বিজ্ঞাপন

শতবর্ষী রেললাইন এখন আতঙ্ক

February 17, 2022 | 8:08 am

মাহী ইলাহি, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

রাজশাহী: দুর্ঘটনা কমছে না রাজশাহীর রেলপথে। অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে নিয়মিতই। সব মিলিয়ে শতবর্ষী এই রেললাইনগুলো যেন রীতিমতো আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবারই (১৫ ফেব্রুয়ারি) অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেন। সকালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকায় রেললাইন ভাঙা দেখতে পেয়ে লাল গামছা টাঙিয়ে ট্রেনটিকে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করেন স্থানীয় দুই ব্যক্তি।

রাজশাহী রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে প্রায় ৮৫০ জন যাত্রী ছিল। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জিয়াউর রহমান ও হাবলু মিয়া নামে স্থানীয় দুই ব্যক্তি রেললাইনের পথ দিয়ে কৃষিকাজে যাচ্ছিলেন। তারা লাইনের এক অংশ ভাঙা দেখতে পান। তাৎক্ষণিকভাবে বুদ্ধি করে লাইনের মাঝখানে নিজেদের লাল গামছা টাঙিয়ে দেন। এই লাল কাপড় দেখে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি থেমে যায়। রেললাইন মেরামত করে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

জানা যায়, রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার রেললাইনের ত্রুটির কারণে মাঝেমধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়। এতে ট্রেনযাত্রী ও স্থানীয়রা চরম উৎকণ্ঠা মধ্যে থাকে। স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকায় প্রতি সপ্তাহেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ট্রেন। ভাগ্যগুণে যাত্রীরা বেঁচে গেলেও যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় রকমের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
এর আগে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলসেতুর ভাঙা লাইনে ঝুঁকিতে পড়েছিল উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেনটি। রেলের গেটম্যান লায়েব উদ্দিনের তৎপরতায় সেই যাত্রায় রক্ষা পায় ট্রেনটি।

বিজ্ঞাপন
ছবি: সারাবাংলা

ছবি: সারাবাংলা

স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজকর্মী সাইফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা উপজেলার রেললাইনগুলো ব্রিটিশ আমলে তৈরি। শতবর্ষী এই লাইনে সারাদিনে ৩২ বার ট্রেন চলাচল করে। অনেক সময় রেললাইনে বেশি চাপ পড়ায় লাইনগুলোর বিভিন্ন স্থান ভেঙে যাওয়ায় ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ছে। বড় ধরনের প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে রেললাইনগুলো দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।

মঙ্গলবারের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার জানান, রেলাইনের ফাটল ধরা ওই স্থানে স্টিলের স্লিপার ছিল। স্লিপার চুরি হয়ে যাওয়ায় সেখানে কাঠের স্লিপার লাগানো হয়। কিন্তু দুই স্লিপারের মধ্যে ফাঁক বেশি ছিল। এজন্য ট্রেন চলাচলের সময় চাপ লেগে লাইন ফেটে যায়। ফিসপ্লেট ও স্লিপার বসানোর পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পুরনো স্টিল ও কাঠের স্লিপারের বদলে কংক্রিটের স্লিপার বসানো হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (আইএন) আবু জাফর। এ জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

আবু জাফর বলেন, এই এলাকার লাইনগুলো অনেক পুরোনো। স্টিল ও কাঠের স্লিপারের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। কংক্রিটের স্লিপার হলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। আমরা নতুন লাইন স্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। বরাদ্দ পেলে বাস্তবায়ন করা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন