বিজ্ঞাপন

‘বাংকারে আছি, সুযোগ পেলে মুভ করব’

March 4, 2022 | 3:11 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে বাংকারে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশি জাহাজের নাবিক ওমর ফারুক তুহিনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের। তার বড় ভাই মোহাম্মদ ওমর শরীফ বলেছেন, আমার ভাই ভয়েস মেসেজ পাঠিয়ে বলেছে— ‘এখন বাংকারে আছি, নিরাপত্তা পেলে মুভ করব।’

বিজ্ঞাপন

ইউক্রেনে রকেট হামলায় এক নাবিকের মৃত্যুসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার (৪ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন। সন্তানকে উদ্ধারের আকুতি নিয়ে সেখানে হাজির হন ওমর ফারুক তুহিনের মা মোছাম্মৎ খায়রুন্নেছা। সঙ্গে ছিলেন বড় ভাই ওমর শরীফ এবং মামা জহির উদ্দিন।

সন্তানের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ‍বৃদ্ধা খায়রুন্নেছা। তিনি বলেন, ‘আমি খুব টেনশনে আছি আমার ছেলের জন্য। কীভাবে আমার ছেলেটাকে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে, আমি জানি না। আমার ছেলেটি সুস্থ শরীরে ফিরে আসুক। আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ শরীরে ফিরিয়ে আনে।’

বিজ্ঞাপন

জাহাজে রকেট হামলার পর থেকে ছেলের সঙ্গে আর মোবাইলে সরাসরি কথা বলতে পারছেন না বলে তিনি জানান। বলেন, “গত দুই দিনে আর কথা হয়নি। এখন শুধু ভয়েস মেসেজ পাঠাচ্ছে। আমার বড় ছেলের কাছে, আমার ভাইয়ের কাছে পাঠাচ্ছে। বারবার বলছে— আম্মুকে বলো আমার জন্য দোয়া করতে।’ আমি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না। জাহাজ থেকে নেমে বাংকারে গেছে, সেটাও জানিয়েছে। এখন ভালো আছে, বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।”

বাংকার থেকে বেরিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছাবেন নাবিকরা— এমন আশায় আছেন বলে জানালেন খায়রুন্নেছা।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

মোহাম্মদ ওমর শরীফ বলেন, গত রাতে (বৃহস্পতিবার রাতে) বাংকারে যাওয়ার পর মেসেজ পাঠিয়েছে। বলেছে— ‘এখন বাংকারে আছি, সুস্থ আছি। কখন মুভ করব জানি না। সেফটি সিকিউরিটির বিষয় আছে। যখন সুযোগ আসবে তখন মুভ করব।’

ওমর ফারুকের মামা জহির উদ্দিন নিজেও নাবিক। তিনি মনে করেন, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তারা কেন জাহাজ যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি আটকে পড়া নাবিকদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

১৮০ মিটার দীর্ঘ বাল্ক ক্যারিয়ার এমভি বাংলার সমৃদ্ধি তুরস্ক থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় নোঙর করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। ফলে জাহাজের ২৯ নাবিক সেখানে নোঙর করা অবস্থায় জাহাজে আটকা পড়েন।

বুধবার (২ মার্চ) ইউক্রেনের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার কিছু পরে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে বিমান হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের জলসীমায় রুশ বাহিনীর এই হামলায় মো. হাদিসুর রহমান নামে এক নাবিকের মৃত্যু হয়। তিনি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তার বাড়ি বরগুনা জেলা বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।

জাহাজটির ২৯ নাবিকের মধ্যে একজনের মৃত্যুর পর বাকি ২৮ জনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহাজ থেকে নামিয়ে একটি বাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়। সঙ্গে নিহতের লাশও নেওয়া হয়।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন