বিজ্ঞাপন

‘প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে বসে থাকলে হবে না, মাঠে ছড়িয়ে দিতে হবে’

January 24, 2022 | 6:47 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে বসে না থেকে তা দ্রুত মাঠে ছড়িয়ে দিয়ে কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করতে বিজ্ঞানী, গবেষক, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সম্প্রতি ধানসহ বিভিন্ন ফসলের অনেক উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে। ব্রি উদ্ভাবিত ৮৯ ও ৯২ বোরো জাতের ধানের উৎপাদন প্রতি শতাংশে প্রায় ১ মণ। বিনা-১১ আমনের স্বল্পজীবনকালের ধান উদ্ভাবন করেছে। ফলে আমন ও বোরো মৌসুমের মাঝের সময়ে সরিষা আবাদ সম্ভব হচ্ছে, এটি একটি অতিরিক্ত ফসল ও নতুন শস্যবিন্যাস। লবণাক্তসহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন হয়েছে। উপকূলে ২০ লাখ হেক্টর লবণাক্ত জমি রয়েছে। সেখানে লবণাক্তসহিষ্ণু ধানের চাষ করে বছরে দুইটি ফসল আবাদ করা সম্ভব।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে বিএআরসির অধীন এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় উদ্ভাবিত প্রযুক্তি যাচাই কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ক্র্যাশ প্রোগ্রাম বা সময়াবদ্ধ সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে এসব জাত ও প্রযুক্তিকে মাঠে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। বলেন, আগামী বোরো, আউশ, আমন মৌসুমে দেশের কোথায়, কতটুকু জমিতে আবাদ করতে চাই দ্রুত তা সুনির্দিষ্ট করতে হবে। আমরা এবার বোরোতে ব্রিধান ৮৯ ও ৯২ এবং আমনে বিনা-১১ দেশের কৃষকেরা যা উৎপাদন করবে সবটুকু বীজ হিসেবে কিনে নেব, যেন বীজ সংকট না হয়। প্রয়োজনে নতুন জাত ও শস্যবিন্যাস গ্রহণকারী চাষিদেরকে বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হবে, সারের দাম আরও কমিয়ে দেওয়া হবে। যেভাবে সম্ভব, আপনারা প্রযুক্তিকে কৃষকের কাছে নিয়ে যান ও কৃষকদের উৎসাহিত করুন।

বিজ্ঞাপন

ধান উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, এ বছর দেশে চালের রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। বর্তমানে চালের সরকারি মজুতও সর্বকালের সর্বোচ্চ। তারপরও চালের দাম বাড়ছে, বিশেষ করে সরু চালের দাম। খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে। অন্যদিকে দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবছর ২২-২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। অ্যানিমেল ফিড হিসেবেও চালের কিছু ব্যবহার হচ্ছে। মানুষের আয় ও জীবনযাত্রার মান বেড়েছে। এসব মিলে চালের চাহিদা ও কনজাম্পশন দিন দিন বাড়ছে। এ অবস্থায়, খাদ্য নিরাপত্তাব্যবস্থাকে টেকসই করতে হলে নতুন উদ্ভাবিত ধানের উন্নত জাত ও প্রযুক্তিকে মাঠে ছড়িয়ে দিয়ে আরও বেশি ধান-চাল উৎপাদন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন আইনের প্রসঙ্গও উঠে আসে। কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশে ৫০ বছর ধরে নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য কোনো আইন ছিল না। বর্তমান সরকার সেই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। অথচ একদল বুদ্ধিজীবী-বিশেষজ্ঞ বলছেন, তড়িঘড়ি করে আইন করলে ভালো হবে না। আমি তাদের বলব, আইনের দুর্বলতা কোথায়, সমস্যা কোথায়— আপনারা দ্রুত বের করে তুলে ধরেন। সময় কম— এ অজুহাত না দিয়ে আইন প্রণয়নে গঠনমূলক মতামত দিন।

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সবসময়ই ষড়যন্ত্র চলমান আছে। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি শক্তি এখনো বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র, অকার্যকর রাষ্ট্র করতে চাচ্ছে। কিন্তু তারা সফল হবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে, ভবিষ্যতেও আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখব।

বিজ্ঞাপন

কর্মশালায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, বিএআরসি চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ারসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন। বিএআরসির অধীন এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় ৪১টি প্রযুক্তি নির্বাচন করা হয়।

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন