বিজ্ঞাপন

করোনার মধ্যে কর্মবিরতিতে চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন ডাক্তাররা

April 28, 2021 | 7:31 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মহামারি করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মবিরতি শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির জেরে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই সকাল থেকে তাদের অনেকে কাজে যোগ দেননি। এ নিয়ে হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরও সুরাহা হয়নি।

বিজ্ঞাপন

তবে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা সেবায় কোনো সমস্যা হবে না। এরপরও দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে আকস্মিক কর্মবিরতির কারণে চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা সেবায় কিছুটা প্রভাব পড়ে বলে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।

এর আগে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে চমেক ক্যাম্পাসে ও ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতি ও মারামারি হয়। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। আহতদের মধ্যে দুই জন ইন্টার্ন চিকিৎসকও রয়েছেন। সংঘাতে জড়িত দুই গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বিজ্ঞাপন

পূর্বঘোষণা ছাড়া কর্মবিরতি শুরু করা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অধিকাংশই সাবেক মেয়র নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তবে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কেউ কেউ তাদের এই কর্মবিরতিতে সাড়া দেননি বলে জানা গেছে।

ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) আহ্বায়ক মো. ওসমান গণি বলেন, ‘বহিরাগতদের নিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রীর পক্ষের ছাত্ররা আমাদের ওপর হামলা করে আমাদের ‍দু’জনকে আহত করেছে। এর প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে আমরা কাজে যোগ দিইনি। অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলবে।’

তবে করোনা মহামারির কারণে অন্যান্য ওয়ার্ডে রোগী কম থাকায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি তেমন প্রভাব ফেলেনি বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন কবীর। তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ সময়ে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তিন হাজারের বেশি রোগী থাকে। কিন্তু বুধবার রোগী ভর্তি ছিল এক হাজার চারশ’র মতো, যার মধ্যে করোনার রোগীও আছেন।

বিজ্ঞাপন

এস এম হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘হাসপাতালের ওয়ার্ডে সিনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও সেবা দেন। তবে এখন যেহেতু রোগী কম, ইন্টার্নরা না থাকলেও খুব বেশি সমস্যা হবে না। অন্যান্য ডাক্তাররা স্বাভাবিক সেবা দিয়ে যাবেন। এতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।’

এদিকে সংঘাতে জড়িত বিবদমান দু’পক্ষের সঙ্গে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। তবে বৈঠকের পরও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন।

বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে কিছু ছাত্রের মারামারি হয়েছে। কিছু বহিরাগতও এসেছিল শুনেছি। এটা দুঃখজনক এবং অনভিপ্রেত। এত বড় হাসপাতাল এলাকায় বহিরাগত কে কিভাবে ঢুকছে সেটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা তো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ ঘটনার পর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। যদিও আমাদের লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়নি। এরপরও আমরা সমস্যা সমাধান করার জন্য বৈঠকে বসেছিলাম। , উভয়পক্ষকে ডেকেছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উনারা কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে কাজ শুরু করবেন। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেটা দেখে বহিরাগতদের শনাক্ত করা যাবে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ছাত্রাবাসে কোনো ছাত্র কিংবা বহিরাগত এলাউ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছাত্ররা থাকবে তাদের হোস্টেলে। আশা করছি খুব দ্রুত সমাধান হবে।’

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য আমরা ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি।’

সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন