বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীরকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড

March 12, 2021 | 7:09 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুর্নীতি দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১০ কর্মকর্তার উইং চাওয়া ওএসডি অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর মিলনকে তিরস্কার করেছে সরকার। গত (১ মার্চ) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আদেশে গণমাধ্যমে সরকারের জন্য ‘অস্বস্তিকর’ বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ায় তাকে সরকারি কর্মচারী (আপিল ও শৃঙ্খলা) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী লঘুদণ্ড ‘তিরস্কার’ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মাহবুব কবীর মিলনকে লঘুদণ্ড দেওয়া হলেও নিয়ম অনুযায়ী পদায়ন হবেন এবং তাকে পোস্টিং করা হবে।

‘তিন মাসে দুর্নীতি দূর করতে ১০ কর্মকর্তার উইং চান অতিরিক্ত সচিব’- রেলপথ মন্ত্রণালয়ে থাকাকালে তাকে উদ্ধৃতি দিয়ে খবর প্রকাশ হয় দেশের একটি অনলাইন গণমাধ্যমে।

এ বক্তব্যের জন্য গত বছরের ছয় আগস্ট তাকে ওএসডি করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। সেই মামলায় দণ্ড হিসেবে তাকে ‘তিরস্কার’ করে সরকার।

বিজ্ঞাপন

প্রশাসনের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর। নানা কারণে তিনি বারবার আলোচনায় এসেছেন। এক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব থাকা ও বিভিন্ন কাজের জন্য আলোচিত হয়েছেন তিনি।

মাহবুব কবীর সবশেষ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। রেল বিভাগের নানা অনিয়ম দুর্নীতি দূর করতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

গত ৬ আগস্ট তাকে দায়িত্ব থেকে ওএসডি করে রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। সেই মামলায় দণ্ড হিসেবে তাকে তিরস্কার করে সরকার। সম্প্রতি জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আদেশে বলা হয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুব কবীরের উদ্ধৃতি দিয়ে গত ২৯ জুলাই একটি অনলাইন পত্রিকায় ‘তিনমাসে দুর্নীতি দূর করতে ১০ কর্মকর্তার উইং চান অতিরিক্ত সচিব’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত ও প্রকৃত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র ছাড়া পত্রিকায় প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে তার মনগড়া, ভিত্তিহীন ও সরকারের জন্য অস্বস্তিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়া সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল হওয়ায় এবং তিনি সরকারের অতিরিক্ত সচিব পদের কর্মকর্তা বিধায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদন করে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়।

এতে বলা হয়, অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রজু করা বিভাগীয় মামলায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত বছরের ৫ নভেম্বর ১৮৭ নম্বর স্মারকে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠানোর মাধ্যমে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হলে তিনি ১৫ নভেম্বর লিখিত জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানি প্রার্থনা করেন। বিভাগীয় মামলায় গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ব্যক্তিগত শুনানিতে মামলার অভিযোগ, উভয় পক্ষের বক্তব্য, দাখিল করা কাগজপত্র ও প্রাসঙ্গিক সব বিষয়ে পর্যালোচনা শেষে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, বিভাগীয় মামলায় আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক প্রশাসনিক বিষয়টি বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৪ (ক) মোতাবেক তাকে তিরস্কার নামের লঘুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তাতে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে তাকে লঘুদণ্ড দিয়ে আদেশ জারি করে জনপ্রশাসণ মন্ত্রণালয়।

উল্লেখ্য, মাহবুব কবীর এর আগে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অল্প সময়ের জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। ওই সময়ে তিনি ভেজাল ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে আলোচিত হন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন