বিজ্ঞাপন

নামছে তাপমাত্রার পারদ, রাজশাহীতে হাড়কাঁপানো শীত

December 19, 2019 | 3:55 pm

সুমন মুহাম্মদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: গত তিনদিন ধরেই রাজশাহীতে তাপমাত্রার পারদ নিচের দিকে নামছে। সঙ্গে ঘণ্টায় বইছে ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। রোদের আলো থাকলেও নেই উষ্ণতা।

বিজ্ঞাপন

ফলে হাড়কাঁপানো শীতে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। গোটা রাজশাহী জুড়েই এই পরিস্থিতি।

আবহাওয়া অফিস বলছে, এমন আবহাওয়া থাকবে আরও কয়েকদিন। তাপমাত্রা আরও কমার সঙ্গে সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের মাত্রাও বাড়বে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দরিদ্রদের শীত মোকাবিলার জন্য প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে এখনও শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়নি।

বিজ্ঞাপন

রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালে গোটা রাজশাহী ঢাকা পড়ছে ঘন কুয়াশার চাদরে। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তা কেটে গেলেও কমছে না শীতের তীব্রতা। বিশেষ করে বিকেল হতে না হতেই আবার বাড়ছে শীত। এ কারণে রাত ৯টা বাজতে না বাজতেই ফাঁকা হচ্ছে রাস্তা আর বিভিন্ন এলাকার মোড়গুলো। বাজরের দোকানপাটও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভোর বেলায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে।

আবহাওয়া অফিস ডিসেম্বরের শেষভাগেই এ অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের আভাস দিয়েছিল। অবশ্য দেখা গেল মাসের মাঝামাঝিতেই শুরু হয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও ঠান্ডা বাতাসের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। আর শীত নিবারনের জন্য ভিড় জমাচ্ছেন মহানগরীর ফুটপাতের দোকান ও হাট-বাজারের দোকানগুলোতে। আর এই সুযোগে বেড়েছে শীতবস্ত্রের দাম।

রাজশাহীতে শীত বাড়ার কারণে বাড়ছে শীতার্ত ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ। কিন্তু এখন পর্যন্ত শীতার্তদের মধ্যে তেমনভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। দু’একজন ব্যক্তিগতভাবে শীত বস্ত্র বিতরণ করলেও তা অপ্রতুল। তাই সাধ্যের মধ্যে শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনছেন তারা। গত কয়েকদিন থেকে সর্বস্তরের মানুষদের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করতে দেখা গেছে। তবে বিপনি বিতানগুলোর চেয়ে ফুটপাতেই ক্রেতাদের বেশি ভীড়। মহানগরীর, গণকপাড়া, সাহেববাজার, কোর্ট শহীদ মিনার, নিউমার্কেট বিন্দুর মোড় এলাকার ফুটপাতে শীত পোশাক বিকিকিনির দৃশ্য দেখা গেছে।

রাজশাহীর আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, এবছর সর্বনিম্ন রেকর্ড করা হয়েছে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ৯ দশমিক ৪ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি সপ্তাহের রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাত থেইে শীতের তীব্রতা বেড়েছে।

বিজ্ঞাপন

সেইসঙ্গে অনেকটা লাফিয়ে লাফিয়ে তাপমাত্রা কমছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) তা আরো নেমে রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে গেলো তিনদিনে ৩ ডিগ্রি তাপামত্রা কমেছে।

তিনি বলেন, রাজশাহীসহ আশেপাশে এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী দু’একদিনের মধ্যে তা আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কি.মি. বেগে শৈত্যপ্রবাহ বইছে।

রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, তাদের হাতে এখন ৬০ হাজার কম্বল রয়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীতার্তদের হাতে কম্বল পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার ৯ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় কম্বল বিতরণ হচ্ছে। সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্বল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুল হক জানান, হঠাৎই ঠান্ডা বেড়েছে। তাই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে প্রতিদিন। এদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। আক্রান্তদের বেশিরভাগই ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, হৃদরোগ, অ্যাজমা নিয়ে হাসপাতালে আসছেন বলে জানান তিনি।

সারাবাংলা/এসএমএন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন