বিজ্ঞাপন

বাজারে পেঁয়াজের ক্রেতা কম

October 2, 2019 | 4:42 pm

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গত কয়েকদিনের তুলনায় বুধবার পাইকারি ও খুচরা বাজারে পেয়াজের দাম কেজিপ্রতি অন্তত ১০ টাকা কমেছে। তারপরও পেঁয়াজের দাম বাড়তি বলে মনে করছেন ক্রেতারা। আকস্মিক দাম বাড়ার কারণে বাজারে ক্রেতা কমে গেছে। বিক্রেতারাও বলছেন, তাদের বেচাকেনা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।

কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা মো. দুলাল খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে, আজ ৯০ টাকায়ও নিচ্ছে না। আগের দিনে সর্বনিম্ন ১৫ বস্তা (প্রতি বস্তা ৭০ থেকে ৭২ কেজি) বিক্রি করতাম। আজকে এখন পর্যন্ত এক বস্তাও বিক্রি করতে পারিনি।’

আশসাফ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘রোব ও সোমবারের দিকে পেঁয়াজের দাম বেড়েছিল। এখন তো দাম কমে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

৯০ টাকা কেজিতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি। আগে যে পেঁয়াজ কিনেছিলাম এখন তা লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে। তারপরও বেচাকেনা নেই। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ বস্তা (প্রতি বস্তা ৭০ বা ৭২ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। আগে সেখানে ১৫ থেকে ২০ বস্তা বিক্রি করতাম।’

বিক্রেতা আলাউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাইকারি গতকাল ছিল ১০০ টাকা, এখন ৯০ টাকা। দাম যখন কম ছিল তখন ৩০ থেকে ৩৫ বস্তা বিক্রি করেছি। আজ এখন পর্যন্ত ১৪ থেকে ১৫ বস্তা বিক্রি করতে পারছি।’

শহিদুল নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে ১০০ টাকায় উঠেছিল, এখন তা ৮৪ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়াতে বিক্রি একেবারেই কমে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসেছিলেন তালতলার বাসিন্দা আনোয়ার। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম বাড়ায় আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষেরা খুব কষ্টে আছি। বাইরের দেশে ঘাটতি পড়লে কোনো জিনিসের দাম বাড়ে। আর আমাদের দেশে শোনামাত্রই দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজারে তো কোনো পেঁয়াজের ঘাটতি দেখছি না। গোডাউনে হয়ত আরও বেশি আছে। কিন্তু পাবলিকরে খাওয়াবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগে যেটুকু পেঁয়াজ লাগত এখন কেনার ক্ষেত্রে তার চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছি। এখন তো পেঁয়াজ খাওয়া বাদ দিতে হবে।’

রায়ের বাজারের বাসিন্দা মো. আলমগীর কারওয়ান বাজারে কোনো এক কাজে এসেছিলেন। কাজ শেষে কারওয়ান বাজারে ঢু দেন। সারাবাংলার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ আমি ৩০ টাকা কেজি থেকে পাল্লা দরে কেনা শুরু করেছি। সর্বশেষ ৪৫ টাকা কেজির সময়ও দুই পাল্লা কিনেছি। স্টকে থাকা ওই দুই পাল্লা পেঁয়াজ শেষ হওয়ার পর ১ কেজি করে দুইদিন দুই কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। অর্থাৎ আগে যেমন কিনতাম এখন তার অর্ধেকের চেয়েও কম কিনছি। আর এই বাজারে এসেছিলাম যদি একসঙ্গে কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। কিন্তু দেখা গেল দাম বেশিই।’

এদিকে, মহাখালীর বউবাজারে দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ বাজারের পেঁয়াজের বিক্রেতা আমিনুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দাম বাড়ার পর থেকে মানুষ পেঁয়াজ কম কিনছে। দোকানেও আগের চেয়ে কম পেঁয়াজ তোলা হচ্ছে। আগে ৫০ কেজি বিক্রি করলে এখন তা ৪০ কেজিতে নেমে এসেছে। বাজারটিতে পেঁয়াজ কিনতে আসা শাহীনবাগের বাসিন্দা হিমেল বলেন, ‘আগে একসঙ্গে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনলেও এখন দুই কেজি কিনছি। বাজারে তো অনেককে দেখলাম হাফ কেজি পেঁয়াজও কিনছে।’

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

পেঁয়াজের দাম কমবে কি না, ব্যবসায়ীই শঙ্কায়
সারাবাংলা কার্টুন: পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা কেজি!
একদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৪৫ টাকা
‘পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণ খুঁজতে মাঠে নামছে মনিটরিং টিম’
পেঁয়াজ: আমদানিকারকদের ফোনে দাম বাড়ান পাইকারি ব্যবসায়ীরা
পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধ করলো ভারত
পেঁয়াজের বাজার চড়া, বেড়েছে ডিম-মুরগি-সবজির দাম
হিলিতে আমদানি করা পেঁয়াজের ‘ছড়াছড়ি’, নেই ক্রেতা
পেঁয়াজের বাজার ভারতনির্ভর, দাম কমাতে পারবে না মিশর-তুরস্ক

 

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন