বিজ্ঞাপন

বেয়াদবির সীমা থাকা দরকার— দলের জুনিয়রদের মির্জা আব্বাস

December 18, 2019 | 7:32 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আয়োজনটা ছিল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে। অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল দুপুর ২টার পরপরই। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান সন্ধ্যায়।

বিজ্ঞাপন

এর আগে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, যুগ্ম মহাসচিব পর্যায়ের নেতারা দীর্ঘ সময় ধরে বক্তব্য দেন। শুধু তাই নয়, মূল মঞ্চে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পাশের চেয়ারগুলোতেই সদ্য সাবেক ছাত্রনেতারা খুব আয়েশ করেই বসে ছিলেন। বক্তব্য দিতে উঠে কেউ ১৫ মিনিট, কেউ ২০ মিনিট, কেউ ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় নেন। আর বয়সের ভাড়ে ন্যুব্জ দলের বর্ষীয়ান নেতারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে বসে সেই বক্তব্য শুনতে বাধ্য হন।

বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ পান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। যিনি প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা বসে ছিলেন মঞ্চে। রাগে-ক্ষোভে-দুঃখে ততক্ষণে তিনি অগ্নিশর্মা।

বক্তৃতা দিতে উঠে প্রথমেই তিনি বলেন, ‘আমাদের জুনিয়র নেতারা আধাঘণ্টা ধরে সময় নিয়ে বক্তব্য দিলেন। এখন সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেওয়ার সময় পাচ্ছেন না। আমি বোঝাতে পারছি? আমার নিচে (দর্শক সারিতে অবস্থান নেওয়া) এবং আমার সঙ্গের (মঞ্চে অবস্থান নেওয়া) জুনিয়র নেতারা।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গতকাল আমি মহাসচিব, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, ড. খন্দকার মোশাররফ সাহেব এবং আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটির নেতারা একটি পরীক্ষা করেছিলাম। সেই পরীক্ষায় আমাদের জুনিয়র নেতারা ফেল করেছেন। আমি হয়তো বোঝাতে পারিনি!’

‘আপনারা খেয়াল করেছেন, জুনিয়র নেতারা ট্রাকের ওপর মাথা উঁচু করে দাাঁড়িয়ে আছেন। আর আমরা ট্রাকের নিচে দাঁড়িয়ে আছি। খেয়াল করেছেন আপনারা? বেয়াদবির সীমা থাকা দরকার! এই দলে এই ধরনের বেয়াদবি যতদিন পর্যন্ত বন্ধ না হবে, নিয়ম-কানুন যতদিন না মানা হবে, ততদিন পর্যন্ত আপনারা আন্দোলন করতে পারবেন না। নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে দলকে আনতে হবে,’— বলেন দলের স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।

মির্জা আব্বাসের এই বক্তব্যের মধ্যে মূল মঞ্চে বসে থাকা যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী-খান সোহেল পাশের চেয়ারে বসা সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদের সঙ্গে ফিস ফিস করে কথা বলতে থাকেন। সাধারণত বক্তব্য দেওয়ার সময় বিএনপির এই দুই জুনিয়র নেতা বরাবরই বেশি সময় নিয়ে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

তাছাড়া ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক কমিটিতে মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক ও হাবীবন-উন-নবী-খান সোহেলকে সদস্য সচিব করার পর জুনিয়র এই নেতাকে রানিংমেট হিসেবে মন থেকে মেনে নিতে পারেননি মির্জা আব্বাস। সেই থেকে দলের সিনিয়র-জুনিয়রের মধ্যে একটি দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক অব্যহত রয়েছে।

শুধু হাবীব-উন-নবী-খান সোহেল আর অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ নয়, মঞ্চে থাকা দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সঙ্গে প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের সঙ্গে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের সঙ্গে মিজানুর রহমান মিনু কানাকানি করতে থাকেন।

বক্তব্য শেষে মির্জা আব্বাস মঞ্চে এসে বসলে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। এ সময় মঞ্চে থাকা দলের অপেক্ষাকৃত জুনিয়র নেতাদের চেহারায় কিছুটা ক্ষোভ ও বিরক্তি লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে হাবীব-উন-নবী-খান সোহেলকে কিছুটা রাগান্বিত দেখা যায়।

অবশেষ সন্ধ্যা ৬টার দিকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের আলোচনা শেষ হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন