বিজ্ঞাপন

গাড়িচালক হত্যা: সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ধরিয়ে দিল ‘খুনিদের’

September 8, 2020 | 7:05 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিংয়ে এক গাড়িচালককে খুনের ঘটনায় পাঁচ তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের ছিনতাইকারী বলে পুলিশ উল্লেখ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচ তরুণের সবাই মাদকসেবী। পিকআপ ভ্যান নিয়ে নগরীতে ঘুরে ঘুরে তারা ছিনতাই করে। সড়কে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কৌশলী এসব ছিনতাইকারী সিসি ক্যামেরায় নিজেদের শনাক্ত হওয়া এড়াতে লুকোচুরির আশ্রয় নিলেও শেষরক্ষা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন।

গ্রেফতার পাঁচজন হলেন- মো. রাব্বী (২২), আল আমিন (২২), মো. সোহেল (২৫), মো. বাবু ওরফে ছোট বাবু (২০) এবং কামাল হোসেন রনি (২০)।

গত ৪ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার চৌমুহুনী এলাকায় ছুরিকাঘাতে খুন হন প্রাইভেটকার চালক আইয়ূব আলী (৫০)। পুলিশ জানায়, তিনি ঢাকায় ভাগ্নের প্রাইভেটকার চালাতেন। চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজারে বোনের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন তিনি। ঘটনার রাতে লালখান বাজার থেকে রিকশায় করে বারিক বিল্ডিং মোড়ে যাওয়ার পথে ছিনতাইকারীরা তার পথরোধ করে ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে আহত হন তিনি। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার পর প্রথমে আইয়ূব আলীর পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। পরে সিআইডি ও পিবিআই টিম গিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এই ঘটনায় তার বোন আম্বিয়া বেগম বাদি হয়ে ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ পরিদর্শক জহির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনার পরই সড়কের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এতে পুরো ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সংরক্ষিত ছিল। ফুটেজে তিন যুবককে রিকশার গতিরোধ করতে দেখা গেছে। তারা আইয়ূবের কাছ থেকে ব্যাগ ছিনিয়ে নেন। এর আগে তাদের পিকআপ ভ্যানে করে ওই এলাকা অতিক্রম করতে দেখা গেছে। তিনজনকে শনাক্ত করে দুজনকে গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ব্যবহৃত পিকআপ, ছুরি ও ছিনিয়ে নেওয়া ব্যাগও উদ্ধার করা হয়েছে।’

ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার অভিযানে অংশ নেওয়া ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া সারাবাংলাকে জানান, নগরীর সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ি কামাল গেইট এলাকার একজনের কাছ থেকে পিকআপ ভ্যানটি তারা ভাড়া নেন। ঘটনার দিন তারা ছয়জন ছিলেন ওই গাড়িতে। গাড়ি চালাচ্ছিলেন ছোট বাবু। রনি ও রাব্বি ছিলেন কেবিনে চালকের পাশে। পেছনে খোলা অংশে দাঁড়িয়েছিলেন বাকি তিনজন। কামাল গেইট থেকে বের হয়ে কদমতলী, টাইগার পাস দেওয়ান হাট হয়ে চৌমুহুনি এসে আইয়ূব আলীকে টার্গেট করে। আল আমিন, সোহেল ও পলাতক তরুণ ছিনতাইয়ে অংশ নেন। তার কাছে থাকা কাপড়ের ব্যাগ, মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ছিনতাই করে পালানোর সময় আইয়ূব আলীর ডান পায়ের উরুতে আল আমিন ছুরিকাঘাত করে।’

বিজ্ঞাপন

একই পিকআপ ব্যবহার করে আরও দুটি ছিনতাইয়ের তথ্য তারা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসআই অর্ণব বড়ুয়া।

ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন জানান, গ্রেফতার পাঁচজনই মাদকসেবী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে তারা পিকআপ ভ্যান নিয়ে ছিনতাইয়ে নেমেছিল। ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তিনজনকে দেখে গেছে। বাকি তিনজন সিসি ক্যামেরা এড়াতে পিকআপের কেবিনে শুয়েছিল। ছিনতাইয়ের পর তারা চৌমুহনী থেকে কমার্স কলেজ সড়ক দিয়ে পশ্চিম মাদারবাড়ির দিকে যায়। সেখানে একটি গ্যারেজে পিকআপ ভ্যানটি রেখে দেয়। পরে সেটি ওই গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন