বিজ্ঞাপন

নিম্নমানের সেবা, কয়েকদফা চুক্তি শেষে আরও ৬ মাস থাকছে সিএনএস

September 27, 2019 | 8:09 am

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নিম্নমানের সেবা ও পরপর দুইবার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে (সিএনএস) আরও ছয় মাসের জন্য রাখছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এই সময়ের মধ্যে অনলাইনে আসন সংরক্ষণ ও টিকিট বিক্রির দায়িত্বে দরপত্রের মাধ্যমে নতুন আইটি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিতে চায় মন্ত্রণালয়। তাই এ মাসেই সিএনএসের সরে যাওয়ার থাকার কথা থাকলেও আপাতত তারাই থাকছে রেলের অনলাইন টিকিটের দায়িত্বে।

বিজ্ঞাপন

ট্রেনের ‘কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত আসন সংরক্ষণ ও টিকিটিং (সিএসআরটি)’ ব্যবস্থা পরিচালনা করে আসছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএস)। ই-টিকিট বিক্রি পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটে টিকিট বিক্রি এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের বিদ্যমান ওয়েবসাইট ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের দায়িত্বও পালন করছে সিএনএস। বর্তমানে ট্রেনের ৫০ ভাগ টিকিট মোবাইল অ্যাপসে বিক্রি করা হয়।

গত প্রায় এক যুগ ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের কম্পিউটারাইজড টিকিটিং ব্যবস্থা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে আসছে সিএনএস। ১৯৯৪ সালে প্রথম এ কাজটি করতো টেকনোহ্যাভেন। পরে দায়িত্ব পায় ড্যাফোডিল সফটওয়্যারস। এরপর সিএনএস ও ড্যাফোডিল যৌথভাবে কাজ করে। বর্তমানে সিএনএস এককভাবে দায়িত্ব পালন করছে।

২০০৭ সালে সিএনএসের সঙ্গে যে চুক্তি হয়, সেখানে রেলের নিজস্ব লোকবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা থাকলেও তা করেনি তারা। ২০১২ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও নতুন করে সময় বাড়াতে চায়  সিএনএস। এতে আপত্তি জানালে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা করে তারা। নানা কৌশলে এ সময় তিন মাস তিন মাস করে প্রায় ছয় মাস মেয়াদ বাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি। পরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নতুন করে আরও দুই বছরের জন্য সিএনএস চুক্তিবদ্ধ হয়।

বিজ্ঞাপন

এরপর রেলের সিএসআরটি পরিচালনার জন্য ২০১৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ পায় সিএনএস। ২০১৪ সালের ওই চুক্তিটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের যেসব কর্মকর্তা ওই চুক্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারা বিস্তারিত কিছু না জেনেই সিএনএসের সঙ্গে ওই চুক্তি করেছিলেন বলে জানিয়েছে রেলওয়ে সূত্র।

জানা গেছে, সিএনএস আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনিই এটি দেখভাল করছেন। তার একান্ত সহকারী এখন এর দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন বলে সিএনএস সূত্রে জানা গেছে।

তবে সিএনএসের নিম্নমানের সেবা দেওয়ায় রেলওয়ের ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে বারবার। টিকিট কাটতে নিয়ে সাধারণ মানুষের নানা ভোগান্তির অভিযোগের স্তূপ জমা হতে থাকে। এজন্য রেলপথমন্ত্রীকে দুঃখপ্রকাশও করতে হয়েছে বারবার।

বিজ্ঞাপন

এরপরও সিএনএস কেন রেলওয়ের অনলাইন টিকিটিং সিস্টেমের দায়িত্বে থাকছে— জানতে চাইলে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের পাশের দেশ চীন ও ভারত তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেছে। সিএনএসব যে সেবা দিচ্ছে, তা সন্তোষজনক নয়। এজন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমরা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাচ্ছি। যারা এ ধরনের সেবা দিতে দক্ষ, তাদের সবার কাছ থেকে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এর আগ পর্যন্ত সিএনএস রেলের ব্যবস্থাপনায় থাকবে। তবে এ সময় ছয় মাসের বেশি নয়। ছয় মাসের মধ্যেই যেন টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়, সেভাবেই এগুবে মন্ত্রণালয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যেন দেশীয় ও বিদেশি আইটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে— এমন ব্যবস্থা রাখা হবে। এ পর্যন্ত দেশীয়দের মধ্যে বিকাশ, নগদসহ কয়েকটি দেশীয় কোম্পানির আগ্রহের কথা জানা গেছে। তবে রেলের অনলাইন টিকিটিং ব্যবস্থায় একক কোনো প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বে না রেখে একাধিক প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে বলেও রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে।

সারাবাংলা/এসএ/জেএএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন