বিজ্ঞাপন

উদ্বোধন হলেও আইসোলেশন সেন্টার চালু করতে পারেনি চসিক

June 18, 2020 | 5:41 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঘটা করে উদ্বোধন হলেও আইসোলেশন সেন্টারে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা শুরু করতে পারেনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এক সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী রোববার (২১ জুন) থেকে আইসোলেশন সেন্টার চালুর ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্টদের মতে, আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের জটিলতা শেষ না করেই তড়িঘড়ি উদ্বোধনের ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত জটিলতায় ১০ জন চিকিৎসককে চাকরিচ্যুত করে নতুনভাবে ১৬ জনকে আইসোলেশন সেন্টারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যদিও এর মধ্য দিয়েই জটিলতার অবসান দেখছেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা।

নগরীর আগ্রাবাদে সীকম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি কমিউনিটি সেন্টারে গড়ে তোলা ২৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার। গত ১৩ জুন সেন্টারটি উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নগরীর আগ্রাবাদে সিটি কনভেনশন হলে ২৫০ শয্যার এই আইসোলেশন সেন্টারের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও কর্মকর্তা-কর্মচারি মিলিয়ে ৪৬ জন নিয়োগের অনুমোদন হয়। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড মেডিকেল সেন্টারে অস্থায়ীভাবে কর্মরত ১৪ জন চিকিৎসক এবং ২৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ মোট ৩৭ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করে স্বাস্থ্য বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

আইসোলেশন সেন্টারে দায়িত্ব পালনের আগে তাদের চাকরি স্থায়ী করার শর্ত দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আখতার চৌধুরী তাদের শর্ত মানার আশ্বাস দিলেও কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। এ অবস্থায় প্রশিক্ষণ শুরুর পর ১০ জন চিকিৎসক এবং একজন স্টোর কিপার এতে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। মাত্র চারজন চিকিৎসক যোগদানে সম্মত হলেও তাদের মাধ্যমে ২৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার চালু করা সম্ভব হয়নি।

গত মঙ্গলবার (১৬ জুন) ১০ চিকিৎিসক ও স্টোর কিপারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এরা হলেন- সিদ্ধার্থ শংকর দেবনাথ, ফরিদুল আলম, আবদুল মজিদ সিকদার, সেলিনা আক্তার, বিজয় তালুকদার, মোহন দাশ, ইফতেখারুল ইসলাম, সন্দ্বীপন রুদ্র, হিমেল আচার্য্য ও প্রসেনজিৎ মিত্র। এছাড়া স্টোর কিপার মহসিন কবিরকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় সিটি করপোরেশনে স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে কর্মরত ১৬ জন চিকিৎসককে নতুনভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে।

চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আখতার চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ’১০ জন ডাক্তার যদি কাজে যোগ দিতেন, তাহলে আমাদের এই সমস্যায় পড়তে হতো না। উদ্বোধনের পরও আমরা এক সপ্তাহ ধরে আইসোলেশন সেন্টার চালু করতে পারিনি, এটা দুঃখজনক। তবে নতুনভাবে আমরা ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছি। ট্রেনিংও শুরু হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) আমরা আইসোলেশন সেন্টারে খতমে কোরআন তেলাওয়াত করব। শনিবার ট্রেনিং শেষ হবে। ইনশাল্লাহ রোববার থেকে আমরা রোগী ভর্তি শুরু করব।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) এ বিষয়ে কথা হয় চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে। আইসোলেশন সেন্টারে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ১০ জন ডাক্তার ও একজন স্টোরকিপার কাজে যোগ না দেওয়ায় বিরক্ত প্রকাশ করেন তিনি। মেয়র বলেন, ‘করোনায় আক্রান্তদের সেবা প্রদানে তাদের অনীহা, শপথ ভঙ্গ ও পেশার প্রতি অবমাননা এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যহীনতার শামিল। দেশপ্রেমবর্জিত এ অনৈতিক আচরণের জন্য তাদের তাৎক্ষণিকভাবে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে নতুন উদ্যোগে ও সামর্থ্য নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। রোববার থেকে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু হবে।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন