বিজ্ঞাপন

কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেল— লাভবান ব্যবসায়ী, ঠকছে ক্রেতা

February 22, 2022 | 9:12 am

মো. আশরাফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: গ্রীষ্ম ও শীত দুই সময়ই ফলন হয় বেলের। তাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল বেলের চাহিদা সারাবছরই রয়েছে। ভিটামিন সি ছাড়াও বহু রোগবালাই দূরে রাখে বেল। তাই বেলের চাহিদা থাকে সারাবছরই। আর বেলের এই চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার আশায় বেছে নিয়েছেন অসাধু পন্থা। গাছ হিসেবে বেল কিনলেও কেজি দরে বিক্রি করছেন তারা। ফলে গাছ মালিক এবং ভোক্তা উভয়েই ঠকছেন।

বিজ্ঞাপন

গতবছরে দেশের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ ও কাঁঠাল কেজি দরের বিক্রি হলেও এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেল। বাড়ি বাড়ি ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পিস ও গাছসহ কিনে তা কেজি দরে বিক্রি করায় ঠকছেন সাধারণ ক্রেতারা। কেজি দরে বেল বিক্রি হচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বারোঘরিয়া বাজার, মহারাজপুর ফিল্টের হাট, রামচন্দ্রপুরহাটসহ রানিহাটি বাজারে।

সদর উপজেলার বারোঘরিয়া বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, ৬ জন বিক্রেতা বেলের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। তারা সবাই কেজি হিসেবে বিক্রি করছেন বেল। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ‘কেজি হিসেবেই বেশি লাভ হওয়ায় তারা এভাবে বিক্রি করছেন। এসব হাট-বাজারে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ’

বিজ্ঞাপন

বারোঘরিয়া বাজারে কেজি দরে বিক্রি হলেও মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে পিস হিসেবেই বেল বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা বলছেন, সব বিক্রেতা কেজি দরে বিক্রি করা শুরু করলে আর কোনো উপায় থাকে না। বাধ্য হয়েই কেজি দরে কিনতে হয় পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি। এতে দাম বেশি পড়লেও নিরুপায় তারা।

গত ৩৫ বছর ধরে বেল বিক্রি করেন সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের মজিবুল ইসলাম (৬০)। বেলের মৌসুমে বেল ও অন্য সময়ে লেবু বিক্রি করেন তিনি। মজিবুল ইসলাম বলেন, ‘পাইকাররা গাছসহ কিনে নেয়। গাছের ফলন হিসেবে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকায় এক মৌসুমের জন্য গাছ কিনি। গাছেই বেল পাকিয়ে বাজারে বিক্রি করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বারোঘরিয়া বাজার ছাড়াও পাশের রানিহাটি বাজার, রামচন্দ্রপুরহাট, মহারাজপুর ফিল্টের হাটে বেল বিক্রি করি। এসব এলাকায় কেজি দরে বেল করলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে পিস হিসেবেই বেল বিক্রি হয়। সেখানে কেউ কেজি দরে নিতে চাই না, তাই বাধ্য হয়েই পিস হিসেবে বিক্রি করতে হয়।’

বিজ্ঞাপন

আরেক খুচরা বিক্রেতা তোফাজ্জল হোসেন লিটন বলেন, ‘আকারভেদে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বেল বিক্রি হচ্ছে। তবে আমরা শুধু কেজি দরেই বিক্রি করি তেমন না, ক্রেতারা চাইলে পিস হিসেবেও বিক্রি করি।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বাড়ির গাছ থেকে এসব বেল কিনে নেন বলেও জানান তিনি।

‘কেজি দরে বিক্রি করলে লাভ বেশি, তাই এভাবেই বিক্রি করি’ বলে জানান, মহারাজপুর শেখপাড়া গ্রামের খুচরা ব্যাবসায়ী কাজেম আলী। তিনি বলেন, ‘১৭ বছর ধরে এই ব্যবসা করি। এতদিন ধরে পিস হিসেবেই বিক্রি করছি। তবে গতবছর থেকে কেজি দরে বিক্রি শুরু হয়েছে।’

বারোঘরিয়া বাজার থেকে ১ কেজি ৬০০ গ্রাম ওজনের দু’টি বেল ৮০ টাকায় কিনেছেন স্থানীয় ডিস ব্যবসায়ী এস আজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘কেনা বেলগুলো সর্বোচ্চ ২০-২৫ টাকা করে পিস হিসেবে পেতাম। কিন্তু কেজি দরে দ্বিগুণ দামে কিনতে হলো।’

বিজ্ঞাপন

স্কুলশিক্ষক সাইদুর রহমান জানান, কোনদিন দেখিনি বেল কেজি হিসেবে বিক্রি হয়। অথচ এখানে গতবছর থেকে বেল কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রেতারা। বেলের মতো ফল বিক্রি বিক্রির বিষয়টি অদ্ভূত।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘আজই প্রথম শুনলাম বেল কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আমরা জানি বেল সাধারণত পিস হিসেবেই বিক্রি হয়। বিক্রেতা যদি গাছ থেকে সরাসরি কিনে বিক্রি করে তাহলে পিস হিসেবেই বিক্রি করতে হবে। তবে কেউ যদি ওজনে কিনে নেয় এবং ওজন হিসেবে বিক্রি করে তাহলে ঠিক আছে। কেজি দরে বিক্রির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
তাহলে ব্যাংকে কি মাস্তান-মাফিয়ারা ঢুকবে?— কাদেরকে রিজভীর প্রশ্নরাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রহনযোগ্যতা ও আরাকান আর্মিব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধের ঘোষণায় সিপিবি’র ক্ষোভভিয়েতনাম মুক্তিসংগ্রামের অবিসংবাদিত কিংবদন্তি হো চি মিনমেট্রোরেলে ভ্যাট যাত্রীর ওপর চাপবে, পুনর্বিবেচনার অনুরোধ‘বৈষম্যমূলক’ পেনশন ব্যবস্থা প্রত্যাহারের দাবি বুয়েট শিক্ষকদের‘সামান্য কেমিক্যালের পয়সা বাঁচাতে দেশের সর্বনাশ করবেন না’মিরপুরে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সড়ক অবরোধবিজয়ীদের ‘এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার’ দিলেন প্রধানমন্ত্রী৬ বছর পর কুবিতে অনুষ্ঠিত হলো ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন সব খবর...
বিজ্ঞাপন