বিজ্ঞাপন

সার্চ কমিটির সদস্য হলেন যারা

February 5, 2022 | 2:46 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এই সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নাম সুপারিশ করবেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৫ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সার্চ কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী এবং সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন।

কমিটিতে রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য রয়েছেন দু’জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা হলেন— সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারা সৈয়দ হক।

বিজ্ঞাপন

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে দেশব্যাপী পরিচিত পান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। পরে তিনি ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানাধীন ছয়াশী হাটনাইয়া গ্রামে।

আগের দুই সার্চ কমিটিতেও সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

বিজ্ঞাপন

এস এম কুদ্দুস জামান: রাজবাড়িতে জন্ম নেওয়া ৬১ বছর বয়সী এস এম কুদ্দুস জামান চার বছর ধরে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন।

কুদ্দুস জামান ১৯৮৪ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দেন। ২০০৬ সালে জেলা জজ হন। সুপ্রিম কোর্টে রেজ্রিস্টারের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।

২০১৫ সালে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হন কুদ্দুস জামান। ২০১৮ সালে হাই কোর্টে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী।

মুসলিম চৌধুরী: বাংলাদেশের মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী। চট্টগ্রামে ১৯৫৯ সালে জন্মগ্রহণ করা মুসলিম চৌধুরী সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

মুসলিম চৌধুরী ৩ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে সচিব হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে যোগদান করেন।

তিনি ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ক্যাডারে যোগদান করে কন্ট্রোলার জেনারেল অব অ্যাকাউন্টস, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স এবং অর্থ বিভাগের উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে বিকম (সম্মান) ও এমকম এবং যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিংয়ে ডিসটিংশনসহ এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।

সোহরাব হোসাইন: বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সোহরাব হোসাইন। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মো. সোহরাব হোসাইন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সরকারের বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে, তিনি তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টরসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছহুল হোসাইন: ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন ছহুল হোসাইন। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকে তিনি অবসরে আছেন। সিলেটের কাজিটুলা সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান ছহুল হোসাইন দীর্ঘদিন জজশিপে চাকরি করেন।তিনি জেলা জজ হিসেবে দেশের বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া আইন সচিব হিসেবেও তিনি কর্মরত ছিলেন।

গত নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে নৌকার প্রার্থী হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন। পরে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এ কে আবদুল মোমেন ওই আসনে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হন।

আনোয়ারা সৈয়দ হক: কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ারা সৈয়দ হক একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। উপন্যাসে অবদানের জন্য তিনি ২০১০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। পারিবারিক জীবনে তিনি সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্ত্রী।

আনোয়ারা ১৯৪০ সালের ৫ নভেম্বর যশোর জেলার চুড়িপট্টি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালে আনোয়ারা ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি এমবিবিএস পাস করেন। পরে ১৯৭৩ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য লন্ডন যান। তিনি সেখান থেকে ১৯৮২ সালে মনোবিজ্ঞানে এমআরসি ডিগ্রী লাভ করে দেশে ফিরে আসেন।

এমবিবিএস পাস করার পর তিনি তৎকালীন পাকিস্তান বিমান বাহিনী মেডিকেল কোরে লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সম্পূর্ণ নয় মাস তিনি পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। ঢাকা এয়ারবেসের মেডিকেল সেন্টারে তিনি চিকিৎসা করেছেন সৈনিকদের এবং তাদের স্ত্রী-পুত্র-কন্যাদের।

১৯৮৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজে মনোরোগ বিভাগে সহকারী প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় মাদকাসক্তি নিরময় কেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ছিলেন ঢাকার মানসিক স্বাস্থ ইন্সটিটিউটের পরিচালক ও প্রভাষক। ১৯৯৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে অবসর নেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্য ও স্কটল্যান্ডের বিভিন্ন হাসপাতালে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৬ সাল থেকে তিনি ঢাকার বারডেম হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের প্রভাষক ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে কর্মরত আছেন।

১৯৬৫ সালের ১৯ নভেম্বর তিনি সৈয়দ হকের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।

আরও পড়ুন
♦ যা আছে ইসি গঠন আইনে
 ‘ইসি গঠন আইন যে লাউ, সেই কদু’
 সার্চ কমিটির মাধ্যমে সরকার ‘ছাগল’ খুঁজছে
 ইসি গঠন আইন প্রত্যাহার করুন: এমপি হারুন
 সার্চ কমিটি করে লাভ হবে না: আকবর আলি খান
 ইসি গঠন আইনে অপূর্ণতা রয়েছে: এ টি এম শামসুল হুদা
 তাড়াহুড়ো করে ইসি গঠন আইন করা ঠিক হবে না: আইনমন্ত্রী
 ইসি গঠনে খসড়া আইন ও সার্চ কমিটির জন্য প্রজ্ঞাপন অভিন্ন: সুজন
 সংবিধানের আলোকে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করতে হবে
 ‘ইসি গঠনে আইন আরেকটি পাতানো নির্বাচনের নীলনকশা’
 ইসি গঠন আইনের খসড়ায় যে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ

সারাবাংলা/একে

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন