বিজ্ঞাপন

‘জিহ্বার ধার দিয়ে জনগণকে পরাধীন রাখা যাবে না’

February 3, 2022 | 2:31 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পেশীশক্তি ও জিহ্বার ধার দিয়ে জনগণকে পরাধীন রাখা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রান্ধনীবাড়ি এলাকায় বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে যুবদল নেতা আকবর আলীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে দলীয় বক্তব্য তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

রিজভী বিলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী নেতা সেলিম ও মাসুদ সরাসরি জড়িত। তারা তাদের নিজস্ব অস্ত্র দিয়ে সরাসরি গুলি করে হত্যা করে যুবদল নেতা আকবর আলীকে। এই খুনিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত এবং ঠাণ্ডা মাথার খুন। নিজস্ব সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিরোধীদল তথা বিএনপি নেতাকর্মীকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির নমুনা। জনপদের পর জনপদে আওয়ামী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অস্ত্রসজ্জিত করা হয়েছে এবং উজ্জীবিত করা হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধীদল ও মতকে নিশ্চিহ্ন করতে। আর সেজন্যই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গ্রাম থেকে শহরে খুনের নেশায় ছুটে বেড়াচ্ছে।’

রিজভী বলেন, ‘বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জীবন কেড়ে নেওয়াই যেন এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। একইভাবে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাড়াও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কেবলমাত্র সিরাজগঞ্জ জেলাতেই বিএনপির বেশ কিছু নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ারে নির্বিচারে হত্যা করেছে। খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, বিএনপির সমাবেশে সশস্ত্র হামলা, গুলি করে বিএনপি নেত্রীর চোখ অন্ধ করে দেওয়াসহ দলীয় কার্যালয়ে উপর্যুপুরি হামলায় অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করে পঙ্গু করার ঘটনা ঘটছে অহরহ। সিরাজগঞ্জ এখন রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়েছে।’

‘বিএনপি নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে’- তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী যেন আওয়ামী লীগের ইভিএম’র ভূমিকা পালন করছে। যে প্রতীকেই বোতাম চাপ দেওয়া হোক না কেন তা যেমন নৌকায় চলে যায়, ঠিক তেমনি নিজেদের পাহাড়সম অপকর্মের দিকে না তাকিয়ে অনর্গল মিথ্যার বেসাতি করে যাচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী।’

বিজ্ঞাপন

তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী সন্ত্রাসী দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা- এটা কোন উন্নয়নের কাজ? সকলের কাছে দৃশ্যমান আপনাদের লোকেরাই সরাসরি যুবদল নেতা আকবর আলীকে হত্যা করেছে। এটা কি আইন সম্মত কাজ? জনগণ এই রক্তাক্ত ঘটনাকে আওয়ামী আইনের শাসনের কাজ বলেই বিবেচনা করে।’

রিজভী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিএনপির দেড় হাজার নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ গুমের শিকার। সব মিলে প্রায় বিশ হাজার নেতাকর্মী আওয়ামী শাসনামলে হত্যার শিকার হয়েছেন। শাসকগোষ্ঠী এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। এই অনাচার ও রক্তাক্ত সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা? আওয়ামী নেতাদের কাছে অহং ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয়। তবে আপনার কথা যে নির্জলা মিথ্যাচার এটি সবাই জানে। আপনাদের হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে রাগ, ঘৃণা ও প্রতিবাদের আগ্নেয়গিরি হয়ে আছে এদেশের জনগণ।’

‘সময় অত্যাসন্ন। ভোট ডাকাতি, গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যা, লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো তছনছ করে দেওয়ার সঠিক বিচার একদিন এদেশের মাটিতে হবেই। দুর্বৃত্তরা কখনোই পার পায় না’- বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘যুবদল নেতা আকবর আলীকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো- সন্ত্রাসী দুঃশাসনের ছায়ায় গ্রাস হয়ে আছে বাংলাদেশ। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী সর্বনাশা আশকারা দিয়ে দেশব্যাপী যে ঘাতক কসাই দল গড়ে তুলেছে তাদের দ্বারাই নিহত হলো আকবর আলী।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের বিশ্বাসেরর একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে ক্ষমতা ধরে রাখা। আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবেই গুম-খুনের ওপর নির্ভরশীল একটি দল। তাই সহিংস সন্ত্রাসের ব্যাপক বিস্তার তাদের জন্য অপরিহার্য।’

‘তবুও দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, প্রতিবাদী স্বরকে কখনোই থামিয়ে দেওয়া যাবে না। বিদায়ের শেষ সময় খুনোখুনিতে মেতে উঠে ও প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না বর্তমান সরকার। পেশীশক্তি ও জিহ্বার ধার দিয়ে আর জনগণকে পরাধীন রাখা যাবে না’- বলেন রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন