 7:26 pm
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: রাজধানীর কারওয়ানবাজারে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর বহুতল ভবনটি সিলগালা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে মূল ফটকে তালা লাগিয়ে তাতে সিলগালা করেন।
বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করার বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার অলিউর রহমান বলেন, ‘আজকে আমরা ভবন সিলগালা করলাম। আমাদের আজকের কার্যক্রম স্থগিত।’
অলিউর রহমান আরও বলেন, ‘ভবনের অধিকাংশ মালামাল অপসরণ করা হয়েছে। যে মালামালগুলো রয়ে গেছে তা সরিয়ে নিতে রাজউকের কাছে আবেদন করতে হবে। রাজউক অনুমতি দিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে পারবে। তবে অনুমতি ছাড়া কেউ ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।’
রাজউকের পরিচালক বলেন, ‘মালামাল সরানোর জন্য বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে হয়ত রাজউকের কাছে আবেদন করতে পারে। আমার মনে হয়, রাজউক হয়ত একদিন সময় দেবে।’
কবে নাগাদ এই ভবন ভাঙা শুরু হবে জানতে চাইলে অলিউর রহমান বলেন, ‘পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
উল্লেখ্য, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকায় বিজিএমইএ ভবন ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভেঙে ফেলার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভবন ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়নি। বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটি শেষে মঙ্গলবার ভবন ভাঙার কার্যক্রম শুরু করে রাজউক।
এদিন সকালে ভবনটির সামনে রাজউকের দায়িত্ব কর্মকর্তারা আসেন। ওই ভবনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালামাল সরিয়ে নিয়ে রাজউকের পক্ষ থেকে দুই ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এছাড়া ওই ভবনের ইউটিলিটি সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়। প্রথমে বিকেল ৫টার পর সিলগালা করার কথা থাকলেও মালামাল সরাতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়। ফলে সিলগালা প্রক্রিয়া ঘণ্টাদুয়েক পিছিয়ে যায়। পরে সাড়ে ৭টার দিকে ভবনটি সিলগালা করা হয়।
প্রসঙ্গত, হাতিরঝিলে রাজউকের অনুমোদন ছাড়া গড়ে বিজিএমইএ ভবন। ২০১০ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ভবনটি নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। পত্রিকাটির প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে নজরে এলে ভবনটি কেন ভাঙা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন আদালত। পরে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার রায় দেন।
এরপর আপিল ও রিভিউ খারিজে ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে দফায় দফায় সময় প্রার্থনা করে বিজিএমইএ। গত বছরের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ’কে এক বছরের সময় দেন সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয় এ বছরের ১২ এপ্রিল। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হলো।
এরইমধ্যে উত্তরায় নিজেদের নতুন কমপ্লেক্স তৈরি করেছে বিজিএমইএ। ১৩ তলা ভবনটির ষষ্ঠতলার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই নিজেদের কার্যক্রম শুরু করেছে বিজিএমইএ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে