বিজ্ঞাপন

শৈশবের স্মৃতিতে আঁকা মানচিত্রে মায়ের কাছে ছেলে

January 2, 2022 | 12:28 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রতিবেশি অপহরণকারীর খপ্পরে মাত্র চার বছর বয়সে নিজের গ্রাম ও মাকে হারান চীনের যুবক লি জিংওয়েই। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ৩ দশক। অবশেষে নিজের স্মৃতি থেকে আঁকা মানচিত্রের মাধ্যমে খুঁজে পেলেন জন্মদাতা মা ও নিজ জন্মভূমিকে। খবর বিবিসি।

বিজ্ঞাপন

লি জিংওয়েই’কে লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে মানব পাচারকারী একটি চক্রের কাছে বিক্রি করে দেন ওই প্রতিবেশি। ঘটনার ৩০ বছর পরে গত ২৪ ডিসেম্বর ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ডুইন’এ নিজের হাতে আঁকা মানচিত্রটি শেয়ার করেন লি। আর ওই মানচিত্রর সঙ্গে একটি গ্রামের মিল খুঁজে পায় পুলিশ, যেখানে এক মা তার ছেলে হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। পরে গত শনিবার ডিএনএ টেস্টের পর পুনরায় একত্রিত হয় মা-ছেলে।

৩০ বছর পর মা-ছেলের একত্রিত হওয়ার দৃশ্য ধারণ করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, চেহারা শনাক্ত করার জন্য লি জিংওয়েই তার মায়ের মুখে থাকা করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য পরিহিত মাস্কটি সরিয়ে দিচ্ছেন। এরপর মাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। এ সময় দু’জন আবেগে ভেঙে পড়েন।

লি জিংওয়েই’র শৈশব স্মৃতি থেকে আঁকা মানচিত্র, ছবি: বিবিসি

লি জিংওয়েই’র শৈশব স্মৃতি থেকে আঁকা মানচিত্র, ছবি: বিবিসি

ডুইন’র এক পোস্টে লি জিংওয়েই লিখেছেন, ‘দীর্ঘ ৩৩ বছরের অপেক্ষা, অসংখ্য রাতের আকুল আকাঙ্ক্ষা এবং অবশেষে স্মৃতি থেকে আঁকা মানচিত্র, এর ১৩ দিন পর মুক্তির সেই অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আপনাদের ধন্যবাদ, যারা আমার পরিরারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত করার জন্য সহযোগিতা করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে ১৯৮৯ সালে লি জিংওয়েই’কে চীনের ইউনান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ঝাওটং’র কাছে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে ওই শহর থেকে প্রায় এক হাজার ৮০০ কিলোমিটার দূরে বসবাসকারী একটি পরিবারের কাছে তাকে বিক্রি করা হয়েছিল।

লি জিংওয়েই বর্তমানে দেশটির দক্ষিণে গুয়াংডং প্রদেশে বসবাস করেন। দত্তক পিতামাতার কাছে তার আসল পরিচয়ের বিষয়ে জানতে চেয়েও কোনো ফল পাননি তিনি। এছাড়াও ডিএনএ’র তথ্যভাণ্ডারে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি তার। তাই ইনন্টারনেটের মাধ্যমে নিজের মাকে খুঁজার চিন্তা করেন লি।

এক ভিডিওতে লি জিংওয়েই বলেন, ‘আমি একজন শিশু যে তার বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছি। ১৯৮৯ সালে একজন প্রতিবেশী আমাকে হেনানে নিয়ে গিয়েছিল, যখন আমার বয়স ছিল প্রায় চার বছর।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘এটি আমার বাড়ির এলাকার একটি মানচিত্র, যা আমি স্মৃতি থেকে এঁকেছি। আমি গ্রামের একটি মোটামুটি একটি চিত্র মনে রেখেছি। যেখানে বিল্ডিং, স্কুল, বাঁশের বন এবং একটি পুকুর রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, চীনে শিশু অপহরণের বিষয়টি নতুন নয়। সেখানকার সমাজে একটি পুত্র সন্তান থাকাকে অনেক মূল্য দেওয়া হয়। দেশটিতে ছোট শিশুদের অপহরণ করে পাচারকারী চক্ররা অন্য পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেয়ে। এক হিসেবে ২০১৫ সালে দেশটিতে ২০ হাজার শিশুকে অপহরণ করা হয়েছিল।

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন