বিজ্ঞাপন

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চট্টগ্রামে যুবলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি

November 11, 2020 | 7:55 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পাল্টাপাল্টি সভা করেছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ। এক অংশের নেতৃত্বে ছিলেন নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু। আরেক অংশে ছিলেন চার যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম ও মাহবুবুল হক সুমন।

বিজ্ঞাপন

মহিউদ্দীন বাচ্চুর নেতৃত্বাধীন অংশটি বুধবার (১১ নভেম্বর) সকালে নগরীর কাজীর দেউড়িতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আলোচনা সভার আয়োজন করে, যাতে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। আর বাকি চার যুগ্ম আহ্বায়কের নেতৃত্বাধীন অংশটি বিকেলে নগরীর স্টেশন রোডে সৈকত কনভেনশন সেন্টারে আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রায় একবছর ধরে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের মধ্যে চলে আসা বিরোধ দৃশ্যমান হয় গত ২২ অক্টোবর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে। নগরীর দারুল ফজল মার্কেটে সংগঠনের কার্যালয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন চার যুগ্ম আহ্বায়ক। খবর পেয়ে আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু নিজের অনুসারী নেতাকর্মীদের নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন। এসময় পাল্টাপাল্টি স্লোগান ও উত্তেজনায় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করে তড়িঘড়ি করে চলে যান যুবলীগ নেতারা।

এরপর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতেও পাল্টাপাল্টি আয়োজন নিয়ে জানতে চাইলে মহিউদ্দীন বাচ্চু সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর পরামর্শে আমি নগর যুবলীগের সব নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিভিন্ন লেভেল থেকেও যোগাযোগ করা হয়েছে। এমনকি রেজিস্টার্ড ডাকযোগেও সব নেতার কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কয়েকজন আসেননি। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে ফরিদ মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আহ্বায়ক সাহেব (মহিউদ্দীন বাচ্চু) সাংগঠনিক কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা না মেনে আমাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এককভাবে প্রোগ্রাম দিয়েছেন। গত একবছর ধরে তিনি এভাবেই প্রোগ্রাম করছেন। এর ফলে নগর যুবলীগে একটি বিভক্তি তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি, আহ্বায়ক সাহেবের এই আচরণ দুর্ভাগ্যজনক।’

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলের আলোচনা সভায় মহিউদ্দীন বাচ্চু’র সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা পরিষদের মহাসচিব মো. ইউনুছ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মাহমুদুল হক, নগর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হাসান, দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পার্থসারথী চৌধুরী, নগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য সরওয়ার মোরশেদ কচি, হাফিজ উদ্দীন আনছারী, আবুল কালাম আবু, একরাম হোসেন, হেলাল উদ্দীন, শহীদুল ইসলাম মকবুল, কাজী মুজিব, রঞ্জিত দে, হাবিব উল্লাহ নাহিদ, নুরুল আনোয়ার, শহীদুল ইসলাম শামীম, সালেহ আহম্মেদ দিঘল, আব্দুর রাজ্জাক দুলাল, সাবের আহম্মেদ, আসহাব রসূল জাহেদ, নাছের তালুকদার, প্রবীর দাশ, খোকন চন্দ্র তাঁতী, ওয়াসিম উদ্দীন চৌধুরী, সনত বড়ুয়াসহ ওয়ার্ড-থানা পর্যায়ের নেতারা। নগর যুবলীগের সদস্য আকবর হোসেন, সাইফুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন বেলাল, শাখাওয়াত স্বপন ও আবু সাঈদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি।

সভায় নঈম উদ্দিন বলেন, ‘যুবলীগকে তার অতীতের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। এটাই যুবলীগের জন্য চ্যালেঞ্জ। এই সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মৌলভী ছৈয়দ বঙ্গবন্ধুর জন্য জীবন দিয়েছেন। গণমানুষের নেতা এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী, সুলতানুল কবির চৌধুরী, মোছলেম উদ্দিন আহমদ, কাজী ইনামুল হক দানু ও খালেকুজ্জামানদের মত নেতারা চট্টগ্রামে যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন। তাদের পথ অনুসরণ করে বর্তমান যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে নেতাকর্মীদের।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে সৈকত কনভেনশন হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকা। মাহবুবুল হক সুমনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ফরিদ মাহমুদ, দিদারুল আলম দিদার, আনোয়ার হোসেন আজাদ, লোকমান হাকিম, বেলায়েত হোসেন বেলাল, মাহাবুব আলম আজাদ, রেজাউল করিম কায়সার, নেছার আহমেদ, আব্দুল আউয়াল, ওয়াহিদ হাসান, শেখ নাছির আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন দেলু, মোজাম্মেল হোসেন নান্টু, তারেক সোলতান, আব্দুল হাই, মাহবুবুর রহমান মাহফুজ, সাজ্জাদ আলি বাহাদুর, কাজী রাজিশ ইমরান, কাজলপ্রিয় বড়ুয়া, মুজিবুর রহমান মুজিব, শাকিল হারুন, আলাউদ্দিন আলো, হোসেন সরওয়ার্দী, বখতেয়ার ফারুক, সাহেদুল ইসলাম শাহেদ, ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি-সম্পাদকদের মধ্যে মোহাম্মদ ইকবাল,মঈনুল ইসলাম, শাহিন সরওয়ার, মোহাম্মদ হোসেন।

সভায় যুবলীগ নেতারা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইমেজ সংকটে পরা যুবলীগকে নতুন করে ঢেলে সাজাচ্ছেন। যাদের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল নেত্রী তাদেরকে সরিয়ে দিয়েছেন। পদ-পদবি ব্যবহার করে যারা অপকর্মে লিপ্ত তাদের বিষয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। যুবলীগের ইমেজ নষ্ট করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সৎ মেধাবী, ত্যাগী-পরিক্ষিত এবং পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীদের যুবলীগে সমাবেত করা হবে। তাই পরিচ্ছন্ন ইমেজে যুবলীগকে গড়ে তুলতে হবে।’

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন