বিজ্ঞাপন

রাবিতে অফিসারদের হাতেও প্রক্টরিয়াল ক্ষমতা

December 23, 2021 | 9:26 pm

রাবি করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি এমনকি অফিসাররাও যে কোনো শিক্ষার্থীকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে নিজ বিবেচনায় জরিমানা ও শাস্তি দিতে পারবেন।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, ১৯ ডিসেম্বর তিয়াত্তরের অধ্যাদেশ থেকে ২৫টি ধারাকে উৎস হিসেবে উল্লেখ করে ১৭ নির্দেশনা জারি করে আবাসিক হলগুলোসহ বিভিন্ন দফতরে নোটিশ আকারে প্রকাশ করে ব্যাপক প্রচার করা হয়।

কিন্তু, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে বিধিবদ্ধ আইনের আলোকে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নিয়ম-শৃঙ্খলা’ শিরোনামে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে যেসব নিয়মশৃঙ্খলার কথা বলা হয়েছে সে ধরনের কিছুই অধ্যাদেশে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, এসব নিয়ম কানুনের উল্লেখ আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে।

অধ্যাদেশ আর ক্যালেন্ডারের মধ্যে পার্থক্য আছে উল্লেখ করে রাবি সিন্ডিকেট সদস্য এবং আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগর বলেন, অধ্যাদেশ রাষ্ট্রপতির সই করা আইন আর ক্যালেন্ডার প্রশাসনের করা আলাদা কিছু নিয়ম।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে নেই এমন কিছু ধারা অধ্যাদেশ হিসেবে চালিয়ে নোটিশ জারি করার বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর লিয়াকত আলী বলেন, ‘আচ্ছা, ঠিক আছে। সেটা আমি চেক করে দেখবো। এটা রেডি করা ছিল, আমার নিজস্ব লেখা কোনো কিছু না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই এটা আছে।’

‘বিধিবিধান আছে শিক্ষার্থীদের জন্যই, এসব তাদের জানা থাকা দরকার, আমরা পালন করি না করি সেটা ভিন্ন বিষয়’, বলেন রাবি প্রক্টর।

এদিকে, এই নোটিশকে এক পাক্ষিকভাবে ভয় দেখিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের চাপে রাখার হাতিয়ার উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়নের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মিটুন চন্দ্র মোহন্ত বলেন, যদি ৭৩ এর অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা হয় তবে রাকসু নির্বাচন দেওয়া হোক। হলগুলো থেকে বহিরাগতদের বের করে বৈধ সিট নিশ্চিত করা হোক। সবকিছুই চলবে অধ্যাদেশবিরোধী অথচ ছাত্রদের বেলায় অধ্যাদেশ।

বিজ্ঞাপন

এ নোটিশের কারণে নবীন শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাবে। বিষয়টা এক রকম মানসিক চাপের ভেতরে রেখে জিম্মি করার মতো, বলেন মিটুন চন্দ্র মোহন্ত।

অন্যদিকে, এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ওই নোটিশে বলা হয়েছে, প্রক্টরিয়াল বডির ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসসহ হলের কমন রুম ও ক্যান্টিনেও থাকবে, রাতের খাবারের পর হলে প্রাধ্যক্ষের ইচ্ছেমতো সময়ে রোল কল হবে, এসময় অবশ্যই শিক্ষার্থীদের নিজ কক্ষে থাকতে হবে।

এছাড়াও, চলাচলের নিয়ম না মানলে প্রক্টর যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন উল্লেখ করা হলেও চলাচলের নিয়মগুলো কী সে ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় ও হল ছাত্র সংসদ, বিভাগীয় সমিতি ছাড়া আর কোনো সংগঠন করতে পারবে না; অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মেস বদল করতে প্রাধ্যক্ষের অনুমতি লাগবে; আবাসিক শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হলে অবস্থান আবশ্যক করার কথা ওই নোটিশে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, এসব নির্দেশনাকে সেকেলে, কঠোর এবং শিক্ষার্থীবান্ধব নয় বলে অভিহিত করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রনেতা এবং অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন