জালে উঠছে ঝাঁকে ঝাঁকে মা ইলিশ, ভুল সময়ে নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ

এম হেলাল উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ভোলা: ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও ভোলার মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীতে জেলেদের জালে এখনও ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ। জেলেরা বলছেন, সরকার ভুল সময়ে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। ইলিশের প্রজনন মৌসুম ঠিক সময় নির্ধারণ করা হয়নি। যে কারণে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারেনি। তাই এখন ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পরছে। তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, ইলিশ বছরের বার মাসই ডিম ছাড়ে।

জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে যায়নি। নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গিয়ে জাল ফেলে পাচ্ছেন ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ। জেলেদের দাবি এবছর শতকরা ১০ শতাংশ মাছও ডিম ছাড়তে পারেনি। তাই নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও এখন জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পরছে। এতে সরকারের ইলিশ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কিত জেলেরা। এছাড়াও ভবিষ্যতে নদীতে ইলিশ পাওয়া নিয়ে চিন্তিত জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

ভোলা সদরের তুলাতলি ঘাটের জেলে শরীফ, ফয়েজ, ভুট্টু জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার বিকেলে পর্যন্ত নদীতে গিয়ে জাল ফেলে শুধু ডিমওয়ালা মা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এ দুই দিনের তাদের জালে প্রায় ৫ শতাধিকেরও বেশি মা ইলিশ ধরা পরেছে।

ইলিশা জংশন ঘাটের জেলে মো. কামাল ও জোবায়ের বলেন, ‘এখন জালে যে ইলিশ মাছ ধরা পরছে তার ৯০ ভাগ মাছের পেটে ডিম। জাল থেকে নৌকায় তুললে মাছের পেটের থেকে ডিম পড়ে যায়। দেখে মনে হয় মাছগুলো ২/৩ দিনের মধ্যে ডিম ছাড়তো। আর ডিম ছাড়া মাছের সংখ্যা খুবই কম।’

তুলাতলি ঘাটের আড়ৎদার ও মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক মেম্বার জানান, জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীসহ এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের সাথে মৎস্য বিভাগ যদি নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে পরামর্শ করে ইলিশ প্রজনন মৌসুমের দিন ঠিক করতো তাহলে এমন ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পরতো না। আর ইলিশও প্রায় শতভাগ ডিম ছাড়তে পারতো। এখন যদি ইলিশ টার্গেট পরিমাণ ডিম ছাড়তে না পারে তাহলে সাধারণ জেলে ও আমারা মৎস্য ব্যবসায়ীরা বিপদে পরবো। কারণ জেলেরা যদি নদীতে গিয়ে ইলিশ না পায় তাহলে আমাদের ব্যবসায় লোকসান গুণতে হবে।

ওয়ার্ল্ড ফিশ বাংলাদেশের কর্মকর্তা অংকুর মোহাম্মদ ইমতিয়াজ জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে প্রচুর ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পরছে। এবছর নিষেধাজ্ঞার সময় ডিম ছাড়া ইলিশের পরিমাণ খুবই ছিল।

ভোলা সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এবছর ইলিশ প্রজনন মৌসুমের তারিখ সঠিক হয়েছে। ইলিশ সারা বছরই ডিম ছাড়ে। জেলেদের দাবি ঠিক নয়। নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ ঠিকমতই ডিম ছেড়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সারাবাংলা/এমও