বিজ্ঞাপন

‘পুষ্পা-কাঁচা বাদামে’ জমেছে ইদ বাজার

April 30, 2022 | 9:43 am

মো. আশরাফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: ইদুল ফিতরের আগের শেষ সপ্তাহে জমে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইদ বাজার। ইদের বেঁচা-কেনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। ১৫ রোজার পর থেকে এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন মার্কেটে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। জেলা শহরের নিউ মার্কেট, ক্লাব সুপার মার্কেট, শিল্পকলা মার্কেট, শহীদ শাটু হল মার্কেট, পুরাতন বাজারের দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। দিনে ও রাতে সমানতালে চলছে পোশাক ক্রয়-বিক্রয়। ফুটপাতগুলোতেও একই ধরনের চিত্র।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবারের মতো এবারের ইদ বাজারেও কিশোরী ও তরুণীদের প্রধান আকর্ষণ নতুন কালেকশন। এবার ইদের বাজারে ‘পুষ্পা’ ও ‘কাঁচাবাদাম’ নামের নতুন দু’টি পোশাকের প্রতি আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। সম্প্রতি ‘পুষ্পা’ নামের একটি মুভিতে নায়িকা যে ধরনের পোশাক পরেছেন এবং ভাইরাল গান ‘কাঁচা বাদামে’র মিউজিক ভিডিওতে গায়িকা যে ড্রেস পরিধান করে গান গেয়েছেন সেই দু’টি থ্রি-পিস ও লেহেঙ্গার বর্তমান মার্কেটে বেশ কদর। লাল, নীল ও সবুজসহ ৪ রঙের দুই ধরনের গাউন বা লেহেঙ্গা রয়েছে পুষ্পার। অন্যদিকে, কাঁচা বাদামের আছে তিন ধরনের ড্রেস। কাঁচা বাদাম, কাজু বাদাম ও চিনা বাদাম নামে বিক্রি হচ্ছে এসব থ্রি-পিস।

নিউমার্কেটের পোশাক বিক্রেতা নাদিম হোসেন বলেন, ‘ইদের বাজারে ক্রেতারা সবসময় নতুন মডেলের নতুন ডিজাইনের পোশাক খোঁজেন। কাঁচা বাদাম নতুন পোশাক হওয়ায় এটির বিক্রিও বেশ ভালো। এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে এই কাঁচা বাদামের থ্রি-পিসগুলো।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ইদ বাজারে তরুণীদের যেমন আকর্ষণ ছিল নতুন মডেলের থ্রি পিস, তেমনি মধ্যবয়সী নারীদের প্রথম পছন্দ রঙ-বেরঙের বাহারি রকমের শাড়ি। তাঁতের শাড়ির মূল্য কিছুটা কম হলেও অন্যগুলো ডিজাইনের কারণে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের জন্য অভিজাত দোকানগুলোতে রয়েছে দেশের রঙে ও ডিজাইনের পোশাক।’

শিল্পকলা মার্কেটের জুনায়েদ ফ্যাশনের মালিক জিয়াউর রহমান জানান, এবারের ইদে পুষ্পারাজ ও কাঁচা বাদাম নামের যে ড্রেসগুলো বের হয়েছে সেগুলো বেশ ভালোই সেল হচ্ছে। একটি গান সম্প্রতি ইউটিউবে ভাইরাল হয়। এবারের পুরো ঈদ বাজার জুড়ে পুষ্পা ও কাঁচা বাদাম থ্রি-পিসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, পুষ্পা ড্রেসটি মূলত লেহেঙ্গা বা গাউন ধরনের। সিঙ্গেল ও ডাবল পুষ্পা গাউন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সিঙ্গেলগুলো ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার ও ডাবলগুলো ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দৈনিক ১৫-২০টা করে পুষ্পা গাউন বা লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ফ্যাশন কর্নারের স্বত্বাধিকারী আমির আলী বলেন, “১৫ রোজার পর থেকে ক্রেতাদের অনেক চাহিদা রয়েছে কাঁচা বাদাম পোশাকে। কিছুটা দাম বেশি হলেও পোশাকগুলো মানসম্মত। এর আগে গত বছর ‘বাহুবলী টু’, ‘দিল নাশি’, ‘বাজিরাও মাস্তানি’, ‘হুররম’, ‘করন-অর্জুন টু’, ‘সেলফি’— এমন সব বাহারি নামের পোশাক বিক্রি হয়েছে।”

ক্রেতাদের অভিযোগ, আগের চেয়ে পোশাকের দাম বাড়লেও সেই তুলনায় কাপড়ের মান বাড়েনি। নতুন নতুন এসব পোশাকের দাম বেড়েছে অনেক। নিউ মার্কেটে পুষ্পা গাউন কিনতে এসেছেন কলেজছাত্রী রওশনারা পপি। তিনি জানান, পোশাকের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে দামটা একটু বেশি নিচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাবসুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাভেদ আখতার বলেন, ‘গত দুই বছর আমরা ব্যবসা করতে পারিনি। তবে এবার রমজানের শুরু থেকেই পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে রয়েছে। তাই ব্যবসায়ীরাও ব্যাপক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে অনেক বেশি মালামাল সংগ্রহে রেখেছেন। শেষ মুহূর্তে বাজার জমে উঠেছে। আশা করি, ইদের চাঁদরাত পর্যন্ত ভালো বেচাকেনা হবে।’

বিজ্ঞাপন

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান জানান, সাধারণত ইদের আগ মুহূর্তে অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত ইদের কেনাকাটা করে থাকেন। তাই তাদের ইদের বাজার নির্বিঘ্ন রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিয়মিত টহল পুলিশের পাশাপাশি, বিভিন্ন মার্কেটে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও ডিবি পুলিশ ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা দল মাঠে কাজ করছে। এমনকি পুরো জেলা শহর সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। সবকিছুই পর্যবেক্ষণে রেখেছে পুলিশ।

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন