বিজ্ঞাপন

‘শফী হত্যায় জড়িত কাদিয়ানি-নাস্তিক-মুরতাদ-ইহুদি-খ্রিষ্টানরা’

April 18, 2022 | 10:48 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমির শাহ আহমদ শফীকে ‘হত্যা’র উদ্দেশে সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে কাদিয়ানি, নাস্তিক-মুরতাদ, ইহুদি-খ্রিষ্টানরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে’ ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘আল্লামা শাহ আহমদ শফীর প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রাম সফল হয়েছে। তিনি কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির জন্য আন্দোলন করেছিলেন। তিনি যেভাবে চেয়েছিলেন, সেভাবে দাড়ি-কমা-সেমিকোলনসহ আইনটি পাস হয়েছে। তিনি হাইকোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্য সরানোর জন্য একদিকে রাজপথে আন্দোলন করেছিলেন, আবার আলোচনার কৌশলও নিয়েছিলেন। সেই কৌশল সফল হয়েছে। আল্লামা শফীর আন্দোলনের কারণে কোটি কোটি টাকার ইসলামবিরোধী পাঠ্যপুস্তক তুলে নিতে হয়েছে।’

কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার জন্য শাহ আহমদ শফী কাজ করছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সবশেষ তিনি যে কাজটি করতে চেয়েছিলেন সেটি হচ্ছে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা। তিনি এজন্য কাজ শুরু করেছিলেন, উনার টিম কাজ শুরু করেছিল। কেন কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা অপরিহার্য, সেটি তিনি সরকারের শীর্ষপর্যায়ের কাছে তুলে ধরেছিলেন। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এর ফলে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের একটি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।’

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

‘কিন্তু দুঃখের বিষয়, তিনি সেটি করে যেতে পারেননি। এর আগেই উনাকে হত্যা করা হয়। আমরা জানি আর না জানি, বুঝি আর না বুঝি, আল্লামা আহমদ শফীর ওপর যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছিল, এর সঙ্গে কাদিয়ানি, নাস্তিক-মুরতাদ, বেঈমান, ইহুদি-খ্রিষ্টানরা জড়িত ছিল। কেউ যদি প্রমাণ চান, আমি বলব— আমিই সবচেয়ে বড় প্রমাণ। আমিই সবচেয়ে বড় সাক্ষী। আমি নিজে প্রমাণ দেবো,’— বলেন মুফতি ফয়জুল্লাহ।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা হবে, নাস্তিক-মুরতাদদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার আইন হবে— এটি বুঝতে পেরে কাদিয়ানিরা কিছু নাস্তিক-মুরতাদ, বেঈমানকে অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর ওপর হামলা করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল।’

বক্তব্যে মুফতি ফয়জুল্লাহ বর্ষীয়ান এই আলেমের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেন।

ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শফীপুত্র আনাস মাদানীর সভাপতিত্বে মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ জামিয়া মিসবাহুল উলূম মাদরাসার পরিচালক নুরুল ইসলাম সাদেক।

এসময় বেলাল নুর আজিজী, অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী, নুরুল আনোয়ার, মুহাম্মদ মুঈন উদ্দীন, শওকত ওসমান মিরন, রইসুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম তালুকদার, কামাল উদ্দীন, জাফর উল্লাহ তালুকদার, শফিক আহমদ তালুকদার, মুঈনুদ্দীন রুহী, শামসুদ্দিন আফতাব, সোহাইল সালেহ, আ ন ম আহমাদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির শাহ আহমদ শফী মারা যান। তিনি হাটহাজারীর আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার মহাপরিচালক ছিলেন। মৃত্যুর আগে ওই মাদরাসায় তিন দিন ধরে তাকে অবরুদ্ধ করে ছাত্র বিক্ষোভ হয়। এর মধ্যে শফী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একপর্যায়ে শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হয়। হেলিকপ্টারে ঢাকায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর শফীর পরিবার ও হেফাজতে ইসলামের মধ্যে তার অনুসারীরা শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এজন্য তারা বাবুনগরী ও তার অনুসারীদের দায়ী করেন।

এরপর ১৭ ডিসেম্বর আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রামের আদালতে একটি মামলা করেন। এতে শাহ আহমদ শফীকে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগ করা হয়। মামলায় মামুনুল হকসহ ৩৬ জনকে আসামি করা হয়। আদালত পিবিআইকে মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেন।

তদন্ত শেষে গত বছরের ১২ এপ্রিল পিবিআই হেফাজতে ইসলামের আমীর জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ৪৩ জনকে আসামি করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদনটি আদালতে গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ আছে।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন