বিজ্ঞাপন

নতুন চেহারায় রাবির আমীর আলী হল

October 1, 2019 | 11:24 am

আবু সাঈদ সজল, রাবি করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সতেরোটি আবাসিক হল। গতানুগতিক ধারায় হলগুলোর উন্নয়ন অব্যাহত থাকলেও সৈয়দ আমীর আলী হলে দেখা মিলবে ভিন্ন চিত্র। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ ড. আমিনুল ইসলামের নানামুখি সংস্কারে জরাজীর্ণ হলটি নতুন রূপ লাভ করেছে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির কথা চিন্তা করে চলছে হলের ছাদ সংস্কারের কাজ। অর্ধাংশ কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে গোসলখানাতে বসানো হচ্ছে টাইলস।

তা ছাড়া, রাতের ক্যাম্পাসে হলে প্রবেশ করতেই দৃষ্টি কেড়ে নেবে সৈয়দ আমীর আলী হলের লাল লাল নামফলক বাতি। একটু পা বাড়ালেই হাতের ডান পাশে দেখা মিলবে বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আমীর আলীর ম্যুরাল।

চোখ ধাঁধানো সাজে সজ্জিত হলটি। হলে অভ্যন্তরে ঢুকতেই চোখে পড়বে সৈয়দ আমীর আলীর কর্মজীবনী নিয়ে তৈরি বোর্ড। আবাসিক শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট সুবিধায় রয়েছে শক্তিশালী ওয়াইফাই ব্যবস্থা।

বিজ্ঞাপন

হলের মাঝখানের গোল চত্বরে মুক্তমঞ্চ, যেটি আকাশ থেকেও দৃষ্টিগোচর হয়। মসজিদের উন্নত সাউন্ড সিস্টেম, ওজুখানা ও মসজিদের মেঝেতে টাইলস স্থাপনসহ পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, আধুনিক মানের রিডিং রুম তৈরি। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুবিধার্থে হল লাইব্রেরি নিয়মিত খোলা রাখার ব্যবস্থা। হলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বাইরের অংশ রং করাসহ সুসজ্জিত।

শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি মাথায় রেখে চালু রয়েছে জিমনেসিয়াম। শিক্ষার্থীদের চিত্র বিনোদনে আকর্ষণীয় টিভি রুম (শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্যারিয়ারমুখি অনুষ্ঠানে এটি গ্যালারি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়)। রাতে হল অভ্যন্তরে বাগানগুলো গার্ডেন লাইটের টিম টিম আলোর বিচ্ছুরণ। আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনকল্পে চালু হয়েছে অভিযোগ বক্স। নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, রিডিংরুমে আইপিএসের ব্যবস্থাসহ হলের সামনের চৌবাচ্চাটিতে টাইলস স্থাপন হলে এনে দিয়েছে নতুনত্ব।

বিজ্ঞাপন

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকটিও অনেক প্রশংসনীয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ প্রাধ্যক্ষের উদ্যোগে হল পরিষ্কার অভিযান। এছাড়াও প্রতিটি ব্লকেই ময়লা রাখার জন্যে ঝুড়ির ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের রুম পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে নোটিশ দিয়ে অবগত করে আবাসিক শিক্ষকসহ রুমে রুমে গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নেয়ার বিষয়টিকেও ইতিবাচকভাবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা।

হাসান তারেক নামে এক আবাসিক শিক্ষার্থী (ফোকলোর) বলেন, ‘একটা আবাসিক  হলের মৌলিক যে প্রয়োজন খাবার মান উন্নয়ন, সুষ্ঠু পরিবেশ, শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সৈয়দ আমাীর হলের প্রাধ্যক্ষ আমিনুল স্যার আসার পর থেকে এই বিষয়গুলোতে সংস্কারে জোর দেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, এই হলে এর যে সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশ আছে তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অন্য হলগুলোর থেকে তুলানায় একটু আলাদা।’

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম আকাশ (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) বলেন, ‘প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের দায়িত্ব পেয়ে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে মাসিক মিটিয়ে নিজে বসে হলের প্রধান সমস্যগুলো চিহ্নিত করে সমাধানে মনোনিবেশ করেন।’

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ (ইসলামের ইতিহাস) বলেন, ‘ডাইনিংয়ের খাবার মান নির্ণয়ে প্রাধ্যক্ষ স্যার শুরু থেকেই প্রায় নিয়মিত আমাদের সঙ্গে খাবার খেয়েছেন। ডাইনিংয়ের পরিবেশ উন্নত করতে প্রাধ্যক্ষ স্যার নানামুখি উদ্যোগ নিয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

প্রাধ্যক্ষ ড. মো আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা এই হলটিকে মডেল হলে পরিণত করতে চাই। সেখানে নানারকম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এরইমধ্যে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কাজ অব্যাহত থাকবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৯ মে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলামকে সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষদের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ।

সারাবাংলা/একে        

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন