বিজ্ঞাপন

করোনায় আতঙ্কিত নয়, বাড়াতে হবে সচেতনতা: মুনতাসীর মামুন

May 18, 2020 | 9:52 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেছেন, ‘করোনাতে আসলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই যদি মানুষ সচেতন থাকে। করোনা মোকাবিলায় এই সচেতন থাকা খুবই জরুরি। অর্থাৎ যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হচ্ছে তারা চিকিৎসা শেষে সুস্থও হয়ে উঠবে। এক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনাও কম থাকে। কিন্তু মনে রাখতে হবে এটা একটা ছোঁয়াচে রোগ যেটির সংক্রমণ রোধে প্রয়োজন সচেতনতা।’

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৮ মে) কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরে সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।

সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন

তিনি বলেন, ‘আমি এখন ভালো আছি। আমার সকল পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। এখন সুস্থ হয়ে ফিরেছি বাসায়। আমার এখন কোনো শারীরিক সমস্যা বা অন্য কিছুই নেই। তবে আমার এই সংক্রমণ চলাকালীন সময়ে কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে আমি খালি বলবো আমরা করোনা সম্পর্কে আসলে গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরঞ্জিত করে ফেলেছি অনেক বিষয়। করোনাতে আসলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, যদি মানুষ সচেতন থাকে। করোনা মোকাবিলায় এই সচেতন থাকা খুবই জরুরি। অর্থাৎ যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হচ্ছে তারা চিকিৎসা শেষে সুস্থও হয়ে উঠবে। এক্ষেত্রে মৃত্যুর সম্ভাবনাও কম থাকে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ একটি ছোঁয়াচে রোগ। এই ছোঁয়াচে সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ যদি এটা না বুঝে তাহলে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা যতটুকু আছে ততটুকুও থাকবে না। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়ার একটা সম্ভাবনাও কিন্তু থাকে। আমি কিন্তু বেশ কয়েকটা হাসপাতাল দেখেছি। অন্যরা অনেকেই কিন্তু যায় নাই। আর তাই একজন রোগী হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু ভিন্ন। সুতরাং কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে আমি মনে করি সবচাইতে বড় বিষয় হলো সচেতন হওয়া। এটা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার এমন কোনো কারণ নেই। কিন্তু সচেতন না হলে সংক্রমণ হবে এটা কিন্তু মানতেই হবে।’

জনগণের কাছে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমার আসলে সকলের কাছেই একটা আবেদন। আর তা হলো আমাদের আতঙ্কিত না হয়ে বরং সচেতনতা বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সবখানেই মহামারি থেকে রক্ষা পেতে হলে সংক্রমণ থেকে সচেতন থাকা ছাড়া আর অন্য কোনো বিকল্প নেই।’

তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপে ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের যে আন্তরিকতাপূর্ণ চিকিৎসাসেবা পেয়েছি তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আমাকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমি তাদেরকে তো বটেই, এছাড়া দেশের অগণিত মানুষ, মিডিয়া কর্মী আমার জন্য মঙ্গল প্রার্থনা করেছেন। আমি এখন সুস্থ হয়ে ফিরেছি। আমি সবাইকে আমার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরে অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রমে আমি সুস্থ হয়ে আজ বাসায় ফিরেছি। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপে আমার চিকিৎসা ব্যবস্থায় আসলে কোনো ত্রুটি ছিল না। হাসপাতালের চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের আন্তরিকতাপূর্ণ চিকিৎসা ও সেবার আমি দ্রুত সেরে উঠেছি। সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।‘

তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ হওয়ার সংবাদে সারাদেশের মানুষ যেভাবে আমার জন্য দোয়া করেছেন তা আসলে জীবিত অবস্থায় বেশি মানুষ দেখে যেতে পারে না। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিকভাবে আমার খোঁজখবর রেখেছেন। এ জন্য আমি দেশবাসী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুনতাসীর মামুনের মা কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরে গেছেন বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে ৩ মে সন্ধ্যায় রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৬৯ বছর বয়সী অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে। ৪ মে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়া যায়। সে হাসপাতালেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেওয়া হয় মুনতাসীর মামুনকে। পরবর্তীতে ৭ মে মুনতাসীর মামুনকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন