বিজ্ঞাপন

গ্রামে জানাজা শেষে ঢাকায় সমাহিত হবেন সাহাবুদ্দীন আহমদ

March 19, 2022 | 1:13 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

নেত্রকোনা: নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার প্রেমই গ্ৰামে জানাজা শেষে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে। তার জামাতা অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, উনাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৯ মার্চ) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সাহাবুদ্দিন আহমদ।

সাহাবুদ্দীন আহমদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছেন সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অধ্যাপক অপু উকিল বলেছেন, ‘আমরা একজন গুণী ও সৎ মানুষকে হারালাম। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও প্রধান বিচারপতি হিসেবে জীবনে কোন অহংকার ছিল না। সাদামাটা সুন্দর ও আদর্শ জীবনের প্রতীক ছিলেন তিনি। এলাকার মানুষ খুব ভালোবাসাতো উনাকে। উনার কোনো শত্রু ছিল না। আমি উনার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।’

বিজ্ঞাপন

৯২ বছর বয়সী সাবেক এই রাষ্ট্রপতি কয়েক বছর ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। দুই ছেলে গুলশানের বাসায় বাবার সঙ্গেই থাকেন। তার দুই মেয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।

১৯৩০ সালে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার প্রেমই গ্ৰামে জন্মগ্ৰহণ করেন তিনি। পিতা তালুকদার রেসাত খ্যাতনামা সমাজ সেবক ছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বড় মেয়ে অধ্যাপক ড.সিতারা পারভিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০০৫ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি।

সাহাবুদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মেয়ে শাহান পারভীন আমেরিকাতে বাস করছেন। ছোট মেয়ে সামিয়া পারভীন একজন স্থপতি। তিনি লন্ডন প্রবাসী। বড় ছেলে শিবলী আহমেদ একজন পরিবেশ প্রকৌশলী। তিনি ঢাকায় বাস করছেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) এবং ১৯৫২ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। ছিলেন ফজলুল হক হলের ছাত্র।

১৯৫৪ সালে তদানীন্তন পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (সিএসপি) প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রশাসনে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন।

বিচারপতি সাহাবুদ্দীনের কর্মজীবনের সূচনা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে। পরবর্তী সময়ে সহকারী জেলা প্রশাসক হওয়ার পর ১৯৬০ সালে প্রশাসন থেকে বিচার বিভাগে বদলি হন। আসীন হন বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদে। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর ৬ই ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন।

১৯৯১ সালে তার অধীনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। পরে শর্তানুযায়ী তাকে প্রধান বিচারপতির পদে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২৩শে জুলাই তাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি করা হয়। তখন তিনি অবসর কাটাচ্ছিলেন। ২০০১ সালের ১৪ই নভেম্বর পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন