বিজ্ঞাপন

চোখের পানিতে মুসল্লিদের ফরিয়াদ

March 27, 2020 | 4:31 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ শেষে বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। মুসল্লিরা এ সময় চোখের পানি ফেলে দেশ ও দেশবাসীকে রক্ষায় আল্লাহর কাছে দুহাত তুলে ফরিয়াদ করেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৭ মার্চ) জুম্মার নামাজ শেষে এ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

মোনাজাতে ঈমাম বলেন, আল্লাহ আমাদের গোনাহ মাফ করে দাও। আমাদের যাবতীয় ভুলগুলো মাফ করে দাও। আমাদের দোয়া কবুল করো। সারাবিশ্বে যেভাবে মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে সেখান থেকে পরিত্রাণ দাও সবাইকে। সবাইকে মাফ করে দাও। আমাদের বাংলাদেশকে রক্ষা করো। বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করো। আল্লাহ তুমি আমাদের ওপর থেকে মুছিবত ‍দূর করে দাও।

বিজ্ঞাপন

মোনাজাতে বলা হয়, এই মুহূর্তে তুমি ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। একমাত্র তুমি পারো বিশ্ববাসীকে রক্ষা করতে। তাই তোমারই সাহায্য কামনা করছি। তুমি আসমানি বালা আসমানে উঠায়ে নাও। জমিনের বালা জমিনে দাবায়ে দাও। তুমি পরাক্রমশালী, তুমি শক্তিধর। আমরা তোমারই ইবাদত করতে চাই। আল্লাহ তুমি সকলকে মাফ করে দিয়ে এই মহামারীর হাত থেকে রক্ষা করো।

উপস্থিত মুসল্লিরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আমিন আমিন উচ্চারণ করতে থাকেন।

এ সময় ঈমাম সাহেব বলেন, রাব্বুল আলামীন, আপনি আমাদের যে শাস্তি দিচ্ছেন আমরা সহ্য করতে পারছি না। আপনি আমাদের ধ্বংস করে দিয়েন না। যে মহামারি চলছে তা থেকে হেফাজত করুন। আমাদের যাওয়ার জায়গা নেই আল্লাহ। একমাত্র তোমারই কাছে ভিক্ষা চাইছি আল্লাহ। তুমি আমাদের রক্ষা করো মাবুদ। দেশের মানুষকে রক্ষা করো আল্লাহ। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে যেসব চিকিৎসক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে এসেছে তাদের রক্ষা করুন আল্লাহ। দেশের শৃঙ্খলা রক্ষায় যারা কাজ করছেন তাদেরও রক্ষা করুন আল্লাহ।

বিজ্ঞাপন

এর আগে দুই রাকাত জুমার ফরজ নামাজ আদায় করা হয়। অন্যান্য শুক্রবার যত সংখ্যক মুসল্লি হয়ে থাকে তার দশভাগের একভাগ মুসল্লি আজ নামাজে অংশ নেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। অন্যান্য দিনে বাইরে, সিঁড়িতে এবং দ্বিতীয় তলায় বিশাল আকারে গড়া টিনশেডেও জায়গা হতো না মুসল্লিদের। কিন্তু আজ ছিল সবই ফাঁকা।

নামাজের সময় সবাই কারও শরীরের সঙ্গে যেন শরীর না লাগে সে জন্য দূরত্ব বজায় রেখেছিল তারা। এদিন বয়স্ক মুসল্লি কিংবা শিশুদের ভিড় দেখা যায়নি জাতীয় মসজিদে।

আজকে কোনো বাংলা তরজমা হয়নি। অভ্যন্তরীণ আজানের পর সংক্ষিপ্ত খুতবা হয়। সেই খুতবা ঈমাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে পাঠ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে রাজধানীর অন্যান্য মসজিদগুলোতেও আগের চেয়ে মুসল্লি কম দেখা গেছে। কোথাও আগেই নামাজ হয়েছে সীমিত পরিসরে। কোথাও মাইকিং করে বলা হয়েছে, নামাজ সীমিত করার কথা।

গেন্ডারিয়া ও সুত্রাপুর এলাকায় সকালে মাইকে বলা হয়েছে, নামাজ ১টা ১৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে। সংক্ষিপ্ত খুতবা হবে। ওয়ারী স্ট্রীটে ১টা ১৫ মিনিটে নামাজ হয়েছে। সেগুনবাগিচায় দেড়টায় নামাজ হয়েছে। সেখানেও আল্লাহর কাছে কান্না করে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি চাওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গতকাল (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে এক বার্তায় বলা হয়েছে, আলেম ওলামার সিদ্ধান্তমতে করোনা সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল মসজিদে জুমার নামাজ সংক্ষিপ্ত পরিসরে করতে অনুরোধ করা হয়েছে। যতটা সম্ভব লোক সমাগম এড়িয়ে চলতে বলা হয় ওই বার্তায়।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন