বিজ্ঞাপন

জনগণের কল্যাণ সবচেয়ে বড়: প্রধানমন্ত্রী

March 9, 2020 | 7:39 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস নিয়ে অহেতুক আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত সৌভাগ্যের। তারপরেও আমাদের কাছে জনগণের কল্যাণ সবচেয়ে বড়।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্য এ কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সভাটি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের হলেও দুইজন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এরা হলেন আমির হোসেন আমু এবং এইচ টি ইমাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী বিশাল আকারে করার উদ্যােগ নিয়েছিলাম সেখানে লাখ মানুষ জময়েত হবে। সেই জমায়েত বন্ধ করে দিয়েছি, তার কারণ কোনোভাবে মানুষের যেন ক্ষতি না হোক। জনগণে কল্যাণের জন্য করব। হ্যাঁ এটা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর। তবে আমাদের অন্যান্য কর্মসূচি রাখবো যেমন সকালে পুষ্পমাল্য অর্পণ, টুঙ্গিপাড়া যাবো। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেটি আমরা চাই না। আয়োজন সব ঠিক থাকবে। সব প্রোগ্রাম ঠিক থাকবে। পরবর্তীতে তারিখ দিয়ে করব।’

‘যেহেতু ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। তাই জনসমাগম আপাতত বন্ধ রেখেছি।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, গতকালকে আমি রেহানা, আমরা সবাই ছিলাম। সায়মা ছিল, রেদওয়ান ছিল, সবাই মিলে আমরা মতামত দিয়েছি। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকেও বলে দিয়েছি আমাদের কাছে জনগণের কল্যাণটাই সবথেকে বড়।

তিনি আরও বলেন, সভা করে সিদ্বান্ত নিয়েছি যেখানে ব্যাপক লোকসমাগম হবে, বেশি গেদারিং হবে, বেশি লোকসমাগম হবে, সেই প্রোগ্রামগুলিতে আমরা পরবর্তীতে তারিখ দেব। আপাতত স্থগিত করেছি। সমস্ত কর্মসূচিটা আমরা পুনর্বিন্যাস করে দিয়েছি। এগুলো ঠিক এই মুহুর্তে আমরা করব না। আমরা অন্তত এক সপ্তাহ দেখব। দেখার পরে আমরা করব পরবর্তীতে। এই সমস্ত যাওয়ার পরে।

‘কারণ এটা ঠিক যে, এতে লোক প্রবাসে আসা যাওয়া করছে। কার মধ্যে কী আছে? সে জন্য এটি যেন কোনোমতে সংক্রমণ না হয় সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি’ বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ১০৪ টি দেশে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৮৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তারমধ্যে মারা গেছে ৩ হাজার ৫৪৬ জন। ৬০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। বিশেষ করে এই জীবাণু বৃদ্ধদের আক্রমণ করলে একটু ভয় আছে। কারণ বৃদ্ধকালে কারও কারও ডায়াবেটিক, কিডনি সমস্যা থাকে। তবে যারা যুবক শ্রেণী তাদের জন্য এত চিন্তার কিছু নাই। বৃদ্ধ হলে তো এমনই যাওয়ার সময় হয়ে যায় কাজেই করোনাভাইরাস নিয়ে খুব একটা দুশ্চিন্তার দরকার নেই।

তিনি বলেন, ‘সর্দি কাশি যেন হাতে না লাগে। পরিষ্কার রাখতে হবে। বাইরে গেলে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে হাত ধুতে হবে। খাবারের আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আবারও বলছি অযথা মাস্ক কিনে জমা করে রাখা, স্যানিটিজার কিনে জমা করে রাখা, টিস্যু কিনে জমা করে রাখা; এগুলোর কোনো প্রয়োজন নাই। এগুলো একদম কোনো কাজে লাগবে না। পরে কিন্তু ফেলে দিতে হতে পারে। এগুলোর কিন্তু একটা টাইম (মেয়াদ) থাকে।

কোনো কোনো পত্রিকায় দেখা যাচ্ছে যে, একটা আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আমি জানি না, তাদের এসব বিক্রি করার কোনো কোম্পানি বা এজেন্সি আছে কি না?’

বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজধানীতে তিনটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।

‘জেলা উপজেলায় মেডিকেল কলেজগুলোতে নির্দেশ দিয়েছি। অনুরোধ করব কারো যদি এতোটুক সন্দেহ হয় যে এরকম ভাইরাস দেখা দিচ্ছে তাহলেই ডাক্তারের কাছে ছুটাছুটি করা, অহেতুক ছুটাছুটি করে ডাক্তারকে ব্যতি ব্যস্ত করার কোনো যৌক্তিকতা নাই। সর্দি কাশি ঋতু বদলানোর সময় শীত থেকে গরমের দিকে যাচ্ছে এসময় তো এমনিতেই সর্দি কাশি হয়। স্বাভাবিক সর্দি কাশিতে ভয় পাবার কিছু নেই। বেশি বেশি পানি খেতে হবে সবাই। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে।’

দেশের মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে একটু পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। মানুষের সংস্পর্শে না যাওয়া, খুব বেশি জনসমাগম হয় সেখানে না যাওয়া সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাসি কাশি দিতে গেলে রুমাল ব্যবহার করা। ময়লা রাখার আলাদা ব্যাগ বা বিন রাখা।

`সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। ভয় পাওয়ার কোনো দরকার নাই। মাস্কা আর সেনিটাইজার কেনার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে যে যা পারছে এক গাদা করে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বাঙালি বিশ্বের অনেক জায়গায় হচ্ছে। এটি পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়। এগুলো করার কোনো দরকার নেই’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সারাবাংলা/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন