বিজ্ঞাপন

ওষুধ কিনতে শহরে করোনা রোগী

June 16, 2021 | 10:40 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

মেহেরপুর: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় মুজিবনগরের আনন্দবাস এবং গাংনীর সীমান্ত এলাকার তেতুলবাড়িয়া ও হিন্দা গ্রামে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। তবে এ লকডাইন মানছেন কেউ। করোনা সংক্রমণ নিয়ে চায়ের দোকানে আড্ডা, বাজারে যাতায়াতসহ নানা কাজে ব্যাস্ত গ্রামের লোকজন। আবার যারা করোনা সন্দেহে নমুনা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছিলেন তারাও হোম আইসোলেশনে থাকছেন না। ফলে জ্যামিতিক হারে বাড়ছে করোনা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি গ্রাম দুটিকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে লকডাউন ঘোষণা করে। পরে বিকেলে মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলিশ বাহিনীর একটি দলকে সঙ্গে নিয়ে লাল পতাকা টাঙিয়ে ও রাস্তায় বাঁশের বেড়া দেন।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামে ১৮ জন, হিন্দা গ্রামে ২৩ জন করোনায় আক্রান্ত। গত ১২ জুন ওই এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প করে নমুনা সংগ্রহ করলে ২৯ জনের মধ্যে ১৬ জন করোনা পজেটিভ হয়। পরদিন থেকে কেউ আর নমুনা দিতে আসেনি।

এদিকে করোনা পজেটিভ ব্যক্তিরা ঘরের মধ্যে থাকছেন না। বাড়ির পাশে মাচায় বা চায়ের দোকনে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। তাদের আত্মীয়রাও অন্য রোগীর মতো তাদের দেখতে আসছেন। অনেক করোনা রোগী বাজারে ওষুধ কেনার জন্য আসছেন। আবার কেউ কেউ গরুর খাবার সংগ্রহের জন্য ক্ষেত-খামারে যাচ্ছেন। ফলে সংক্রমণের হার বেড়ে চলেছে। এ মুহূর্তে নমুনা পরীক্ষা করলে শতকরা ৮০ জনের করোনা পজেটিভ হবে বলেও মন্তব্য এলাকাবাসীর।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে হিন্দা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, করোনা আক্রান্ত ইউনুস আলীর ছেলে রিপন আলী বাড়িতে নেই। তিনি ওষুধ কিনতে গাংনী বাজারে এসেছেন। ইউনুস আলী অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন তাদের খোঁজখবর নেন না। বাধ্য হয়ে তাদের অন্য চিকিৎসক ও ফার্মেসিতে যেতে হচ্ছে।

এদিকে দিনদিন করোনার প্রকোপ বাড়লেও সতর্কতামূলক কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো না। স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের কোনো প্রচার প্রচারণা বা সতর্ক বার্তা নেই। অন্যদিকে করোনার কারণে হাসপাতালের বিশেষ আইসোলেশনও নেই। গত বছর করোনার সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনে ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি কক্ষ আইসোলেশন হিসেবে ব্যবহৃত হলেও গত তিনমাস আগে সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। পুরাতন ভবনটি সংস্কার করার কারণে আইসোলেশন সেবাটি বন্ধ। অন্যদিকে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় এ উপজেলার জন্য বরাদ্দ তিন লাখ টাকার কোনো কাজ না করায় তা ফেরত দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরে করোনার জন্য বরাদ্দ দেওয়া টাকা আজও আসেনি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগ।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. এম কে রেজা জানান, এলাকার লোকজনের অভিযোগ সঠিক নয়। হিন্দা ও করমদি এলাকার করোনা আক্রান্তদের স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। তাছাড়া জরুরি প্রয়োজনের জন্যও মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছে। আইসোলেশন ওয়ার্ড চালুর জন্য হাসপাতাল বাউন্ডারির অন্য ভবনে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মৌসুমি খানম জানান, দুটি গ্রামে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। নিয়মিত পরিদর্শন করে খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে আক্রান্তদের বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। অনেকেই বুঝতে না পেরে ঘরের বাইরে বেরিয়েছেন তাদেরকে বোঝানো হয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন