বিজ্ঞাপন

আহমদ শফীর স্থলাভিষিক্ত হয়ে চলে গেলেন আব্দুস সালামও

September 8, 2021 | 5:06 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক নির্বাচিত হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মারা গেছেন ওই মাদরাসার প্রবীণ শিক্ষক আব্দুস সালাম চাটগামী। দেশের কওমি অঙ্গনের প্রধানতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই মাদরাসার মহাপরিচালক হিসেবে ছিলেন প্রয়াত শাহ আহমদ শফী। তার স্থলাভিষিক্ত হওয়া আব্দুস সালামের মৃত্যুর পর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ঘোষণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘসময় ধরে মাদরাসা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শাহ আহমদ শফী এবং পরবর্তীতে জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর শূন্যপদ পূরণ করতে বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বৈঠকে বসে মাদরাসার শূরা কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন শূরা কমিটির সভাপতি মহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

শূরা কমিটির সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন নানুপুরী সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে আব্দুস সালাম চাটগামীকে মহাপরিচালক, মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে সহকারী পরিচালক এবং শেখ আহমদকে প্রধান শায়খুল হাদিস নির্বাচিত করা হয়। সকাল ৯টার দিকে বৈঠক শুরুর পর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। আব্দুস সালাম শুরু থেকেই অসুস্থবোধ করছিলেন। পরে তাকে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আবু সৈয়দ মো. ইমতিয়াজ হোসাইন সারাবাংলাকে বলেন, ‘উনাকে (আব্দুস সালাম) মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। রোগীর হিস্ট্রি জানা সম্ভব হয়নি। তবে উনার বয়স হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

৮০ বছর বয়সী আব্দুস সালামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায়। তিনি আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসায় দীর্ঘকাল ধরে শিক্ষকতা করে আসছিলেন।

আব্দুস সালামের মৃত্যুর খবর পৌঁছার পর শূরা কমিটি আবার বৈঠকে বসে মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ঘোষণা করে বলে জানিয়েছেন শূরা কমিটির সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন নানুপুরী।

প্রায় ৩৪ বছর ধরে আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসায় মহাপরিচালক পদে ছিলেন শাহ আহমদ শফী। শেষদিকে এসে মাদরাসার কর্তৃত্ব নিয়ে তৈরি হওয়া দ্বন্দ্বের জেরে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনদিন আহমদ শফীর বিরুদ্ধে হাটহাজারী মাদরাসায় ছাত্র বিক্ষোভ হয়। মাদরাসার অভ্যন্তরে ভাংচুর হয়। বেশ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়, যারা ছিলেন শফীর অনুসারী। এমনকি শফীর কক্ষও ভাংচুর করা হয়। বিক্ষোভের মধ্যে একপর্যায়ে ১৭ সেপ্টেম্বর শাহ আহমদ শফী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। বিক্ষোভের মধ্যেই ১৮ সেপ্টেম্বর প্রায় শতবর্ষী শাহ আহমদ শফী মারা যান।

বিজ্ঞাপন

এরপর শফীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাদরাসার সহকারি পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরীর কর্তৃত্বে চলছিল এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। গত ১৯ আগস্ট তিনিও মারা যান।

২০১০ সালে কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আত্মপ্রকাশ হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন শফী ও বাবুনগরী। ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের দাবি তুলে ২০১৩ সালের ৫ মে সারাদেশ থেকে লংমার্চ নিয়ে ঢাকার শাপলা চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেওয়া এবং ব্যাপক সহিংতার পর সংগঠনটির ব্যাপক পরিচিতি মেলে। একইভাবে হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসাও প্রশাসনসহ সর্বস্তরের আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে।

সারাবাংলা/আরডি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন