বিজ্ঞাপন

ড. কামালকে পাঠানো এনবিআরের নোটিশে স্থিতাবস্থা

June 21, 2022 | 9:36 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের কাছে এনবিআরের পাঠানো নোটিশের (২০১৮-২০১৯ করবর্ষের এনবিআরের আয়কর আদায় সংক্রান্ত কার্যক্রম) ওপর তিন মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের কাছে রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ৬ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকা কর দাবির সিদ্ধান্ত বহাল রেখে আপিলেট ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আদেশ বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করেছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জুন) আপিলেট ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আইনজীবী রমজান আলী শিকদার, আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান ও তানিম হোসাইন শাওন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।

হাইকোর্টের রুলে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের কাছে এনবিআরের কর দাবি সংক্রান্ত নোটিশের বিষয়ে আপিলেট ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভুত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। কর আপিলেট ট্রাইব্যুনালের (সার্কিট বেঞ্চ- ২) চেয়াম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং কর অঞ্চল-১৫ এর ডেপুটি কমিশনারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আদেশের পর কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েস্টের আইনজীবী রমজান আলী শিকদার বলেন, ‘আমরা আগেই আয়করের সব অর্থ পরিশোধ করেছি। এর পর তাদের (এনবিআর) দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল করতে হলে এনবিআরের মোট দাবির ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়। আমরা হিসেব করে সেই অনুযায়ী টাকা জমাও দিয়েছিলাম। তারপরও তারা আরও কর পাওনা থাকার কথা জানায়। এরপর আমরা হাইকোর্টে রিট দায়ের করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও আদালত অ্যাসেসমেন্ট করে আরও ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার কথা বললে আমরা তা প্রদান করি। এখন তাদের দাবি অনুযায়ী, ১০ শতাংশ পরিপূর্ণ হয়েছে। আজ আদালত আপিল ট্রাইব্যুনোলের আদেশের বৈধতার প্রশ্নের রুল দিয়েছেন এবং ওই করবর্ষের আয়কর আদায় সংক্রান্ত নোটিশের ওপর স্থিতাবস্থা দিয়েছেন।’

এর আগে, ২০১৮-১৯ কর অর্থবছরে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের আয়কর রিটার্ন ফাইলে বার্ষিক আয় দেখান ১ কোটি ৪ লাখ ৩ হাজার ৪৯৫ টাকা। এর বিপরীতে প্রযোজ্য ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ৫৪৮ টাকা কর হিসেবে উৎসে কর কর্তন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় রিটার্ন ফাইলে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর উপ-কর কমিশনার এক আদেশে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের আয় ২০ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ২১৯ টাকা দেখিয়ে নোটিশ দেয়। নির্ধারিত সময়ে জমা না দেওয়ায় ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৬৩৪ টাকা বিলম্ব মাশুলসহ ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের কাছে মোট ৬ কোটি ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫১ টাকা আয়কর দাবি করা হয়।

রাজস্ব বোর্ডর উপ-কর কমিশনারের ওই কর দাবির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনারের কাছে আপিল করেন ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েস্টস। ওই আপিল শুনানি শেষে ২০২০ সালের ২৫ জুন তা খারিজ করে আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কমিশনার।

এরপর ওই আদেশের বিরুদ্ধে ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস ট্যাক্সেস আপিলেট ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। কিন্তু তাও খারিজ হওয়ায় গত ২৪ মে কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েস্টের পক্ষে শরীফ এম এন ইউ ভূইয়া হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনের ওপর দুই দিন বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হয়।

পরবর্তী কালে আদালত পরিবর্তন করে রিট আবেদনটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। গত ১৯ জুন এ বিষয়ে শুনানি শেষে আজ (২১ জুন) আদেশের জন্য দিন ধার্য রেখেছিলেন। হাইকোর্ট এদিন ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে এনবিআরের পাঠানো নোটিশের ওপর তিন মাসের স্থিতাবস্থার পাশাপাশি রুল জারি করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন