বিজ্ঞাপন

রোজায় অসহায়দের বিনামূল্যে দুধ দিচ্ছেন জলিল-রাবেয়া দম্পতি

April 23, 2022 | 10:05 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

জয়পুরহাট: রমজান আসলে অনেকেই নানাভাবে ব্যবসায় অধিক লাভের আশা করেন। অবার অনেকেই আছেন যারা রমজান এলেই গরিব ও অসহায় রোজাদারের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। তেমনই এক দম্পতি হলেন জেলার পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামের জলিল-রাবেয়া। পুরো রোজায় এলাকার গরিবদের মাঝে বিনামূল্যে গাভীর দুধ দিচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

রমজান মাস এলেই তারা এলাকার গরীব, অসহায়, বিধবা ও বয়স্ক নারী-পুরুষদের মাঝে বিনামূল্যে খামারের গাভীর দুধ বিতরণ করেন। অর্থের অভাবে যারা ভালো কিছু খেয়ে রোজা রাখতে পারে না। তাদের জন্য রোজার শেষ দিন পর্যন্ত এমন কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন বলে জানান এই দম্পতি। এক্ষেত্রে দোয়াটাই তাদের বড় পাওয়া বলে জানিয়েছেন তারা।

ওই গ্রামের ষাটোর্ধ্ব হামিদা বেওয়ার, স্বামী মারা গেছে বেশ কয়েক বছর আগে। একমাত্র ছেলেও বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। মায়ের কোনো খোঁজ-খবর রাখেন না। ভিক্ষা করে জীবিকানির্বাহ করেন হামিদা। জলিলের বাড়ি থেকে আধা লিটারের একটু কম দুধ প্লাসটিকের মগে নিয়ে লাঠিতে ভর দিয়ে বাড়ি ফিরছেন, আর বিরবির করে কি যেন বলছেন।

দুধ কোথায় পেলেন— জানতে চাইলে হামিদা বেওয়া বলেন, ‘জলিলের বউ দিয়েছে। এই দুধ দিয়ে ভাত খেয়ে রোজ থাকব। আল্লাহ্ যেন তার ভালো করে।’

বিজ্ঞাপন

একই বয়সের বিধবা মনোয়ারার হাতের ছোট জগে দুধ নিচ্ছেন জলিলের বউয়ের কাছ থেকে। কত টাকার দুধ নিলেন— জানতে চাইলে ভাঙা ভাঙা গলায় মনোয়ারা বলেন, ‘আমি দুধ কিনে খাব টাকা পাবো কই? রোজার প্রথম দিন থেকে জলিলের বউ দুধ দেয়, টাকা নেয় না। এই দুধ দিয়ে ভাত খেয়ে রোজা থাকি।’

উপজেলার রতনপুর গ্রামের মৃত হাসেম আলীর ছেলে আব্দুল জলিল বলেন, আমার খামারে ৫টি বিদেশি জাতের গাভী আছে। এর মধ্যে ২টি গাভীর দুধ হয় না। অন্য ২টি মা হতে চলেছে অল্প দুধ হয়। আর ১টি গাভী ভালো দুধ দেয়। প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ লিটার দুধ হয়।

প্রতিনিয়ত গ্রামবাসী যারা দুধ নিতো এবং টাকার অভাবে যারা কিনতে পারে না রোজার প্রথম দিন থেকে তাদের বিনামূল্যে দুধ দিচ্ছেন বলে জানান জলিল।

বিজ্ঞাপন

জলিলের স্ত্রী রাবেয়া বলেন, প্রতিদিন গাভীর খাওয়া খরচ দুধ বিক্রির টাকায় চলত। কিন্ত স্বামীর আদেশ রোজার মাসে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাবে না। তাই সবাইকে প্রতিদিন গড়ে ২০ লিটার দুধ টাকা ছাড়াই দিচ্ছি।

স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. হাছিবুল আলম বলেন, রোজারদের জন্য এই পরিবারটি যে কাজ করছেন নিঃসন্দেহে তা উত্তম কাজ। এমন কার্যক্রমে সমাজের সকল সামর্থবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা উচিৎ।

সারাবাংলা/এনএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন