বিজ্ঞাপন

‘করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে’

January 7, 2021 | 7:59 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। শুধু আমাদের দেশেই নয়, গোটা বিশ্বেই একই পরিস্থিতি। তবে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ নেই। অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের চলতি মেয়াদের দুই বছর পূর্তি ও তৃতীয় বছরে পদার্পণ উপলক্ষে তিনি এ ভাষণ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে অনলাইনে ও স্কুল পর্যায়ের জন্য টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হবে। বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই বিতরণ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দেশের গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের গ্রামগুলো বরাবরই উন্নয়ন ভাবনার বাইরে ছিল। আমরাই প্রথম গ্রামোন্নয়নকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করি। ২০১৮ সালে আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে বিষটি অন্তর্ভুক্ত করে ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’— এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার করি।

বিজ্ঞাপন

এর অংশ হিসেবে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, ২০০৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৪৫৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক ৪ বা তার বেশি লেনে উন্নীত করা হয়েছে। আরও ৬৬১ কিলোমিটার মহাসড়ক চার বা তার চেয়ে বেশি লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। ঢাকায় বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সাল নাগাদ শেষ হবে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৯ থেকে ২০২০ পর্যন্ত ৪৫১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ এবং ১ হাজার ১৮১ কিলোমিটার রেলপথ পুনর্বাসন করা হয়েছে। ৪২৮টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে যমুনা নদীর ওপর ৪ দশমিক ৮ কিলোমটির দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ক্যারেজ ও মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ করা হয়েছে ১ হাজার ৪০টি। এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১৩৭টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে।

আকাশপথে যোগাযোগ ব্যবস্থাতেও সরকারের গৃহীত কার্যক্রম তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি জানান, বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিমানবহরে ১২টি নতুন অত্যাধুনিক বোয়িং ও ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। গত মাসে একটি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। চলতি মাসে আরও দুইটি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ সংযোজিত হবে।

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আমাদের স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ ও গুণগত মানোন্নয়নের ফলে মানুষের গড় আয়ু ২০১৯-২০ বছরে বেড়ে হয়েছে ৭২ দশমিক ৬ বছর। ৫-বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৮ ও অনূর্ধ্ব ১ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হার ১৫-তে নেমে এসেছে। মাতৃমৃত্যু হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি লাখে ১৬৫ জনে।

বিজ্ঞাপন

করোনাকালে ডিজিটাল প্রযুক্তি ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের এই মহামারির সময়ে যখন মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে, তখন ডিজিটাল প্রযুক্তি যোগাযোগের এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের একমাত্র মাধ্যম হিসেবে পরিগণিত হয়। আমাদের সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী উদ্যোগের ফলেই এই ক্রান্তিকালে ডিজিটাল প্রযুক্তি ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। দেশের ১৮ হাজার ৪৩৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৩ হাজার ৮০০ ইউনিয়নে ফাইবার অপটিক ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সময় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১১ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। অনলাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেন সুবিধা গ্রহণ করে সাধারণ মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়েছেন। আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর মাধ্যমে দেশের সবগুলো টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার ছাড়াও প্রত্যন্ত ৩১টি দ্বীপে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি ব্যাংক ও সেনাবাহিনী স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১-এর সেবা গ্রহণ করছে।

সারাবাংলা/এনআর/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন