বিজ্ঞাপন

ফাঁকা ঢাকা যেন শান্ত এক জনপদ

June 4, 2019 | 5:44 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: একদিন আগেও যে ট্রাফিক সিগন্যালে বসে থাকতে হয়েছে আধা ঘণ্টা বা ৪০ মিনিট, সেখানেই আজ সময় লাগছে মাত্র মিনিটখানেক। রাজধানীর পল্টন, শাহবাগ, ফার্মগেট, বিজয় সরণি, মহাখালীর মতো কর্মচঞ্চল এলাকাগুলোতে নেই নিত্যদিনের ভিড়-ভাট্টা বা কোলাহল। এখনো গাবতলী বা মহাখালীর মতো ঢাকা ছাড়ার এলাকাগুলোতে খানিকটা ভিড় থাকলেও রাজধানীর সড়ক যথেষ্টই ফাঁকা। ২৯ রমজানে এসে যেন শেষ পর্যন্ত ঈদের আমেজ লেগেছে রাজধানীতে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৪ জুন) শহর ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। সড়কে যেমন নেই তেমন গণপরিবহনের উপস্থিতি, তেমনি পথচারীদেরও দেখা মিলছে সামান্য। গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যালগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা সময় কাটাচ্ছেন ছুটির আমেজে।

আরও পড়ুন:  ঈদে ঘরমুখী মানুষের বৃষ্টিভেজা ফেরা

ফার্মগেটে কথা হয় বই ব্যবসায়ী আসাদ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে চলে গেছে। এই এলাকা সারাবছর লোকে লোকারণ্য থাকে। হঠাৎ করে ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় ফার্মগেটকে অপরিচিত মনে হচ্ছে। তাই ইচ্ছা করেই আজ বেশ কয়েকবার আয়েশ করে রাস্তা পার হয়েছি।’ জনশূন্য ঢাকায় এটি তার প্রথম ঈদ বলেও জানালেন।

বিজ্ঞাপন

ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট হুমায়ুন বলেন, আজ একবারের জন্যও হাত তুলে কাউকে থামতে বলতে হয়নি। রাস্তার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি চলাচলের নির্দেশনা দিতে হয়নি। সারাদিন হর্নের শব্দ শুনতে শুনতে কানটা ঝালাপালা হয়ে যায়। আজ শব্দের সেই তীব্রতা নেই। এই ফাঁকা শহরকে এখন মনে হচ্ছে শান্ত এক জনপদ। ঈদ আসার আগেই ঈদের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা শহরে।

ঈদের একদিন আগে আজও অনেক মানুষের ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। ফলে শহর ছেড়ে যাওয়ার স্টেশনগুলোর মুখে আজও কিছুটা জটলা রয়েছে। কমলাপুর, গাবতলী ও সদরঘাটে ঢোকার মুখের এই সামান্য জট অবশ্য খুব একটা সমস্যায় ফেলছে না নগরবাসীকে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শহর ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় বাস, হোটেলসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠান আজ অনেকটা বন্ধই রয়েছে। ফলে ঢাকায় যারা ঈদ করছেন, তারা কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন। একটু দূরের গন্তব্যে যেতে হলে বেশি ভাড়া দিয়ে সিএনজি অথবা মোটরসাইকেলে চড়তে হচ্ছে। কেউ কেউ শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকায় মার্কেট এলাকাগুলোতেও খানিকটা ভিড় রয়েছে।

পেশাগত দায়িত্ব থাকা সাংবাদিক, পুলিশ ও চাকরির পরীক্ষায় আটকে যাওয়া ব্যাচেলর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবহন ও খাওয়া নিয়ে তারা বেশ সমস্যায় পড়েছেন। ঢাকায় পরিবহন সেক্টরে কর্মী ও হোটেল মালিক-কর্মচারীদের বেশিরভাগই শহরের বাইরের মানুষ হওয়ায় তারা গ্রামে চলে গেছেন। ফলে একবেলা খাবারের জন্য কিংবা গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক দূর পর্যন্ত হাঁটতে হচ্ছে সবাইকে।

পিয়াল আহমেদ নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, হলের ক্যান্টিন বন্ধ। নীলক্ষেত, চানখারপুলের দোকানগুলোও বন্ধ প্রায়। ফাঁকা ঢাকা দেখার আনন্দের পাশাপাশি খাবার সংগ্রহ করার কষ্টটাও  আছে।  ঈদের সময় এলাকাভেদে একটি করে হোটেল ও কয়েকটি বাস চালু রাখতে পারে। এতে করে ঈদের সময়ও ঢাকা শহর প্রাণবন্ত থাকবে, নগরে থেকে যাওয়া মানুষদের ভোগান্তিও কমবে।

সারাবাংলা/টিএস/জেডএফ 

বিজ্ঞাপন

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন