বিজ্ঞাপন

‘দুর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে চির আপন হয়েছে ভারত’

November 19, 2021 | 5:57 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবিস্মরণীয় অবদানের কথা স্মরণ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব কোনো চুক্তির মধ্য দিয়ে হয়নি। দুর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে ভারত আমাদের চির আপন হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ১০৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেয়র একথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। পাকিস্তানিরা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে ভীতু বাঙালি বলত। সেই ভীতু বাঙালিই বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে চরম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। সেদিন বাঙালির কাছে অস্ত্র ছিল না, তবে মনোবল ছিল অটুট। মাত্র নয় মাসে বাঙালি স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিল। সেদিন বাঙালির সেই চেতনাকে শাণিত করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তিনি যদি এক কোটিরও বেশি বাঙ্গালিকে আশ্রয় না দিতেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ না দিতেন, প্রবাসী সরকার গঠনের সুযোগ করে না দিতেন, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আরও অনেক বেশি রক্ত দিতে হতো।’

শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা নয় স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে ইন্দিরা গান্ধী কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী উদ্যোগ না নিলে আমরা হয়ত আমাদের মহান নেতাকে ফেরত পেতাম না।’

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে ভারতের সহকারি হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। শুরু করেছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। কোটি মানুষ প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। ইন্দিরা সরকার সেদিন তাদের খাদ্য ও আশ্রয় দেয়, জীবনের নিরাপত্তা দেয়। কোলকাতায় অস্থায়ী সরকারের কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ করে দেন। ইন্দিরা গান্ধীর অনুপ্রেরণায় চালু হয় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনের উদ্যোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী দিল্লিতে বাংলাদেশের পক্ষে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স আয়োজন করেছিলেন। এই সম্মেলনে ৮০ দেশের ৭০০ জনপ্রতিনিধি অংশ নেয়। এভাবে বিশ্ব জনমত সেদিন বাংলাদেশের পক্ষে এসেছিল। তিনি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য বিভিন্ন দেশে চিঠি দেন। এভাবে সকল সংকট মোকাবিলা করে ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে স্বীকৃতি দেন বাংলাদেশকে।’

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস চর্চায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ইন্দিরা গান্ধী কর্নার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। চট্টগ্রাম শহরেও একটি ইন্দিরা গান্ধী স্কয়ার স্থাপনের জন্য আমি মেয়রকে অনুরোধ করছি।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজের সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন কাজী, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম।

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন