বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে শুক্রবার ঢাকা আসছেন জন কেরি

April 8, 2021 | 6:23 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জলবায়ুবিষয়ক একটি সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতে শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ঝটিকা সফরে ঢাকা আসছেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। এই সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি নির্ধারণী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম প্রধান ইস্যু হচ্ছে, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলা করে করোনাকালে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন নতুন খাত উদ্ভাবন করা। আগামী দিনের এই জলবায়ু লড়াইয়ে জয়ী হতে বাংলাদেশকে পাশে চায় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি পশ্চিমা এই দেশটির উদ্যোগে চলমান ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল বাস্তবায়নেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশাসনকে পাশে চায় বাইডেন প্রশাসন। এছাড়া গত কয়েক বছর ধরে প্রতিরক্ষাসম্পর্কিত বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।

মূলত এসব কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জলবায়ুবিষয়ক একটি সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানাতে সশরীরে ঝটিকা সফরে ঢাকা আসছেন জন কেরি। আগামী ২৩ ও ২৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ক্লাইমেট লিডারস সামিট নামে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনটি হবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট গত ৩১ মার্চ জানিয়েছে, আসন্ন ক্লাইমেট লিডারস সামিট এবং কপ২৬ (বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন) সম্মেলনে খুব ভালো অগ্রগতি নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি ১ থেকে ৯ এপ্রিল আবুধাবি, নয়াদিল্লি এবং ঢাকা সফর করবেন।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাছে জানতে চাইলে মহাসাগর, আন্তর্জাতিক পরিবেশ এবং বৈজ্ঞানিক সম্পর্ক বিষয়ক ব্যুরোর পাবলিক এফেয়ারস অফিসার জেমস দিউয়ে সারাবাংলাকে বলেন, ‘জলবায়ুজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় এই বছর আমরা খুব ভালো অগ্রগতি করতে চাই, যা আমাদের জন্য জরুরি। রাষ্ট্রপতির বিশেষ দূত জন কেরি এ বিষয়ে একাধিক দেশ ভ্রমণে বের হওয়ার কারণ হচ্ছে, আমরা যে অগ্রগতি করতে চাই, তা সমন্বয়ের জন্য শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের প্রয়োজন রয়েছে। যাতে আমরা সবাই মিলে ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনতে পারি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্যে যাতে সবাই মিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখে, বিশেষ দূত জন কেরির এই সফর তা নিশ্চিতের চেষ্টা করবে। এই সফরে কেরি এবং যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জনস্বাস্থ্য আইন এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তাও পর্যবেক্ষণ করবেন। তবে এই সফরে তারা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি চলবেন।’

জেমস দিউয়ে বলেন, ‘যেহেতু এটা করোনাকাল তাই এই সফরে জন কেরি খুবই সতর্ক থাকবেন। এই সফরে যাদের সঙ্গে তার বৈঠক হবে তাদের সঙ্গে আগে থেকেই কথা বলে বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে।’

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল, চীনের নেতৃত্বে রোড অ্যান্ড বেল্ট উদ্যোগসহ একাধিক বৈশ্বিক উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে। মূলত বৈশ্বিক শক্তি পশ্চিম থেকে পূর্বে স্থানান্তরের আভাস দেখা যাচ্ছে। ল্যয়ি ইনস্টিটিউটের (অস্ট্রেলিয়ানভিত্তিক বৈশ্বিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক) প্রকাশিত এশিয়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ৮১ দশমিক ৬ পয়েন্ট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এক নম্বরে, তারপেরই চীনের অবস্থান, চীনের পয়েন্ট হচ্ছে ৭৬ দশমিক ১। লোয়ে ইনস্টিটিউটের ওই রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনকে সুপার পাওয়ার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বিশ্বের ২৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৮তম শক্তির দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তার মানে বাংলাদেশের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। ওয়াশিংটন, বেইজিং, টোকিওসহ বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলো এখন বাংলাদেশকে পাশে চায়। তাই জন কেরির এই সফর অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিনকেন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে এন্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ট অংশীদার।

দুই দেশের মধ্যে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বৈঠকের উদাহরণ টেনে এন্টনি ব্লিনকেন বলেন, ‘বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি এবং বাণিজ্যিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে কাজ করেছে। দুই দেশের মধ্যে নিরাপদ বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে নীতি সহায়তা প্রত্যাশা করে।’

সারাবাংলা/জেআইএল/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন