বিজ্ঞাপন

প্রাথমিক খুললে প্রয়োজনে একেক দিন একেক শ্রেণির ক্লাস

September 9, 2020 | 12:59 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির মধ্যে যদি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলতে হয়, সেক্ষেত্রে এসব বিদ্যালয় কিভাবে পরিচালনা করতে হবে— সে সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে যখনই স্কুল খুলে দেওয়া হোক না কেন, এর আগে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শ্রেণি পাঠদান শুরুর অন্তত ১৫ দিন আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, প্রয়োজনে বিদ্যালয়ে একেক দিনে একেক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীম আরার সই করা এক আদেশে নির্দেশিকার কথা বলা হয়েছে। সাতটি ধাপের ৩৩টি কার্যক্রম তুলে ধরা হয়েছে এই নির্দেশিকায়।

আরও পড়ুন- প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলতে প্রস্তুতির নির্দেশিকা জারি

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের কারণে প্রায় ছয় মাস হলো বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাবর্ষ শেষের দিকে চলে আসায় শিক্ষার্থীদের বাৎসরিক মূল্যায়ন, তাদের পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীতকরণের মতো বিষয়গুলো এখন রয়েছে আলোচনায়। এ কারণেই বিদ্যালয় খোলার বিষয়টিও রয়েছে আলোচনায়। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে স্কুল-কলেজ খোলার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া না গেলেও মঙ্গলবার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলতে হলে কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে— তার একটি নির্দেশিকা পাওয়া গেল।

বিজ্ঞাপন

শিফটিংয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বিবেচনা করে একাধিক পালা বা সপ্তাহের একেকদিন একেক শ্রেণির পাঠদানের ব্যবস্থা রেখে পরিকল্পনা করতে হবে। পাঠ পরিকল্পনায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ, শ্রেণিকক্ষ ও সর্বসাধারণ ব্যবহার করে এমন জায়গাসহ অন্যান্য জায়গার মেঝে, দরজা, সিঁড়ি, সিঁড়ির হাতল, বেঞ্চ ও যেসব বস্তু বার বার ব্যবহৃত হয়— তা অন্তত প্রতি শিফটে একবার করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

নির্দেশিকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে বলা হয়েছে, সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীকে বাধ্যতামুলকভাবে মাস্ক পরতে হবে। হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে কনুই ব্যবহার করা ভালো। বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আগেই সবার হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। হাত ধোয়ার সময় যেন জটলা তৈরি না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিটি বিদ্যালয়ে পানির ট্যাপের অবস্থান ও সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। যেখানে সম্ভব হবে, সেখানে পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

পরিচ্ছন্নতা ও শৌচকার্যের বিষয়ে বলা হয়েছে, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা বাথরুমের ব্যবস্থা রাখতে হবে। মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিদ্যালয় খোলার আগে শ্রেণিকক্ষ, আঙ্গিনা, শৌচাগার জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় সাবান ও জীবাণুনাশক পরিচ্ছন্নতা উপকরণ রাখতে হবে। একইসঙ্গে বিদ্যালয় খুললে প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনার আবর্জনা পরিষ্কার এবং সংরক্ষণের পাত্র জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। অসুস্থ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচার্রী এবং গর্ভবতীদের বিদ্যালয়ে আসতে না করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অভিভাবকেরা যেন অসুস্থ শিশুকে বিদ্যালয়ে না পাঠান। অসুস্থতাজনিত কারণে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী যেন মূল্যায়নে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা নেবে।

বিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধির তথ্য নির্দেশনা আকারে লিফলেট, ব্যানারসহ সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপক প্রচার করতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এসব তথ্য ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর ভাষা ছাড়াও ব্রেইল পদ্ধতিতেও প্রচার করতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা আছে, বিদ্যালয় খোলার আগে এসব প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। আর এসব বাস্তবায়নে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন